ইচ্ছেটা খুব অদম্য হয়ে উঠছিল ।
ঘুপচি গলি পেরিয়ে অনেকটা পথ
চারপাশে কেবল ইটের দালানকোঠা
কিছু ভাঙা
কিছুবা নতুনের লাইসেন্স পেয়ে
টগবগিয়ে নাম লেখাচ্ছে এপার্টমেন্টের খাতায়
পুরনো দালান গুলোর গা বেয়ে একটা দুটো
বটের উঁকি ঝুঁকি
অশ্বত্থও আছে,
পাখিগুলো বেশ উড়ে উড়ে
কখনো বসছে ওই নরম ডাল গুলোতে।
নেচে নেচে এদিক সেদিক হারাচ্ছে কেমন,
দোয়েল নাকি
ওই একটা পাখি আজকাল হরদম দেখা মেলে
স্কুলের বইয়ে এর নাম তো দোয়েলই পড়েছিলাম
কালো শরীরে ছোপ ছোপ সাদা দাগ।
এই সমস্ত দেখতে দেখতে ইচ্ছেটা যেন আরো বাড়ছে
আমার চোখ দুটো অবাক হবার আগেই
খুব ধীরে গোধূলির রঙে সেজে ফেললো আকাশটা
আজ আকাশের হাতে অনেক রঙ
প্রতিদিনই কি তাই থাকে?
সবুজ ও বাদ নেই
স্বচ্ছ নীল আকাশে সবুজাভ আভা ধীরে মিলিয়ে গেছে বেগুনি আলোয়
শরতে কেমন ঝুপ করে রাত্রি নামে
আর একখানা ঘোলাটে চাঁদ হেসে ওঠে
প্রতি মুহূর্তে মনে হয় এই বুঝি
চাঁদটার একপাশ পড়বে গলে
আর সারা আকাশ রুপোর রঙে মাখামাখি হবে।
নানা ভাবে চাঁদের দিকে চাইলাম
কখনো বাঁ পাশ গলা
কখনো মনে হচ্ছে ডান পাশ
ঠিক এমন সময়ে কেঁপে উঠলো ছায়াটা,
কাঁপছিল কেমন অনেকক্ষণ ধরে?
আরো কেউ বৈরাগী বেরিয়েছে নাকি আজ?
আমার মতন?
বৃষ্টি খুঁজতে ?
আমি তাঁকে ডাকলাম
বেশ চিৎকার করেই ডাকলাম,
ধীরে এগিয়ে এলেন বৈরাগী বাবু।
আমি কিছুটা বিভ্রান্ত হলাম
অমন গাল ভরা লম্বা দাঁড়িওয়ালা
আলখাল্লা পরা মানুষ টাকে আমি তো রবি ঠাকুর বলেই চিনি
তবে কি তিনিও?
তাঁর আত্মাও?
ইচ্ছেটা আরো অদম্য হয়ে উঠলো যেন।
কবিতা লেখার জন্য
কিজানি
হয়তো গান লেখার জন্য
যেতে যেতে পথে পূর্ণিমা রাতে
চাঁদ উঠেছিল গগণে
যেতে যেতে পথে পূর্ণিমা রাতে
চাঁদ উঠেছিল গগণে
হয়তো বৃষ্টির জন্য?
তিনিও তো এখানেই নেমে এসেছেন
ওখানে হয়তো বৃষ্টি নেই,
ওখানে হয়তো বৃষ্টি হয়না।
তাই কবিতা লেখা হয়না
লেখা হয়না্,
চাঁদ উঠেছিল গগণে।
চাঁদ উঠেছিল গগণে।
আমি আর বৈরাগী রবি ঠাকুর
এক অদ্ভুত অপেক্ষায়,
বৃষ্টির জন্য
শুধুমাত্র বৃষ্টির জন্য
বৃষ্টি হলেই একটা কবিতার জন্ম হবে
একটা গানের জন্ম হবে
সেদিন দুজনে
দুলেছিল বনে
ফুলডোরে বাঁধা ঝুলনা।