শুক্রবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৬

শিয়রে রবীন্দ্রনাথ

ইচ্ছেটা খুব অদম্য হয়ে উঠছিল ।
ঘুপচি গলি পেরিয়ে অনেকটা পথ
চারপাশে কেবল ইটের দালানকোঠা
কিছু ভাঙা
কিছুবা নতুনের লাইসেন্স পেয়ে
টগবগিয়ে নাম লেখাচ্ছে এপার্টমেন্টের খাতায়
পুরনো দালান গুলোর গা বেয়ে একটা দুটো
বটের উঁকি ঝুঁকি
অশ্বত্থও আছে,
পাখিগুলো বেশ উড়ে উড়ে
কখনো বসছে ওই নরম ডাল গুলোতে।
নেচে নেচে এদিক সেদিক হারাচ্ছে কেমন,
দোয়েল নাকি
ওই একটা পাখি আজকাল হরদম দেখা মেলে
স্কুলের বইয়ে এর নাম তো দোয়েলই পড়েছিলাম
কালো শরীরে ছোপ ছোপ সাদা দাগ।

এই সমস্ত দেখতে দেখতে ইচ্ছেটা যেন আরো বাড়ছে
আমার চোখ দুটো অবাক হবার আগেই
খুব ধীরে গোধূলির রঙে সেজে ফেললো আকাশটা
আজ আকাশের হাতে অনেক রঙ
আচ্ছা?
প্রতিদিনই কি তাই থাকে?
এমনকি সবুজ ও বাদ নেই
স্বচ্ছ নীল আকাশে সবুজাভ আভা ধীরে মিলিয়ে গেছে বেগুনি আলোয়
শরতে কেমন ঝুপ করে রাত্রি নামে
আর একখানা ঘোলাটে চাঁদ হেসে ওঠে
প্রতি মুহূর্তে মনে হয় এই বুঝি
চাঁদটার একপাশ পড়বে গলে
আর সারা আকাশ রুপোর রঙে মাখামাখি হবে।
নানা ভাবে চাঁদের দিকে চাইলাম
কখনো বাঁ পাশ গলা
কখনো মনে হচ্ছে ডান পাশ
আচ্ছা?
ওই ছায়াটা কিসের?
কাঁপছে কেমন অনেকক্ষণ ধরে?
আরো কেউ বৈরাগী বেরিয়েছে নাকি আজ?
আমার মতন?
এই যে,
কে আপনি?
দাঁড়ান ,
একটু দাঁড়ান না।
আপনিও কি আমার মতন?
কাঁপা গলায় বলে ওঠে বৈরাগী, আপনি কার মতন?
আপনার মতন হতেই পারি বটে কিছুটা
নয়তো এমন উছন্নের মতন কেউ রাস্তায় ঘোরে আকাশ দেখতে?
আপনি আকাশ দেখছেন কেন?
জানতে পারি?
হা হা হা অপেক্ষা করছি,
বৃষ্টির জন্যে।
আশ্চর্য ! আমিও তাই।
ধীরে ধীরে ছায়া স্পষ্ট হল
আমি কিছুটা বিভ্রান্ত হলাম
অমন গাল ভরা লম্বা দাঁড়িওয়ালা
আলখাল্লা পরা মানুষ টাকে আমি তো রবি ঠাকুর বলেই চিনি
তবে কি তিনিও?
তাঁর আত্মাও?
ইচ্ছেটা আরো অদম্য হয়ে উঠলো যেন।
কবিতা লেখার জন্য
কিজানি
হয়তো বৃষ্টির জন্য।
তিনিও তো এখানেই নেমে এসেছেন
ওখানে হয়তো বৃষ্টি নেই,
ওখানে হয়তো বৃষ্টি হয়না।
তাই কবিতা লেখা হয়না।

মঙ্গলবার, ৯ আগস্ট, ২০১৬

হৃদয় কাব্য ৪

আমার হৃদয় সত্যি বড়
সবার তাতে জায়গা হয়
বল মেয়ে বুঝবে কবে
হৃদয়রানী একজনই হয়।

