শুক্রবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

না বলা কথা ১০








কোন দেশে কবে পাওয়া যেতো
একসাথে এতোটা স্বপ্ন ?
কোন  বকুলের গন্ধে
তোর্ চেয়ে বেশি মাতাল সুবাস ?
একবার বলনা 
কতটা ভালবাসা  জমা দিলে পরে
তোর্ বুকে হবে 
আমৃত্যু নিবাস ?
আচ্ছা বলতো ? 
ঠিক কতোটা জল সমুদ্রের ?
কতোটা থাকে আকাশে ?
কতোটা অশ্রু ঝরলে পরে
আশ্রয় হবে নিশ্বাসে ?
কতোটা পথ হাঁটলে তবে  
পথের হবে শেষ ?
কত আগুন জ্বালিয়ে শেষে 
বলবো : আছি ,বেশ? 

না বলা কথা ৯










আমার পরান যারে  চায়
সেতো কেবলই হারায়  ,
পরানের গহীন ভিতর
কেবলই তৃষ্ণা বাড়ায় ।

আমি যারে চাই
তারেতো হয়না বোঝাতে
ভোরে ,দুপুরে অথবা মাঝরাতে।
সে আমায় আপনি বোঝে। 

আমি যারে চাই
তারেতো পাইনা দেখিতে
ছুঁয়ে ,চুমিয়ে অথবা দৃষ্টি দিয়ে !
সে আমার হৃদয়ে আপনি রিনিঝিনি বাজে।

থাকা যায়
বেশ থাকা যায় ,
না ছুঁয়ে অথবা ছোঁয়ার বাহিরে ,
আমার পরান দিয়ে আমি জানি
জীবনের স্বাদ আছে হৃদয়ের গভীরে।

থাকা যায়
বেশ ভালো থাকা যায়
স্বপ্ন আর কল্পনার মাঝারে ,
আমার পরান দিয়ে আমি জানি
জীবনের স্পর্শ আছে স্পর্শের বাহিরে। 

না বলা কথা ৮






আরেকটু থাকনা।
বুঝিনা এসছিস অব্দি
কেবল বাড়ীর জিনিসপত্র দেখছিস।
আশ্চর্য্য ওটা রুমাল।
ওটায় কি দেখছিস ?


তোর ঠোঁটের পরে এই যে শিশির জমা
মুছিস তো এই রুমালে ?
ওই হলো।
তোর আর কিছু না বুঝলেও চলবে।


এত্ত তাড়া কিসের তোর ?
এসেই যাই যাই ?
কেন এলি বলতো ?


গন্ধ নিতে।
দেখতে নয়
দেখে আশ মেটেনা
চোখের জ্বালা বাড়ে।
যাইরে ,
নইলে লোভে পড়বো।
চোখ আমার আগেই গেছে
শ্বাস গেলে আর বাঁচবোনারে।  

না বলা কথা ৭






হাতটা একটু দিবি ?

কেনো ?

দে না। একটা জিনিস পাবি।

আমি কি ছোট্ট খুকি এখনও ?

ওমা ,চশমা পড়েছিস বলেকি অনেক বড় হয়ে গেছিস ?

না ,আগে বল কি দিবি ?
জানিতো একটা ফুল
নয়তো একটা সবুজ পেন্সিল ?

দিবি তুই হাতটা ?

কি হলোরে ?
কিচ্ছু নেই বলে মন খারাপ হলো ?
বুদ্ধু ,
ভালো করে দেখনা।
ওই হাতের মুঠোয় কত্ত বড় একটা মন।
এক সমুদ্র প্রেম
আর
অসহ্য নির্ঘুম রাতের কষ্ট লুকোনো
একটা নীল আকাশ।
একটু ভালো করে দেখ। 

না বলা কথা ৬








জানিস ?
কাউকে কখনো শেকড় থেকে উপড়ে ফেলতে নেই।

''হুম ,মানুষও গাছের মতন
বড্ড ভালোবাসায় শেকড় ছড়ায়। "

আর ওখান থেকে উপড়ে টেনে নিলেই হয়তো মৃত্যু
নয়তো বড় কষ্টের বেঁচে থাকা।

"ধীরে ধীরে শুকিয়ে অজানা রূপান্তর
অশত্থের হয়ে ওঠা লতানো কোনো মানিপ্ল্যান্ট।''

সমস্ত অহংকার ছুঁড়ে ফেলে যেন জানতে পারা
আমার কেউ নেই

''কোথাও কেউ নেই আমার।''

না বলা কথা ৪ এবং ৫









সহজ মৃত্যু নয় বলে
দিয়েছিলাম নীল অপরাজিতার গাছ
লতানো সবুজ চারাটা
কেবলই যেন একটা কিছু আশ্রয়ের অপেক্ষায় ,
একটু আদর পেলেই উজাড় করে দেবে সমস্ত সবুজ।
ভালোবেসেছিলি ওকে ?
আদর দিয়েছিলি ?
বাঁচিয়ে রেখেছিস তো ?
ছানাপোনা কিছু হলো গাছটার ?
নীল নীলাম্বরী সেজে এখনও কি জানতে চাস ওর কাছে ?

"কার কষ্ট বুকে নিয়ে এত অদ্ভুত নীল ফুল হলি  তুই  ?"








