শুক্রবার, ৩১ মার্চ, ২০১৭

ঘোর


একটা কাঠবিড়ালি বিকেলবেলা 
একটা ভালোবাসার সন্ধ্যেবেলা,
তারপর বাড়িফেরা রাতের শেষে 
ঘোরলাগা এক সকালবেলা।

একটা গোধূলি রং শাড়ীর ভাঁজে 
ছোট্ট আত্ম সমর্পণ 
তারপর সারাজীবন কাণ্ণাশেষে 
দুঃখ করি আলিঙ্গন ।


 

তুই






তুই তুই তুই
স্বপ্নে তোকে ছুঁই
ও মেয়ে তোর হাতের ভিতর
সোনামুখি সুঁই।
ছুঁয়ে দিলাম যেই
সুঁই ফুটলো সেই
হৃদয় মাঝে উঠলো ধ্বনি
স্বপ্নেও তুই নেই।

মেয়েটা

পৌষের শেষ যাত্রার সময় দেখা মেলে।
লম্বা ঘাসগুলো দেখে মাঝে মাঝে মনে হয়
একেকটা ফুল যেন
চুপচাপ শুয়ে আছে মাটির চত্বরে।
বাতাসের সাথে বাড়ে বুঝি ওরা?
কাল যখন দেখেছি মাথা ছুঁই ছুঁই ছিলোনা তো।
আজ কেমন আকাশ ছোঁয়ার সাধ জেগেছে।
ভাগ্যিস ঘাসগুলোর সংঘবদ্ধ হবার অভ্যেস নেই
নইলে কি হত কে জানে !
পৃথিবী ছাড়িয়ে কোথাও চলে যেত হয়তো।
এখানেই দেখেছিলাম কালো পাড়ের গোলাপী শাড়ী পড়া মেয়েটাকে।
এখানেই দীঘির ধারে লুকিয়ে জলের খেলা দেখছিল ।
একটু ময়লা রঙের মায়াবী মেয়েটা।
ময়লা রঙ বোঝো তো?
অনেক ভালোবাসা দিয়ে যখন কালো মেয়ের বর্ণনা দেয়া হয়।
তেমন মেয়েটা 
লুকিয়ে জলের খেলা দেখছিল।
জলের ভেতর ছোট মাছগুলো ভাসছিল 
আর ডুবছিল।
ডুবছিল
আর ভাসছিল।
কখনো সকালবেলার শিশিরভেজা ঘাসের সরল সৌন্দর্য
মন ভরিয়ে দিলে
আমার বড় বেশী মেয়েটার কথা মনে পড়ে।
ময়লা রঙের মায়াবী মেয়েটা।

মৃত গাছটা




মৃত গাছটা এখনো বেশ আছে,
শুয়ে আছে দীঘির ধারে।
শুকনো মাঠে চোখের জল ফেলতে ফেলতে
মাঠ হয়ে গেল দীঘি,
আর মৃত কাঠ হয়ে গেল গাছটা।
মানুষেরা তাকে কেটে কুটে 
এখনো দীঘিটার পাশেই রেখেছে।
বেঁচে না থাকুক
অন্তত পাশে তো আছে।

ডুব

পাতার পরে 
ছোট্ট শিশির
বাঁধ ভেঙে দেয়
একটি নিশির,
গোপন কথা
আর রহেনা
হৃদয় গভীরে।
উড়িয়ে নিয়ে
হঠাৎ কোথা
ঘুচিয়ে 
সকল নীরবতা 
আমার শরীর
ডুব দিতে চায়
তাহার শরীরে।

