শুক্রবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০১৬

তোমরা ভালো থেকো








মাত্র দু মাস হোল
আমার চলে যাওয়া
খুব কি কষ্ট হচ্ছিলো তোমাদের ?
হচ্ছিলো কি অক্লান্ত পরিশ্রম ?
অসুস্থ আমার শরীর টা কি
বড্ড ভারী হয়ে পড়ছিল দিন প্রতিদিন?
টেনে টেনে হাসপাতালের ছ ফিট বাই দু ফিট
বিছানায় শুইয়ে দিতে খুব কি কষ্ট হতো তোমাদের?
এখন তোমরা কেমন আছো?
অনেক ভালো আছো আমি জানি।
ঐ যে একটা কথা আছেনা,
কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে নাকি কি যেন?
ঠিক অমনটাই ।

আমি এই অন্ধকারেই আছি
তোমরা যেখানে শুইয়ে দিয়ে গেছ ।
আচ্ছা তোমরা কি জানো ?
সবকিছু মরে যায় শুধু চোখ মরেনা?
ঐ কুচকুচে অন্ধকারে অদ্ভুত নীরবতায় ,
আমার দুটো চোখ বেড়ালের মতন জ্বলে ওঠে,
আমি দেখতে পাই
সব, সবকিছু দেখতে পাই,
আমি দেখতে পাই
কি করে ঐ উজ্জ্বল শ্যামল বরণ
মেয়েটির হাত দুটো দলিত ,উদ্বেলিত হয়
তোমার কঠিন হাতের মুঠোয় ।
আমি দেখতে পাই,
ঠিক দেখতে পাই,
ঐ উজ্জ্বল সুন্দরীর জন্যে তোমার
লালায়িত জিহ্বা ।
আমি কেন সব দেখতে পাই?

আমি কি তবে ঈশ্বরের কাছে
কখনো ভিক্ষা চেয়েছিলাম
কখনো করুনা চেয়ে বলেছিলাম,
হে ঈশ্বর,
তুমি সব নিয়ে যেও মৃত্যুর পর
শুধু আমার চোখ দুটো নিওনা।
নিওনা ঈশ্বর। 

আমি আর মেঘদুয়ারে যাবোনা



মেঘদুয়ারে যাবোনা ,
বৃষ্টি তুমি নাইবা এলে
নগ্ন আমায়
নাই ভেজালে
চুলের থেকে নাই বা এলো
জলকুমারীর গন্ধ।
পা দুখানি শেকল দিয়ে
রাখছি করে বন্ধ।

আমি আর মেঘদুয়ারে যাবোনা
সাদা তুমি
বলই যত
লুকিয়ে সেথা
কালোই তত
সেই সে কালো
নাইবা দিলো
নতুন কোনো দন্দ্ব
পা দুখানি শেকল দিয়ে
রাখছি করে বন্ধ।

আমি আর মেঘদুয়ারে যাবোনা
ডাকবোনা তো বৃষ্টিকে আর আদর করে ডাকবোনা।
আমার চোখের পাতার ভাঁজে
বৃষ্টি কত জমা আছে
সেই বরষায় ভিজিয়ে তারে
বুঝিয়ে দেবো যতন করে
আমার চোখের দুয়ার ছাড়া
সকল দুয়ার বন্ধ।

মঙ্গলবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০১৬

একটা ঝড়ের প্রতিক্ষায়










আমিতো উড়ে উড়ে চলে যাবোনা

আকাশ টা নয়তো আমার ঠিকানা।
আমি থাকি গাছে গাছে ডাল থেকে ডালে,
যত দূর যাইনা কেন ফিরবো তোর কোলে।
তোর পাখাটা একবারটি আমায় দে না।
উড়ে দেখি কেমন লাগে মেঘের আনাগোনা ।
কালো মেঘের ভাঁজেতে তুই কেমন করে পালাস?
আমায় ছেড়ে কেমন করে দূর আকাশে হারাস?
কাঠবিড়ালি জন্ম নিয়ে ভুলটি হোল কি?
অপেক্ষাতেই কাটছে কখন আসবে বোশেখি।
আকাশ বাতাস সব কাঁপিয়ে কালবোশেখি আসুক।
মুনিয়া আমার কাঠবিড়ালির বুকের ভিতর বাঁচুক। 

আমার শহর


অনেক বছর হোল আমার প্রিয় শহরটাতে যাইনা।
কেমন করে সময় পালায়,
সুযোগ ও খুঁজে পাইনা।

