শুক্রবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৬

কালবোশেখী








কালবোশেখী কালবোশেখী আসবি আমার বাড়ি?
বৃষ্টি নিয়ে বাতাস নিয়ে আয়না তাড়াতাড়ি।

কাঠফাটা এই রোদ্দুরে আর লাগছেনাতো ভালো
সূর্য নাকি মেঘের সাথে বন্ধু হয়ে গেলো?

মেঘ বলেছে আসবেনা আর সবুজ পাহাড় দেশে
আলতো ছুঁয়ে পাহাড়টাকে বৃষ্টি নিয়ে এসে?

পাহাড় কালো, মাটি কালো, মান করেছে ভারী
রাগ করেছে মেঘের সাথে থাকবেনা আর 'আড়ি '।

কালবোশেখী আসবি নাকি এমন খরার দেশে
কৃষ্ণচূড়ায় সাজিয়ে দেবো নববধূর বেশে ।

আসতে পারি এক শর্তে থাকতে দেবে আমায়
সারাজীবন যত্ন করে রোদের আকাশটায় ।

একবারটি এলে আমায় তাড়িয়ে দেবেনাতো ?
তোমরা মানুষ সবই পারো, এই উঁচু , এই নত ।

আসতে পারি শর্ত আছে ফিরে যাবো না,
উড়িয়ে যাবো, ঝরিয়ে যাবো বাঁধা দেবেনা। 

বুধবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৬

এক দ্বিপ্রহরে

ঝাউতলা
বটতলা
আমতলা
পেরিয়ে
ছোট্ট শিমুলতলা
দেয় হাত
বাড়িয়ে।

নীলাকাশ 
মেঠো পথ
ফেরিওয়ালা আয়না
যায় হেঁকে
থেকে থেকে
খুকি ধরে বায়না।

ক্লান্ত দুপুরবেলা
চুপিচুপি দৌড়াই
মা'র চোখ ঘুম ঘুম
এই বুঝি জেগে যায়।

ছাদের ছোট্ট কোণে
 ডালা ভরা আচারে
জিভ দিয়ে চেটে যাবো
বুঝবেনা কেঊ রে।

তারপর ছুটে যাবো
লাল রঙ শিমুলে
ফিরবো না আর আমি
রাতটুকু বাড়লে ।

মা হবে ছুটে ছুটে
সারা রাত ক্লান্ত
দেখবে হঠাৎ এসে
সবকিছু শান্ত।

খোকা আর থাকবেনা
বন্দী এ শহরে
বড় হয়ে গেছে সে যে
এক দ্বিপ্রহরে ।




যেখানে রোজ আত্মা জেগে ওঠে



দিদি ,তোমার ভয় করেনা ?
ভয় করবে কেনোরে ?
এইযে যত্ত মরা মানুষ তোমার আশেপাশে
ওরাতো আমার বন্ধু এখন,
বন্ধু?
শুধুই কি বন্ধু ? বড়গুলো কত্ত শাসায় আমায়।
এই করবিনে ,সেই করবিনে।
কি বলছো গো দিদি ? ওদের সঙ্গে কথা বল তুমি ?
কেন নয় ?
বাচ্চাগুলো বড্ড জ্বালায় ,
এই যে কবুতর দেখছিস
ওদের সঙ্গে খেলতে নামে  ভোরের আলো ফোটার আগেই।
পাখি ওদের বড় প্রিয়
পাখির মতন উড়তে চায়।
ওই গর্তের  ভিতর থেকে উড়াল দিতে চায় ,
তুমি তখন কি বল?
আমি বলি ,ওরে উড়তে চাসনে ,
জীবিত মানুষই উড়বার নাহি পারে
আর তোরা তো মরা
হাত পা বান্ধা।
তখন ওরা কি বলে ?
কি আর বলবে ?
চেঁচামেচি করে আবার গর্তে ঢুকে পড়ে।
ওদের তো ঐটুকুই কাজ।
শোন ,
শিশুগুলো বরাবরই সহজ , সরল
বুড়ো গুলো ও তাই।
বুড়ো হয়ে মরেছে
চাইবার তেমন কিছু নেই
মরার মধ্যে সুখ
আর ঐ বুড়িকে তাড়াতাড়ি পেলে
আরো সুখ , আরো সুখ।
হই হই করে দাঁত কেলিয়ে
হেসে ওঠে কুটকুট
তবে তুমি তো ভালোই আছো দিদি
কত কত গল্প জমা তোমার

ছেলেমেয়ে নেইতো আমার
কবরখানায় থাকি
বেশ কেটে যায় দিনের বেলা
জ্যান্ত মানুষ দেখে ,
রাত টা হলেই হাজার বাতি জ্বলে ওঠে চোখে

দিদি , বললেনা তো
আমার মতন মানুষ গুলো কেমন আছে অন্ধকারে ?