একটা ছোট নীল প্রজাপতি রোজ আসতো ওই গাছটায় ,
ভারী জমতো ওদের খেলা।
প্রজাপতিটা ঠিক যেখানেই স্পর্শ করে দিতো ?
সেখানেই ফুটে উঠতো একটা করে নীল অপরাজিতা।
আর ওর না আসাটা বড্ড অস্থির করে তুলতো গাছটাকে।
আমি দেখতাম
খুব বুঝতে পেতাম ,
অপরাজিতা আর তো আমার নয়।
তাই একদিন পিছু নিলাম প্রজাপতিটার
দূর বহুদূর হারিয়ে গেলাম
হলুদ সর্ষে মাঠে।
ওখানে এক কোণে ছোট্ট এক টুকরো জমি
তোর অপরাজিতা এখন ওখানেই আছে
নীল প্রজাপতিটার সাথে। 

না বলা কথা ৩




অবস্থা বেশ খারাপ করেছিস কিন্তু।
চোখেতো প্রায় দেখিস না কিছুই।
ডাক্তার দেখাসনা কেনো ?
এমনি করেই ভুগবি ?
আর কষ্ট দিবি আমাকে ?
ক'টা "বাজে বলতো ?
অনেকটা রাত হয়ে গেলো।
তোকেতো বাড়ি পৌঁছে দিতে হবে।
এমন করে ছাড়া যায় নাকি একা ?


তোর হড়বড় কথা বলার অভ্যেসটা আজো রয়ে গেছে
যেদিন প্রথম একটু ঝাপসা দেখেছিলাম
সেই কোন কৈশোরে ,
তুই নারকেল পাতার কেমন একখানা
চশমা গড়ে দিয়ে হাসতে হাসতে বলেছিলি : এটা পড় ,
তোর চোখ একদম ঠিক হয়ে যাবে।
তারপর আর জানিনা।
জানিনা কোথায় হারালো দিনগুলো আমার ,
কোথায় তুই ?
জানিনা কিছুই।
শুধু জানি ওই পাতা দিয়ে একটা ঘড়িও হয়েছিলো।
সেই থেকে সময় আমার ওখানেই থমকে গেছে।

না বলা কথা ২







আমার খুব ভুলে যাওয়া অসুখ ছিলো। 
ভালোই ছিলো। 
ব্যথা ভুলে থাকা যেতো। 
কিছু মনে পড়েনা আমার 
কিচ্ছুনা। 
কতটা অপরূপা হলে 
একশো জোড়া অপলক চোখের চাহনী বিদ্ধ করে 
আর কুঁচকে তোলে ধনুক ভ্রু 
মনে পড়েনা। 
শুধু জানি 
এরপর আর আয়না দেখিনি কখনো। 
একটা পাগল ছিলো ,
যার চোখের কালো মণিতে 
আমার সর্বস্ব দেখে নিতাম। 

না বলা কথা ১







তুই একটুও বদলাসনি ,
এখনও  আগের মতন
অসহ্য সুন্দর।
আচ্ছা ,এখনও কি তুই হেঁটে যাবার রাস্তাটায়
একশো জোড়া অপলক চোখ চেয়ে থাকে ?
ফুলগুলো সব ভীষণ লজ্জা পেয়ে ঝরে পড়ে ?
পাতাগুলো নুয়ে গিয়ে ইউক্যালিপ্টাসের মতন ক্ষমা চায় ?
এখনও আকাশ ফুঁড়ে সূর্যটা হিংসায় জ্বলে পুড়ে মরে নাকি ?
তোকে পোড়াতে চায় শুধু ?
আর
আর তোর্ মোমের মতন সাদা নরম গায়ের থেকে ঝরে পড়ে শিশির বিন্দু ?
অস্থির হয়ে উঠিস তুই একটু হাওয়ার অপেক্ষায় ?
আর আমি ঠিক তখনই তোর্ জন্য
মাতাল ,পাগলা হাওয়া হয়ে উঠি ?
মনে পড়ে ?

শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

স্বপ্নবিলাস









তোমায় আঁকার চেষ্টা করেছি বারেবার
তুমি কেবল লেখা হয়ে আসো।
রং তুলিতে বাঁধতে চেয়েছি দিবারাত্রি হাজারবার
তুমি কেবল মনের খাতায় ছবি হয়েই ভাসো।


হয়তো তুমি কবিতা সুনীলের
নয়তো রবিঠাকুরের গল্প ,
উপন্যাসের পাতায় থাকো
কঠিন কোনো কারুকল্প।

শিল্পী আমি ব্যর্থ বারেবার
তবু ধরার চেষ্টা আবার আবার
মেয়ে ,
তুমি কি আমার পৃথিবীর কেউ ?
নাকি কেবলই কল্পনাতেই হারাবার ?

চন্দ্রাবতী









চাঁদকে ছোঁয়ার স্বপ্ন আমার
কি করে যে ছুঁই ?
আকাশ ছুঁতে পারিনাতো
মাটির বুকেই শুই।

শ্যামল ছায়ায় হঠাৎ শুনি
মিষ্টি নূপুর বাজে
আসছে ছুটে রাজকন্যা
মধুর রূপে সেজে।

ভাবছি আমি চন্দ্রাবতী
তোকেই আমার চাই ,
তোকে নিয়েই করবো বড়াই
চাঁদ দেখবে তাই।

হিংসুটে চাঁদ জ্বালবে আগুন
রুপোর রঙের বেশে
জোস্না গলে পড়বে সে যে
মোদের বুকে এসে।

একটি তারা








পথের মাঝেই পথকে খুঁজি
পথেই খুঁজি সুখ
পথের কোণে থমকে থাকে
একটি তারার মুখ।

পথ চলেছে পথের মতন
অজানা কোন গাঁয়
আকাশ দেখি খুব মিশেছে
সবুজ সীমানায়।

একটি তারা হঠাত খসে
যেইনা পথে এসে
পথ বলছে আমি নেবো
অনেক ভালোবেসে।

হাঁটছি আমি নাম না জানা
অজানা ওই পথে
পাই যদি সেই তারার আলো
অন্ধকারের রথে।