হৃদয় কাব্য ৩





মেয়ে তোমার আকাশ আছে
বৃষ্টি , রোদ কি নেই সেথা?
হৃদয় জুড়ে সব নিয়েছ
নাওনি কেবল এই ব্যাথা।

হৃদয় কাব্য ২







বৃষ্টি তোমার, রোদ টা তোমার
জ্যোৎস্না তোমার আর কি চাও?
আমার কেবল আকাশ আছে
দুচোখ মেলে দেখতে দাও।

বৃহস্পতিবার, ৪ আগস্ট, ২০১৬

হৃদয় কাব্য ১




তোমার হৃদয় অনেক বড়
সবার তাতে জায়গা হয়
আমার হৃদয় একটুখানি
তোমার পরে আর কেও নয়।

শেষ প্রহর



আজ দুপুর ঠিক তিনটায় আমার জীবনাবসান হবে।
কাল ওরা এসেছিলো ,
আমার শরীরের মাপ নিয়ে গেছে,
আমার সংগে আরো অনেকের,
বয়স হয়েছে অনেক,
নিজেকে নিয়ে আমার তেমন দুশ্চিন্তা নেই,
আমি শুধু ভাবছি বছর বছর
আমার শরীরে গর্ত করে বাস করা প্যাঁচাটার কী হবে?
পাখী গুলো ছ 'টা ছানা দিয়েছে
ওদের তো কিছুই জানাতে পারিনি।
আমার সবচেয়ে বড় আর প্রসারিত ডালটাতে ছানাদের রেখে
খুব ভোরে বেরিয়েছে খাবারের খোঁজে।
ওরা ফিরবে কখন?
কত দেরী আর?
ফিরতে যে সন্ধ্যে হয় ওদের,
আহা, ছানা গুলো এখনো উড়তে শেখেনি তো,
ওদের কোথায় রাখি ?
পাখীগুলো কে কী জবাব দেবো আমি?
আমার গায়ের সাথে দিনের পর দিন আঁকড়ে থাকা
স্বর্ণলতা ,
কোথায় মেলবে পাতা ?
আমার ছায়ায় বসে থাকা চঞ্চল চিত্রা
আর কী কখনো বলবেনা কথা?
আমি আসলে ঠিক বুঝতে পারছিনা
কী করবো?
আমার শরীরে কেবল আমি তো নই
আছে হাজার জীবের বসবাস ।
আমার সংগে কেবল আমি তো নই
আছে হাজার জীবনের সর্বনাশ ।
আমি আছি এক শান্তিময় সুন্দর বনে
কারোর পথের বাঁধা হয়ে তো নয়।
আমি আছি এক চির সবুজের বনে
কারো জীবনের বিঘ্ন করে তো নয়।
তবে আমাকে নিয়ে এতো আলোচনার ঝড় কেন?
আমার অস্তিত্ব এতো টা বিপন্ন কেন?
আমি কথা বলতে পারিনা বলে?
হে ঈশ্বর তুমি ওদের বলে দাও ,
ওদের সৌভাগ্য আমি কথা বলতে পারিনা।
ওদের সৌভাগ্য আমি চলতে পারিনা ।
ওদের সৌভাগ্য আমার ডাল-পালা গুলো কোন বীভৎস অস্ত্র নয়,
নয়ত ওদের মতন মানুষ গুলোকে
ঠিক ঝাঁঝরা করে দিতাম আমি।

মৃত্যু স্পষ্ট



টুপটাপ ফুল ঝরে
নেই কোন শব্দ
পাখিগুলো বোঝে সব
চুপচাপ স্তব্ধ।

সবুজ ঘাসের বুকে
হলদেটে ঘাস ফুল
অদ্ভুত ফুটে আছে
যেন কোন বড় ভুল।

থেকে থেকে কুকুরের
ঘেউ ঘেউ হাঁক ডাক
জানান দিচ্ছে যেন
ভয় নেই থাক, থাক।

তবুও থাকেনা কেও
ভয় আর কষ্ট
এখানে এলেই দেখি
মৃত্যু স্পষ্ট।