মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৬

স্বাধীনতা





ওরা রক্তের বিনিময়ে এনেছে স্বাধীনতা
আমরা রাখিনি ধরে
সে আমাদের ব্যর্থতা।
ওরা যুদ্ধের বিনিময়ে এনেছে সম্মান
আমার বোন এখনো ধুলোয় লুটায়
এ আমারই অপমান ।
শত বীরাঙ্গনার রক্ত গড়েছে
সূর্যটা পতাকার
সেই নারীদের খবর রাখি না
এ আমারই দীনতা বারেবার।
ভাইরা আমার জঙ্গি হয়েছে
যোদ্ধা তো হয়নি।
দেশ চলে গেছে ধর্মের কাছে
বুঝতেও পারিনি ।

স্বপ্ননারী




দেখা আর তাকানো
এক কথা নয়
আমি তোকে দেখেছি
তাকানো নয়।
আমি তোকে বুঝেছি
মুখের ভাষায় নয়
আমি তোকে ছুঁয়েছি
হাতের স্পর্শে নয়।
তোকে নিয়ে হারিয়ে গিয়েছি
এবং প্রতিদিন হারাই
তবে  পায়ে চলার পথ দিয়ে নয়।
 

মঙ্গলবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৬

তোমার জন্য অপেক্ষা



তোমার জন্য অপেক্ষা বড় অমনোযোগী করেছে আমায়,
একটু আগে আমি খেতে বসে পানি ভর্তি গ্লাস ফেলে দিয়েছি টেবিলে 
মাছের ঝোলে ভুলে গেছি লবন দিতে,
আকাশ দেখতে দেখতে কখন যে বারান্দার ক্যাকটাসে আঙুল বিঁধেছে দেখিনি,
এই ভীষণ শীতের বেলা
ঠাণ্ডা স্নানের জলে গরম জল মেশাতে গিয়ে হাত পুড়েছি ,
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দেখছি
চুলে চিরুনি লাগেনি,
চোখে কাজল ও নেই,
জানলার ধারে কাঁঠালগাছটায় কবে কখন বাসা বেঁধেছে টুনটুনি 
আমি দেখিনি। 
তোমার জন্য অপেক্ষা বড় অমনোযোগী করেছে আমায়,
আমি যে কি করছি আর কি করছিনা
তারও হিসেব রাখতে পারছিনা,
শুধু হিসেব রাখছি সময়ের
তোমার চলে যাবার সাথে মিলিয়ে,
কারন আমি জানি,
কোথায় যেন পড়েছি" চলে যাওয়া মানেই প্রস্থান নয়।"
চলে যাওয়া মানে আসলেই প্রস্থান নয়,
চলে যাওয়া মানে ফিরে আসার জন্যই কোথাও যাওয়া।

আর ভালবাসবো







ড্রিল মেশিন যেহেতু আমার হাতে 
তোমার তো দেয়াল হতেই হবে
ইছেমতন যেখানে খুশী আমি ছবি ঝোলাবো।

প্রেম




চোখের ভিতর প্রেম
হাসির ভিতর প্রান 
বুকের ভিতর লুকিয়ে আছে 
ভালোবাসার গান।

আসবে আমার কাছে











এখন শীতের সময়, 
শিশিরে ভেজা থাকে চারপাশ, 
মেয়ে তুমি এত যত্ন করে শিশিরে ভেজাও পা? 
যদি বলি
এই আমি 
জলজ্যান্ত একজন মানুষ 
এর চেয়ে বেশী যত্ন করে ছুঁয়ে দেবো তোমায়? 
আসবে আমার কাছে?

বুধবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৬

শিয়রে রবীন্দ্রনাথ ২

ইচ্ছেটা খুব অদম্য হয়ে উঠছিল ।
ঘুপচি গলি পেরিয়ে অনেকটা পথ
চারপাশে কেবল ইটের দালানকোঠা
কিছু ভাঙা
কিছুবা নতুনের লাইসেন্স পেয়ে
টগবগিয়ে নাম লেখাচ্ছে এপার্টমেন্টের খাতায়
পুরনো দালান গুলোর গা বেয়ে একটা দুটো
বটের উঁকি ঝুঁকি
অশ্বত্থও আছে,
পাখিগুলো বেশ উড়ে উড়ে
কখনো বসছে ওই নরম ডাল গুলোতে।
নেচে নেচে এদিক সেদিক হারাচ্ছে কেমন,
দোয়েল নাকি
ওই একটা পাখি আজকাল হরদম দেখা মেলে
স্কুলের বইয়ে এর নাম তো দোয়েলই পড়েছিলাম
কালো শরীরে ছোপ ছোপ সাদা দাগ।

এই সমস্ত দেখতে দেখতে ইচ্ছেটা যেন আরো বাড়ছে
আমার চোখ দুটো অবাক হবার আগেই
খুব ধীরে গোধূলির রঙে সেজে ফেললো আকাশটা
আজ আকাশের হাতে অনেক রঙ
প্রতিদিনই কি তাই থাকে?
সবুজ ও বাদ নেই
স্বচ্ছ নীল আকাশে সবুজাভ আভা ধীরে মিলিয়ে গেছে বেগুনি আলোয়
শরতে কেমন ঝুপ করে রাত্রি নামে
আর একখানা ঘোলাটে চাঁদ হেসে ওঠে
প্রতি মুহূর্তে মনে হয় এই বুঝি
চাঁদটার একপাশ পড়বে গলে
আর সারা আকাশ রুপোর রঙে মাখামাখি হবে।
নানা ভাবে চাঁদের দিকে চাইলাম
কখনো বাঁ পাশ গলা
কখনো মনে হচ্ছে ডান পাশ
ঠিক এমন সময়ে কেঁপে উঠলো ছায়াটা,
কাঁপছিল কেমন অনেকক্ষণ ধরে?
আরো কেউ বৈরাগী বেরিয়েছে নাকি আজ?
আমার মতন?
বৃষ্টি খুঁজতে ?
আমি তাঁকে ডাকলাম
বেশ চিৎকার করেই ডাকলাম,
ধীরে এগিয়ে এলেন বৈরাগী বাবু।

আমি কিছুটা বিভ্রান্ত হলাম
অমন গাল ভরা লম্বা দাঁড়িওয়ালা
আলখাল্লা পরা মানুষ টাকে আমি তো রবি ঠাকুর বলেই চিনি
তবে কি তিনিও?
তাঁর আত্মাও?
ইচ্ছেটা আরো অদম্য হয়ে উঠলো যেন।
কবিতা লেখার জন্য
কিজানি
হয়তো গান লেখার জন্য
যেতে যেতে পথে পূর্ণিমা রাতে
চাঁদ উঠেছিল গগণে
যেতে যেতে পথে পূর্ণিমা রাতে
চাঁদ উঠেছিল গগণে
হয়তো বৃষ্টির জন্য?
তিনিও তো এখানেই নেমে এসেছেন
ওখানে হয়তো বৃষ্টি নেই,
ওখানে হয়তো বৃষ্টি হয়না।
তাই কবিতা লেখা হয়না
লেখা হয়না্‌,
চাঁদ উঠেছিল গগণে।
চাঁদ উঠেছিল গগণে।
আমি আর বৈরাগী রবি ঠাকুর
এক অদ্ভুত অপেক্ষায়,
বৃষ্টির জন্য
শুধুমাত্র বৃষ্টির জন্য
বৃষ্টি হলেই একটা কবিতার জন্ম হবে
একটা গানের জন্ম হবে
সেদিন দুজনে
দুলেছিল বনে
ফুলডোরে বাঁধা ঝুলনা।