কবি

যান্ত্রিক এই জীবনে
কতোটা আর কবি হওয়া যায়?
সুউচ্চ দালানে থাকি
মাঝে মাঝে জানলার ফাঁকে
আকাশে চোখ রাখি।
দেখি আমার দালানের চেয়ে উঁচু দালান
ছাদে উঠবো তবে?
আমার যে বড় ভয় ওসবে 
পঁচিশ তলার ছাদে উঠে
আকাশ না হয় পাবো
মাটির থেকে কত দূরে
কতোটা দূরে যাবো? 
আমার যে মাটির ঘ্রাণ ও চাই।
কেমন করে বল তবে কবি হওয়া যায়?
গাছের সাথে বলবো কথা
ঘর পেরিয়ে রাস্তায়
কালো ধোঁয়ার বাতাস আছে
সস্তায় বড় সস্তায়।
আমি না দেখি আকাশ
না পাই মাটি
কবিতা আমার 
হয়না আর খাঁটি ।
আমায় তোমরা লিখতে বল
ফুল, পাখি আর আকাশ
আমার বুকের গভীর কোণে 
আটকে আছে নিঃশ্বাস।
Like
Comment

তোমাকে ভালোবাসি


তোমাকে ভালোবাসি
তাই তোমাকে ছাড়া বৃষ্টি দেখি
তোমাকে ভালোবাসি
তাই তোমার শাড়ীতে জড়ানো ভেজা শরীর দেখেও
আমি কামুক হইনা।
তোমাকে ভালোবাসি
তাই শেষ বিকেলে দু কাপ চা বানাতে ইচ্ছে হলেও
এক কাপেই খেয়ে নিই ।
তোমাকে ভালোবাসি
তাই তোমার পায়ের নূপুর খোলার অদম্য ইচ্ছেকে চেপে রাখি।
তোমাকে ভালোবাসি
তাই তোমার সন্তানদের শত শত আবদার রাখি
ওদের আদর করি, স্নেহ করি,
কোলে বসে যখন দুষ্টুমি করে তোমার দুরন্ত ছেলেটা
আমি একটুও বিরক্ত হইনা,
আমি ভালোবাসি।
আমি তোমাকে সত্যি খুব বেশী ভালোবাসি
তাই তোমার স্বামীর দিনের পর দিন উন্নতির পথে যাত্রা কে সম্মান করি।
সম্মান করি যখন সে তোমাকে বুকের ভিতর নিয়ে আনন্দের হোলি খেলে,
ভালোবাসি যখন আমার একমাত্র ক্ষুদ্র ইচ্ছেটা তোমার স্বামী ভালোবেসে পুরন করে দেয়, 
যখন তুমি আমায় ছাড়া সমুদ্র দেখ। 
আমি ভালোবাসি
আমি সত্যি বড় ভালোবাসি তোমাকে 
তাইতো তোমায় ছেড়ে আসতে পারি 
তাইতো ঐ সংসার থেকে তোমাকে ছিনতাই করিনা।

পারছিনা তোমাকে ছাড়া






ক্ষমতা থাকলে তোমার হাতে থাকা অদৃশ্য রিমোট কন্ট্রোলটাকে ভেঙে চুরমার করে ফেলতাম। 
আর যাই কর অন্তত আমার মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারতে না।

বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ, ২০১৭

আহা স্বাধীনতা





আহা স্বাধীনতা, আহা স্বাধীনতা
কেমন করে আনতে দিলি এমন বর্বরতা!
হায়রে লজ্জা কোথায় রাখি কালোয় ভরা মুখ
কোন মায়ের বাছার মন নিয়েছে আত্মঘাতির সুখ?
এমন মা তো আমার দেশে ছিলনা এই জন্মে
মুক্তি সেনা জন্মে না আর জঙ্গি হায়না জন্মে ।

