বৃহস্পতিবার, ৪ আগস্ট, ২০১৬

শেষ প্রহর



আজ দুপুর ঠিক তিনটায় আমার জীবনাবসান হবে।
কাল ওরা এসেছিলো ,
আমার শরীরের মাপ নিয়ে গেছে,
আমার সংগে আরো অনেকের,
বয়স হয়েছে অনেক,
নিজেকে নিয়ে আমার তেমন দুশ্চিন্তা নেই,
আমি শুধু ভাবছি বছর বছর
আমার শরীরে গর্ত করে বাস করা প্যাঁচাটার কী হবে?
পাখী গুলো ছ 'টা ছানা দিয়েছে
ওদের তো কিছুই জানাতে পারিনি।
আমার সবচেয়ে বড় আর প্রসারিত ডালটাতে ছানাদের রেখে
খুব ভোরে বেরিয়েছে খাবারের খোঁজে।
ওরা ফিরবে কখন?
কত দেরী আর?
ফিরতে যে সন্ধ্যে হয় ওদের,
আহা, ছানা গুলো এখনো উড়তে শেখেনি তো,
ওদের কোথায় রাখি ?
পাখীগুলো কে কী জবাব দেবো আমি?
আমার গায়ের সাথে দিনের পর দিন আঁকড়ে থাকা
স্বর্ণলতা ,
কোথায় মেলবে পাতা ?
আমার ছায়ায় বসে থাকা চঞ্চল চিত্রা
আর কী কখনো বলবেনা কথা?
আমি আসলে ঠিক বুঝতে পারছিনা
কী করবো?
আমার শরীরে কেবল আমি তো নই
আছে হাজার জীবের বসবাস ।
আমার সংগে কেবল আমি তো নই
আছে হাজার জীবনের সর্বনাশ ।
আমি আছি এক শান্তিময় সুন্দর বনে
কারোর পথের বাঁধা হয়ে তো নয়।
আমি আছি এক চির সবুজের বনে
কারো জীবনের বিঘ্ন করে তো নয়।
তবে আমাকে নিয়ে এতো আলোচনার ঝড় কেন?
আমার অস্তিত্ব এতো টা বিপন্ন কেন?
আমি কথা বলতে পারিনা বলে?
হে ঈশ্বর তুমি ওদের বলে দাও ,
ওদের সৌভাগ্য আমি কথা বলতে পারিনা।
ওদের সৌভাগ্য আমি চলতে পারিনা ।
ওদের সৌভাগ্য আমার ডাল-পালা গুলো কোন বীভৎস অস্ত্র নয়,
নয়ত ওদের মতন মানুষ গুলোকে
ঠিক ঝাঁঝরা করে দিতাম আমি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন