ছটফট করতে করতে ঘুমটা ভাঙলো। তৃষ্ণায় গলা আটকে আছে। কোন শব্দ বেরুচ্ছেনা। আমি ভয়ঙ্কর চেষ্টা করছি শব্দ করার , পারছিনা। এই অবস্থায় উঠে বসে পড়লাম বিছানায়। এক কোমল স্পর্শ। জানতে চাইলো ,
কষ্ট হচ্ছে মা? একটু পানি খাবি?
আমি অদ্ভুত ভয় পেলাম। মায়ের আওয়াজ। মা কোথা থেকে এলো? মায়ের তো আসার কথা না। কিন্তু স্পষ্ট কথা বলছেন যে।
আম্মা আপনি ? আপনি কিভাবে এলেন ?
অনেকক্ষণ ধরে দেখছি তুই কষ্ট পাচ্ছিস।ঘুমে মাঝে মাঝে এমন হয়। ভয় পাস নে মা। নে, পানিটা খেয়ে নে।
আমি এক নিঃশ্বাসে পানিটা খেলাম। আমার তৃষ্ণা জুড়িয়ে গেল। তাহলে তো সত্যি মা এসেছেন ।আমি যে স্পষ্ট তৃষ্ণা জুড়ানোর অনুভূতি পেলাম।
সবকিছু নিয়ে এত ভয় পাস কেন তুই? একটু চুলে হাত বুলিয়ে দেবো? ঘুমাবি?
না আম্মা। আপনি আমার পাশে বসে থাকেন।আমি আপনার আঙ্গুলগুলো টিপে দিই। আপনার আঙুল গুলো মোটা আর তুলতুলে আমার টিপতে ভালো লাগে।
আচ্ছা ঠিক আছে বলেই মা শুয়ে পড়লেন। গল্প শুনবি?
আম্মা, আপনার গল্প শুনবো। আপনার গল্প কোনদিন শোনা হয়নি।
আমার কোন গল্প নেই রে । আমার গল্প তোরাই । তোরা চার জন। তোদের ছোটবেলা , তোদের কিভাবে বড় করলাম, তারপর কি করে ধীরে ধীরে আলাদা হয়ে গেলি আমার গল্প ওসব নিয়ে। আমার নিজের কোন গল্প নেই মা।
আচ্ছা আম্মা এই এত বছরের সংসার জীবনে আপনার কখনো সংসার ছাড়তে ইচ্ছে করেনি?
করেছে তো। অনেক বার। বিয়ের পরই করতো ভীষণ।
তাহলে, রয়ে গেলেন কেন?
এভাবেই রয়ে যাওয়া হয়। একটা সন্তান হয়, একটু অপেক্ষা হয়। তারপর আরেকটা। এভাবে মায়া জড়ায় । আর কোথাও যাওয়া হয়না। একদিন ধীরে ধীরে নিজের সব গল্প গুলো নষ্ট হয়ে যায়। সবার গল্প নিজের গল্প হয়ে যায় ।ভুলে যাওয়া যায়।
আমি সব ভুলে গেছিরে। তোদের ছাড়া আমার আর কিছু মনে নেই।
আম্মা, আপনি একটা কাজ করেন। প্রতিরাতে আমার কাছে আসেন। গল্প গুলো মনে করেন। আমাকে বলেন। আমি লিখবো।
মা কুটকুট করে হেসে উঠলেন। তুই লিখতে জানিস?
আম্মা আমি এখন অনেক লিখি। শুধু আপনার গল্প লিখতে পারিনা। কারন আপনার কোন গল্প আমার জানা নেই।
মায়েদের নিজেদের কোন গল্প থাকতে নেই রে। মায়েদের শুধু সংসার এর গল্প থাকতে হয়।
কষ্ট হচ্ছে মা? একটু পানি খাবি?
আমি অদ্ভুত ভয় পেলাম। মায়ের আওয়াজ। মা কোথা থেকে এলো? মায়ের তো আসার কথা না। কিন্তু স্পষ্ট কথা বলছেন যে।
আম্মা আপনি ? আপনি কিভাবে এলেন ?
অনেকক্ষণ ধরে দেখছি তুই কষ্ট পাচ্ছিস।ঘুমে মাঝে মাঝে এমন হয়। ভয় পাস নে মা। নে, পানিটা খেয়ে নে।
আমি এক নিঃশ্বাসে পানিটা খেলাম। আমার তৃষ্ণা জুড়িয়ে গেল। তাহলে তো সত্যি মা এসেছেন ।আমি যে স্পষ্ট তৃষ্ণা জুড়ানোর অনুভূতি পেলাম।
সবকিছু নিয়ে এত ভয় পাস কেন তুই? একটু চুলে হাত বুলিয়ে দেবো? ঘুমাবি?
না আম্মা। আপনি আমার পাশে বসে থাকেন।আমি আপনার আঙ্গুলগুলো টিপে দিই। আপনার আঙুল গুলো মোটা আর তুলতুলে আমার টিপতে ভালো লাগে।
আচ্ছা ঠিক আছে বলেই মা শুয়ে পড়লেন। গল্প শুনবি?