বয়সটা চল্লিশ ছুঁই ছুঁই

বয়সটা চল্লিশ ছুঁই ছুঁই
কাছের সবকিছু কেমন দূর দূর
দূরের সবকিছু কত স্পষ্ট
তবে কী আমার ধীরে ধীরে দূর যেতে হবে
তোমাদের স্পষ্ট করে দেখবার জন্য ?
এটা কি ঈশ্বরের আভাস কোন ?
বিদায় নেবার একটি সিঁড়িতে পদার্পণ ?
তারপর আরো দূর , আরো দূর।
যত দূরে যাবে ততোই স্পষ্ট।
স্পষ্ট দেখার লোভে তবে কি একদিন
আমি আকাশের ওপারের আকাশে চলে যাবো?
তোমরা বলবে , এখন কত উন্নত জীবন
নিয়ে নাওনা একখানা প্লাস পাওয়ারের চশমা ?
এতো কেন ভাবছো তুমি ?
হেসে উঠলে তোমরা সবাই
সত্যিই হাসলে কি?
ধীরে ধীরে হাসির শব্দ গুলোও একদিন
অস্পষ্ট হয়ে যাবেনা তো ?
ভয় করে
বড় ভয় করে আমার ।
বয়সটা চল্লিশ ছুঁই ছুঁই
কাছের জিনিস চোখে কেবলই ফোটাচ্ছে সুঁই
একের অংক কেন দেখাচ্ছে দুই দুই
বয়সটা চল্লিশ ছুঁই ছুঁই।

রাজকুমারী









সোনার কাঠি , রূপোর কাঠি যেই ছোঁয়ালাম এই
রাজকুমারী উঠলো জেগে একটি নিমেষেই
চারধারে তার শিমুল তুলো মেঘের মতন হাসে
নীল কমলের ঘোড়ার আওয়াজ হাওয়ায় ভেসে আসে ।

জাদু

তোমাকে জড়িয়ে ধরে ছিলাম
তুমি বললে, আনমনা কেন?
আমাকে বাহুডোরে নিয়ে কার কথা ভাবছো ?
আমি হাসলাম
কারন তোমার আলিঙ্গনে নিজেকে সঁপে রেখে
আমি  খুঁজে বেড়াচ্ছি এক জব জাদুকর
যার একটা মাত্র জাদুর কাঠির স্পর্শে
আমি ঠিক এই মুহূর্তে
পাথর হয়ে যাবো ।

মঙ্গলবার, ২১ মার্চ, ২০১৭

তুমি

ক্ষমতা থাকলে তোমার হাতে থাকা অদৃশ্য রিমোট কন্ট্রোলটাকে ভেঙে চুরমার করে ফেলতাম। 
আর যাই কর অন্তত আমার মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারতে না।

কবিতা লেখার জন্য

ভারী অদ্ভুত তো ব্যাপারটা
আমি কবিতা লিখতে পারছিনা,
এ 'কদিনে দু মুঠো চালের ভাত খেয়েছি কি জানিনা
আমার খিধে নেই,
আমার ঘুম নেই,
আমি খুব বিভ্রান্তের মতন হাঁটছি রাস্তায়
প্রত্যেকটা মানুষ কে তুমি ভেবে ভুল করছি
ভারী অদ্ভুত তো ব্যাপারটা ,
এখন অবশেষে আমি গান শুনছি
আশ্চর্য! এতো সচেতনতার পর ও তোমার প্রিয় গানটা কেন এলো?
ওত দূর থেকেও তুমি নিয়ন্ত্রণ করছ আমায়?
তুমি দূরে থাকো অথবা কাছে আমাকে কি তবে ভিখারি হতেই হবে?
তোমার জন্য?
তোমার ভালোবাসার জন্য?
নয়তো তুমি আমায় কবিতা লিখতে দেবেনা?

বুধবার, ১ মার্চ, ২০১৭

এখানে একদিন




এখানে একদিন মানুষ ছিল
চড়ুই পাখির বসত ছিল
গ্রিলের ফাঁকে রোদের ছায়ায়
লুকোচুরির গল্প ছিল।

এখানে একদিন মানুষ ছিল
একটি মেয়ের আদর ছিল
খুব যতনে শাড়ির ভাঁজে
লুকোনো কোন কষ্ট ছিল।
এখানে একদিন মানুষ ছিল
বৃদ্ধ ছিল, তরুন ছিল
খিলখিলিয়ে হাসির জন্য
ছোট্ট রঙিন শিশু ছিল।

এখানে একদিন মানুষ ছিল
মানুষ গুলোর স্বপ্ন ছিল
এখান থেকে অনেক দূরে
ভুল জীবনের স্বপ্ন ছিল।


