শুক্রবার, ২৩ জুন, ২০১৭

জলের মেয়ে ১১

বসেছে সবুজ নারী
পড়েছে পাতার শাড়ি
পথিক চেয়ে বলে হায় হায়।
ফুলেরা খুশি বটে
ঘাসেরা অকপটে
দুখানি পা তার ছুঁয়ে যায়।



শেষ ঠিকানা

তুমি তোমায় নিয়ে থাকো
আমি আমায় নিয়ে থাকি
তুমি তোমার পথে বাঁচো
আমি আমার পথে ভাসি।

তুমি সবুজ পাতা হলে
তোমার অনেক কাজ বাকি
আমি ঝরা পাতার দলে
মন খারাপ করে থাকি।

তুমি আকাশ ছুঁতে চাও
আমি বৃষ্টি পেলে বাঁচি
তুমি মেঘের সাথে যাও
আমি ধুলোয় মিশে থাকি।

তুমি সবুজ থেকে যেদিন
ঝরা পাতার দলে যাবে
শত অবাক বিস্ময়ে
ঠিক আমায় পাশে পাবে।

দেখো মাটির সাথে মিশে
এক অপূর্ব সোঁদা গন্ধ
দেখো ঐখানে যত শান্তি
শেষ ঠিকানায় খাম বন্ধ।

জলের মেয়ে ৯

রুপোলী ফিতের মত পথটা চলে গেছে
কখন কি করে যেন ওপারে
গাছেরা মিলেমিশে হাজার কানাকানি
জড়ায়ে পাতার বোনা চাদরে।
আকাশে মেঘ নেই, সূর্য উঁকি দেয়
বাতাসে ফিসফিস কি কথা
হঠাৎ উঠে এল জলের থেকে মেয়ে
প্রানের মাঝারে বাজে কি ব্যথা।

মঙ্গলবার, ১৩ জুন, ২০১৭

মেয়ে

চোখে সর্বনাশ দেখেছিলেন রবি ঠাকুর
আমি মৃত্যু দেখেছি হাসিতে
এমন করে হেসোনা তুমি মেয়ে
ঠিক ঝুলে পড়বো ফাঁসিতে।

জল হব

দুহাত বাড়িয়ে আছি
তুমি ছুঁয়ে দিলে জল হব।

ওরা ফিরে আসে

ওরা শুধু জড়ো হয়, একত্রিত হয়
ওরা হাঁটতে হাঁটতে অনেক দূর যায়
আবার ফিরে আসে একই জায়গায়
এটাকে ওরা মিছিল বলে
প্রতিবাদ সমাবেশ বলে
ওদের চিৎকারে আকাশ কেঁপে ওঠে
বাতাসের গতিবেগ পাল্টায়
ঘর্মাক্ত মানুষগুলোর হাহাকারে
গাছেদের বুক চিরে যায় বুঝি!
পদাঘাতে মাটি চৌচির হয় 
কিন্তু ঐ চিৎকার বিচার ভবন পর্যন্ত পৌঁছায়না
কোন ধর্ষকের বাবার মায়ের রন্ধ্র ভেদ করেনা
শ্যামল ভৌমিকেরা জেলখানায় পঁচে শুধু,
আর ধর্ষকেরা তালি বাজায়।
ওরা ফিরে আসে মিছিল করে 
আবার
যার যার জায়গায়।

তবুও মিছিল হোক

তবুও মিছিল হোক
তবুও হোক প্রতিবাদ সমাবেশ
বিক্ষুব্ধ আমাদের পদাঘাতে চূর্ণ হোক মাটি
চূর্ণ হোক ক্ষমতাসীনের অহংকার যত
আকাশ কাঁপুক 
বাতাস ঝড়ের বেগে আসুক
গাছেরা বিভক্ত হয়ে 
হাতিয়ার হোক
আবার একটি মিছিল হোক
একজন আসাদ হোক
অথবা নূর হোসেন
একজন রফিক হোক
অথবা জব্বার 
অথবা আমি
তুমি
সে
অথবা তারা
আবার একটি মিছিল হোক
আবার আমরা সবাই
স্যারের সামনে কান ধরে হাঁটি
আবার বলি
স্যার আর ভুল হবেনা
অস্ত্র ছাড়া যুদ্ধে নেমেছি তো
তাই একটু দেরী হচ্ছে ।
ট্রেনিং তো জমা দেইনি।
আমরা দাঁত আর নখ দিয়েও যুদ্ধ করতে জানি।