ওদের কথা বলিসনে ভাই
ওরাই বড় চঞ্চল
জীবন থাকতে মরণ খোঁজে
ওরাই বড় টলমল।

তারপর ?
আজ আর নয়।
আরেকদিন আয়।
আজ সন্ধ্যে প্রায় প্রায়
ভূতগুলো সব জাগবে এখন
রাত বেশিদূর নাই।

 

বৃষ্টি জলের শপথ



যাও
দিলাম তোমায় বর
আজকে রাতে বৃষ্টি হবে
অঝোরে ঝরঝর।

বল
সাজবে বেলী ফুলে
থোকায় থোকায় গন্ধ নিয়ে
রাখবে তোমার চুলে।

নেই
জোস্না তারার আলো
অন্ধকারের আড়াল হতে
বাসবো তোমায় ভালো।

তুমি
একটু দুয়ার খুলো
আজকে রাতে বৃষ্টি হলে
আমার সাথে চল।

এই
ছুঁলাম তোমার সিঁথী
দিচ্ছি কথা বাঁধবো বাড়ি
ছায়ায় নীপবীথি।
 

শুক্রবার, ২২ এপ্রিল, ২০১৬

ডাক





এইখানে চোখ আটকে গেছে
আমার কি দোষ বল?
সবুজ সারি হাতছানি দেয়
পথ করে দেয় আলো।

যাক হারিয়ে দুঃখ ব্যাথা
আকাশ ছুঁয়েছি ,
মেঘের সাথে বলবো কথা
শপথ করেছি।

কান্না যত নদীর বুকে
ঢেউটি হয়ে থাক
পাগলা বাতাস বুকের ভিতর
দিচ্ছে কেবল ডাক।
 

মায়াবিনী



মোমের মতন শরীর তোমার
ছুঁয়ে দিলে হয় দাগ।
জ্বলতে তুমি পারোনি মোটেও
জ্বালিয়েছো শতভাগ।

আমি তনু বলছি

আমরা তাদের হায়না ডেকেছি
করেছি তাদের ঘৃণা
আমরা তখন মানুষ ছিলাম
বুকে নিয়ে যতো চেতনা।
আমরা এখন হায়নাও নই
বাংলাদেশের ছবি
এখন বল কি নাম দেবে
মিলে মিশে সব কবি?
হায়না কখনো খায়নি জেনো
স্বগোত্রীয়ের মাংস
আমরা এখন মুহূর্তেই করি
ক্ষমতার বলে ধ্বংস ।
এখনো জানি এদেশেই আছে
ফুলের মতন মন
আমার জন্যে কেঁদে কেঁদে জ্বালে
বুকের মধ্যে আগুন ।
সেই আগুনের লেলিহান শিখা
একদিন কথা বলবেই
আকাশের থেকে বলবো আমি
বিচার হয়েছে, হবেই।

থাকবি আমার














তুই এত্ত সুন্দর কেন রে?

জানি তো। এই সুন্দরের জন্যেই আছিস।
ঠিক যখনই বুড়ো হব
পাখির মতন দিবি উড়াল
খুব যত্নে অন্য চোখে চোখ রাখবি
ভাঙা কোমর আর জড়িয়ে রাখবিনা তুই,
কোঁচকানো চোখ একটুও কি শান্তি দেবে?
ঠিক দেবেনা
জানি আমি।
সাপের মতন আঁকা বাঁকা শরীর এখন
ঠিক যখনই পক্ষাঘাতে পড়বে ঝুঁকে
থাকবি পাশে?
একটুও নয়।
বেশ খুঁজবি মিঠে ঠোঁটের রসের জল।
আমি জানি
সবটা জানি।
প্রেম নয়তো
সবখানেতে শুধুই ছল।

করতে পারিস বেশ বক বক
হাঁসের ছানার মত পঁকপঁক।
তখনও করিস
এখনো কর।
চাঁদ টা কি বল উঠবেনা আর ঐ আকাশে?
দেবেনা কি জোৎস্না ঢেলে ভেসে ভেসে?
আমরা তখন বুড়ো বুড়ি বলবো ঠিকই
একদিন তোর হাত টি ধরে চাঁদ দেখেছি।
রিক্সা চড়ে ভীষণ জ্যামে টগবগে তুই
কোমরখানা সাপের মতন হাত দিয়ে ছুঁই।
তুই কি কেবল করতে পারিস একটি কাজ?
চায়ের কাপে দিতে পারিস ঠোঁটের ভাঁজ?
ডাইবেটিক্স এ ভুগতে হবে দুজনকেই
চিনি ছাড়া চা টা তখন খেতে হবেই
তোর ঠোঁটের জলে ওইদিন বেশ বর্তে যাবে
তেতো চা টা ঠিক তখনও মিষ্টি হবে।
বলবি কিছু?
আর কি বলার আমায় বল?
বকবকানি বন্ধ করে
চায়ের কাপে ঠোঁট দিবি চল।

বেড়াল ছানা







হঠাৎ করে বেরিয়ে এলো ছোট্ট বেড়াল ছানা,
মা বলেছে তাড়িয়ে দিতে রাখতে ঘরে মানা।
ইতি উতি চাইছে ছানা খাবার পাবে কি?
দিদি বললে এক্ষুনি যা ধরা পড়েছি।

বৃষ্টি












এমন করে সারাটারাত আকাশ কাঁদতে হয়না
চোখের সব জল একসাথে শুকিয়ে যাওয়াটা  ঠিক না।

সেই মেয়েটি













নূপুর পায়ে একলা পথে ফুল কুড়িয়ে এসে ,
পেছন ফিরে চাইলো মেয়ে হঠাৎ ভালোবেসে ।
সেই মেয়েটির চুলের ভিতর হাসনাহেনা হাসে ,
গন্ধে ব্যাকুল চারধারেতে বৃষ্টি নেমে আসে।