সেই মৃত গাছটা

সেই মৃত গাছটার কথা মনে আছে তোর
আমাদের পায়ে চলার পথটা জুড়ে
বিশাল বিস্তৃত গাছটা,
একটাও পাতা নেই
অসহ্য কষ্টে পুড়ে পুড়ে
কেমন কয়লা হয়ে গেছে
মনে আছে?
আমরা প্রায়ই বলতাম
গাছটাতে কি আছে রে?
এত পাখি কেন আসে ওর কাছে?
ফল নেই, ফুল নেই, পাতা পর্যন্ত নেই
তবু পাখিরা কেন আসে?
কিসের আশায় ভালোবাসে?
আহা, গাছ পুড়ে গেলে তবু পাখিরা আসে
আর মানুষ পুড়ে গেলে কেউ আসেনা ।
কেন আসেনা?
মানুষের দহন দৃষ্টির বাইরে থেকে যায় বলে?
গাছটার নাম এখনো জানিনা
মাঝে মাঝে শুধু তার কাছে যাই
যদি কখনো জানতে পাই
কোন মন্ত্র আছে তার ভেতরে লুকোনো
যদি আমার কঙ্কাবতি ফিরে আসে কখনো
ঐ মন্ত্রের ডাকে যদি কখনো?


বিদেশিনী




বিদেশিনী, সুহাসিনী ঝলমলে কন্যা
নীল ফুলে সেজে আছে সুন্দরী বন্যা
ভেবে ভেবে সারা হই ডাকবার নামটা
প্রিন্সেস, মোনালিসা, উইন্সলেট, কোনটা?

নীল তার চোখদুটো নীল নদী লুকোনো
সাধ জাগে ঢেউ হই ছোট, বড়, যে কোন
ছুঁয়ে যাবো, ছুঁয়ে যাবো, নীল নারী স্বপ্না
উড়ে যাও মন নিয়ে মেলে দুটি পাখনা
 

একটি ফুলের ইচ্ছে



ফুলের সেদিন ইচ্ছে হল মেঘের কাছে যাবে
প্রজাপতি বলল হেসে পাখা কোথায় পাবে?
ফুল বললে পাখির কাছে চাইতে হবে ডানা
কত জলে মেঘ হয়েছে হয়নি আজো জানা।
মেঘ বললে সুখে আছো, সুখেই তুমি থাকো
কষ্ট নিয়ে উড়ে বেড়াই জানতে এসো নাকো।
ছোট্ট জীবন আজকে আছো কালকে ঝরে শেষ
সবাই বলে ফুলের মতন জীবন হলেই বেশ।
ফুল বললে ঝরতে আমি চাইনা যে আর পথে
অনন্তকাল কইবো কথা চোখের জলের সাথে।

কবিতা



যান্ত্রিক এই জীবনে
কতোটা আর কবি হওয়া যায়?
সুউচ্চ দালানে থাকি
মাঝে মাঝে জানলার ফাঁকে
আকাশে চোখ রাখি।
দেখি আমার দালানের চেয়ে উঁচু দালান
ছাদে উঠবো তবে?
আমার যে বড় ভয় ওসবে
পঞ্চান্ন তলার ছাদে উঠে
আকাশ না হয় পাবো
মাটির থেকে কত দূরে
কতোটা দূরে যাবো?
আমার যে মাটির ঘ্রাণ ও চাই।
কেমন করে বল তবে কবি হওয়া যায়?
গাছের সাথে বলবো কথা
ঘর পেরিয়ে রাস্তায়
কালো ধোঁয়ার বাতাস আছে
সস্তায় বড় সস্তায়।
আমি না দেখি আকাশ
না পাই মাটি
কবিতা আমার
হয়না আর খাঁটি ।
আমায় তোমরা লিখতে বল
ফুল, পাখি আর আকাশ
আমার বুকের গভীর কোণে 
আটকে আছে নিঃশ্বাস।