আম্মা, আপনার গল্প শুনবো। আপনার গল্প কোনদিন শোনা হয়নি।
আমার কোন গল্প নেই রে । আমার গল্প তোরাই । তোরা চার জন। তোদের ছোটবেলা , তোদের কিভাবে বড় করলাম, তারপর কি করে ধীরে ধীরে আলাদা হয়ে গেলি আমার গল্প ওসব নিয়ে। আমার নিজের কোন গল্প নেই মা।
আচ্ছা আম্মা এই এত বছরের সংসার জীবনে আপনার কখনো সংসার ছাড়তে ইচ্ছে করেনি?
করেছে তো। অনেক বার। বিয়ের পরই করতো ভীষণ।
তাহলে, রয়ে গেলেন কেন?
এভাবেই রয়ে যাওয়া হয়। একটা সন্তান হয়, একটু অপেক্ষা হয়। তারপর আরেকটা। এভাবে মায়া জড়ায় । আর কোথাও যাওয়া হয়না। একদিন ধীরে ধীরে নিজের সব গল্প গুলো নষ্ট হয়ে যায়। সবার গল্প নিজের গল্প হয়ে যায় ।ভুলে যাওয়া যায়।
আমি সব ভুলে গেছিরে। তোদের ছাড়া আমার আর কিছু মনে নেই।
আম্মা, আপনি একটা কাজ করেন। প্রতিরাতে আমার কাছে আসেন। গল্প গুলো মনে করেন। আমাকে বলেন। আমি লিখবো।
মা কুটকুট করে হেসে উঠলেন। তুই লিখতে জানিস?
আম্মা আমি এখন অনেক লিখি। শুধু আপনার গল্প লিখতে পারিনা। কারন আপনার কোন গল্প আমার জানা নেই।
মায়েদের নিজেদের কোন গল্প থাকতে নেই রে। মায়েদের শুধু সংসার এর গল্প থাকতে হয়।
আম্মা , আমি সব লিখবো। আপনার শৈশব, কৈশোর , মেয়েবেলা সব সব গল্প।
না রে, ঐ স্মৃতি আমি ধ্বংস করে ফেলেছি। ঐ স্মৃতি যদি আবার ভর করে আমার অনেক বাঁচতে ইচ্ছে করবে। সব ফিরে পাওয়া যায় শুধু চলে যাওয়া সময় ফিয়ে পাওয়া যায়না। চারটে পুতুল বড় করে পৃথিবীতে ছেড়ে দিয়েছি। জীবিত থাকতেই পুতুল গুলো আমাকে ছাড়া থাকা শিখে গেছে। একদিন হঠাৎ দেখি আমার আর কিচ্ছু নেই। আমার শৈশব নেই, আমার কৈশোর নেই, আমার প্রেম নেই, আমার কিচ্ছু নেই। ঠিক সেদিন মরে না গেলে আমার বড় অসুবিধে হয়ে যেত। নিঃস্ব আমি আসলে কি নিয়ে বাঁচতাম ?
আম্মা, আপনি প্রতিরাত আমার কাছে আসবেন। আমি আপনার গল্প লিখতে চাই আম্মা।
তাহেরা বেগম মৃদু হাসলেন। শুরু হল গল্প। তাহেরা বেগমের নিজের জীবনের গল্প। আসল জীবনের গল্প। যেই গল্পে তাহেরা বেগম তাঁর বড় ছেলে হাবিবের মা নন যে নামে সবাই তাঁকে চেনে। যে গল্পে তিনি কেবলই একজন তাহেরা বেগম।
না রে, ঐ স্মৃতি আমি ধ্বংস করে ফেলেছি। ঐ স্মৃতি যদি আবার ভর করে আমার অনেক বাঁচতে ইচ্ছে করবে। সব ফিরে পাওয়া যায় শুধু চলে যাওয়া সময় ফিয়ে পাওয়া যায়না। চারটে পুতুল বড় করে পৃথিবীতে ছেড়ে দিয়েছি। জীবিত থাকতেই পুতুল গুলো আমাকে ছাড়া থাকা শিখে গেছে। একদিন হঠাৎ দেখি আমার আর কিচ্ছু নেই। আমার শৈশব নেই, আমার কৈশোর নেই, আমার প্রেম নেই, আমার কিচ্ছু নেই। ঠিক সেদিন মরে না গেলে আমার বড় অসুবিধে হয়ে যেত। নিঃস্ব আমি আসলে কি নিয়ে বাঁচতাম ?
আম্মা, আপনি প্রতিরাত আমার কাছে আসবেন। আমি আপনার গল্প লিখতে চাই আম্মা।
তাহেরা বেগম মৃদু হাসলেন। শুরু হল গল্প। তাহেরা বেগমের নিজের জীবনের গল্প। আসল জীবনের গল্প। যেই গল্পে তাহেরা বেগম তাঁর বড় ছেলে হাবিবের মা নন যে নামে সবাই তাঁকে চেনে। যে গল্পে তিনি কেবলই একজন তাহেরা বেগম।