কারোর মুখে একটুখানি
গল্পগুলো যখন শুনি,
মন্ত্রমুগ্ধ হয়েই থাকি
তৃষ্ণা কেমন মেটেনা।

মস্ত এক দীঘি ছিল বাড়ীর ঠিক কাছটায় ,
উঠোন জুড়ে শিউলি, বকুল, কাঁঠালচাঁপা রাস্তায়।

শুনেছি এখন দীঘিটা নাকি
বিশাল এক জমি।
কাজল কালো জলের বদলে
অন্য কারোর ভূমি ।

শুনেছি এখন শহর জুড়ে
যোজন যোজন গাড়ি ,
টিনের চালের নেইতো ঘর
অট্টালিকা বাড়ি।

অনেক বছর হোল আমার প্রিয় শহরটাতে যাইনা।
ওখানে নাকি সবই আছে,
শুধু আকাশ পাওয়া যায়না।

ছোট্ট ছোট্ট সবুজ আছে,
অট্টালিকার গয়না,
হিজল, বকুল, মহুয়া, সেগুন ,
আর তো ধরা দেয়না।

ঠিক করেছি ঐ শহরে আর কখনো যাবোনা,
আমার শহর স্বপ্নে আমার
আগের মতই থাকনা।

শুক্রবার, ৮ জানুয়ারী, ২০১৬

আড়াল ভালোবাসা








মাঝেমাঝে দুঃখ ভালো লাগে ,
মাঝেমাঝে ব্যথা ,
অতীতের স্মৃতি  সাথে নিয়ে
সাজানো রূপকথা।

মাঝেমাঝে বিরহ ভালো লাগে ,
একাকী পথ চলা।
ঝরা বকুলের বাদামী উঠোনে
চুপি চুপি কথা বলা।

মাঝেমাঝে আড়াল ভালোবাসা
হঠাৎ দাঁড়ায় সমূখে
জানান দিয়ে যায় সুদুরে
আমি কিন্তু আছি সুখে।

সত্যি কি আছো সুখে
আড়াল ভালোবাসা ?
মাঝেমাঝে ভালোই লাগে
এমন যাওয়া আসা।

পাশে শুয়ে যতন করে
ছুঁয়ে আছি যার হাত
মাঝেমাঝে কেনো মনে হয়
আড়ালেই কাটুক রাত।

চন্দ্রমুখী










ভুল করেছি ঐ দুচোখে চোখ রেখে।
বদলে গেছি এই যে  আমি সেই থেকে।
মন্দ নাকি ভালো হল টের না পাই
ইচ্ছে কেবল হাত টা ধরে দূর পালাই।


ভুল করেছি ঐ দুহাতে হাত রেখে,
সুবাস ফুলের পাচ্ছি কেবল সেই থেকে।
ঐ দুহাতে শিউলি ছিল এই জানি
স্পর্শে সে কি আমার হল কি জানি?

আঁধার চুলে কি ছিল কি সেই জানে?
গন্ধরাজের মায়ার বাঁধন কেজানে?
আর কোন ফুল আর ভালো যে লাগছেনা
হাজার খুঁজে সেই ফুল তো পাচ্ছিনা?

সাগর পাড়ে  হল দেখা চন্দ্রিমায়
জলের মাঝে চাঁদের ছায়া ঢেউ খেলায়
হারিয়ে গেছে চাঁদ মেয়েটি যেই থেকে
চন্দ্রদেবী রাগ করেছে সেই থেকে।

চন্দ্রমুখী একবারটি আবার আয়
ফুলগুলো সব প্রান পাবে তো সহসাই ,
চাঁদ উঠবে আবার জানি পূব পাড়ে
গন্ধরাজটা  খুঁজেই পাব গাছ জুড়ে।   

বৃহস্পতিবার, ৭ জানুয়ারী, ২০১৬

ঘুম গল্প রাত্তির






গিয়ে পড় এক্ষুনি ঐ নিদ্রা দেবীর কোলে ,
আর নয়তো স্বপ্নেরা সব পালাবে তোমায় ভুলে।

আগে বল বিনুনি দেবে আঁধার কালো চুলে ,
গল্পেরা সব উঠবে জেগে রাত্রি গভীর হলে?

দুষ্টু মেয়ে এমনি করেই আদায় করে নিস,
চোখের কোলে কালো ছায়া পড়লো দেখেছিস ?

কি হবে আর কালো ছায়া পড়লে আমার চোখে,
বাসবেনা কি ভালো তখন আসবেনা আর বুকে?

বাসবো ভালো এই নিয়তি লেখা আছে আগেই,
দুষ্টু মেয়ের মিষ্টি টোলে প্রাণটা দিতে হবেই।

ঘুমপাড়ানি মাসী পিসি বন্ধ তবে কর ,
রাত টা জেগে আমার সাথে একটু গল্প কর।

বুধবার, ৬ জানুয়ারী, ২০১৬

কাঠবিড়ালি প্রেম









কাঠবিড়ালি ,

ও  কাঠবিড়ালি ,
পেয়ারার ফুল এখনো আসেনি গাছে ,
তবে তুই কিসের তরে আসিস ?
আমার একলা একা চেয়ার ঘেঁষে
একটুখানি বসিস ?
কেনো বসিস ?
দেখিস নাকি ?
মানুষ তোকে কত্ত ভালোবাসে ?
ঠুকরে ঠুকরে খাবি তাকে
নিবি সর্বনাশে ?

পেয়ারা কেন প্রতিবারই
মরতে যেতে চায় ,
তোর চুমুতেই সর্বনাশে
ধায় কেবলই ধায় ?

কাঠবিড়ালি ,
ও কাঠবিড়ালি ?
তুই কেন আসিস ?
আমার একলা একা চেয়ার ঘেঁষে
একটুখানি বসিস ?

মানুষ আমি,
কক্ষনোতো দেবোনা হৃদয় ,
ঠুকরে খাবি ,
পালিয়ে যাবি ,
এত হবার নয়।

একাকীত্বের ব্যস্ততা





একাকীত্বের ব্যস্ততা বেড়েছে খুব।
মূলত তোমার চলে যাবার পর।
যেমন ধর ,
খাওয়ার একেক সময়ে তোমার একেক রকম ডাক,
সেই ডাকে এখন একাকীত্ব বাসা বেঁধেছে ।
তোমার সন্তানদের আজকাল আর রুটি ভাজি নিয়ে কোন অভিযোগ নেই ।
চীৎকার নেই, চেঁচামেচি নেই,
এখানেও একাকীত্ব ,
শব্দহীনতা একরকম একাকীত্বই তো তাইনা?
খাবার টেবিল টাও বোঝে।
পড়ে থাকে একা,
বড্ড একা,
নিজের মতন।
শীত এবার খুব একটা জাঁকিয়ে বসেনি ।
সারা বাড়িতে তোমার ঐ শব্দগুলো নেই,
"উফ, কেন যে শীত আসে? আমার মোজা দুটো কোথায় রাখলাম?"
আজকাল আর আগের মতন তেমন কিছুই হারায়না।
হয়তো শব্দেরা একা হয়ে গেছে বলেই।
সবচেয়ে একা বুঝি আমাদের বিছানাটা ।
তোমার চলে যাবার পর
এই বিছানাটাই সবচেয়ে বেশী একা।
নীরব , নিস্তব্ধ,
শব্দহীণ ।
রাতের পর রাত,
সকালের শেষে দুপুর,
দুপুর গড়িয়ে আবার............
একটা মানুষের একা ,বড় একাকী অপেক্ষা
একটা মানুষের একাকী মৃত্যুর অপেক্ষা।
কত যে ব্যস্ততা ,
আহা, কত যে ব্যস্ততা একাকীত্বের
আমাকে গ্রাস করার।

শনিবার, ২ জানুয়ারী, ২০১৬

একটা চুমুর জন্যে









প্রতিরাতেই তুমি বল
চার পেগের বেশী খেয়োনা।
আমার কাজ হল
ঠিক ঐ মুহূর্তে
তোমায় একটা চুমু খাওয়া।
মোটামুটি এতেই পাঁচ পেগ
খাওয়া হয়ে যায় ।
তাই বলেকি তোমার ঠোঁটের নেশা
মাত্র এক পেগ?
ঐ একটা চুমু
আমায় একটু স্থির রাখে।
 করে রাখে মানুষ।
মাতাল বলেনা আর লোকে ।
ঐ একটা চুমুর জন্যে
আমি ঠিক অলি গলি চিনে
ফিরে আসতে পারি বাড়ি ,
ফিরে আসতে পারি ঠিক তোমার বুকে।