জলের মেয়ে ৮







যেয়োনা এখন
থাকো আর কিছুক্ষণ
উঠুক রোদটা
জ্বলুক আকাশটা
সরুক মেঘটা
যেয়োনা এখন
থাকো আর কিছুক্ষণ
হোকনা সকালটা
জাগুক পৃথিবীটা
রাতের কষ্টগুলো
পাকনা ঠিকানাটা
উঠুক রোদটা
জ্বলুক আকাশটা
সরুক মেঘটা
ডাকুক পাখিটা
যেয়োনা এখন
থাকো আর একটুক্ষণ
আমার পাশে শুধু
সূর্য দিয়ে যাও
পাখির কিচিমিচি
ভোরটা দিয়ে যাও
সোনালু ফুল আর সূর্যমূখীর সাথে
আমার গোপন কথা
বলতে দিয়ে যাও ।
এমন অসময়ে যেয়োনা দূর দেশে
মেঘেরা চলে যাক আপন পথে ভেসে।

জলের মেয়ে ৭



তুমি বৃষ্টি দেখে হাসো
আমি তোমায় দেখে হাসি
তুমি একবার যদি হতে
আমার ভয়ার্ত জলদাসী।
নীলাম্বরী সেজে 
তুমি খোঁপায় আনো ফাগুন
আমার জলের দাসী ভয়ে
জ্বালে তুলসীতলায় আগুন।
তুমি বৃষ্টি ভালোবাসো
তুমি মেঘের পানে চাও
ঠিক দেখতে যদি তখন
আমার কালবোশেখীর গাঁও।
ঠিক দেখতে যদি তখন
এই ভয়াল জলরাশি
আর বলতেনা তুমি ঠিকই
আমি বৃষ্টি ভালোবাসি।

রবিবার, ১১ জুন, ২০১৭

জলের মেয়ে ৬

সোনালু ফুল, সোনালু ফুল
সোনা রঙের মেয়ে
তোমার সঙ্গে সখ্য হল
ফুল কুড়োতে যেয়ে। 

ফুল নেব কি তোমায় নেব
যখন ভেবেছি
হঠাৎ চোখে পড়লো ছায়া
স্বপ্ন দেখেছি।

ভুলের সাথে ১



তোমায় চাই
তোমায় চাই
এটাই তোমার যন্ত্রণা?
এমনি করে
হঠাৎ আমি
হারিয়ে গেলে মন্দ না।

ভুলের সাথে ২

ভাবছো বুঝি
তোমার পথে
আবার আমি
পথ হারাবো?
ভুল ভেবেছো
ভুল ভেবেছো
এবার আমি
ঠিক ঘোরাবো।
পথ চিনেছি
পথ চিনেছি
ফিরতে পারি
ঠিক চিনে।
একটু ক'টা
রাত্রি গেল
ভুল চিনে আর
ভুল জেনে।

জলের মেয়ে ৫



ছোটবেলায় মা বলতো ,
বৃষ্টি এলে ভিজবি যত
যে যাই করুক মানা।
ওই যে তোর জ্বর হবে আর
সর্দি হবে
ওতেই সব অসুখ যাবে
নেইতো কারোর জানা।
একটু জানলা খুলে দে না
বৃষ্টি আসুক অনেক করে
করিস নে আর মানা।
বৃষ্টি এলে লিখতে থাকি
শুধুই কবিতা
ধুয়ে যদি নিতেই পারে
কষ্ট সবই তা ?

জলের মেয়ে ৪

প্রতিদিন তোমায় দেখি
বেগুনী জারুল মেয়ে
সবুজ পাতার ফাঁকে
নতুন বধূর মতন
আছো লুকায়ে।
এখনো বর্ষা কই?
আকাশে রোদ থই থই
বাতাসে উষ্ণতার ছোঁয়া পাই
তবুও কেন তুমি
ফুটেছো এমন করে
লাজলজ্জা কিছুই কি আর নাই!

জলের মেয়ে ৩

আকাশের গায়ে ভেসে
আকাশকে ভালো না বেসে
মেঘ যায় চাঁদের বাড়ী।
সূর্য বলে হেসে
আঁধার ছুঁয়ে দিলি শেষে?
আলো কোথা?
আলো সব আমারই।

জলের মেয়ে ২

এখন আমি বৃষ্টি হলে আর জানলা খুলে রাখিনা।বিছানার একপাশ টা ভিজে যায়।বলতে পারিনা ভিজুক আমার কি?লিভিং রুমের দামী সোফাতেও যেন বৃষ্টির ছাঁট না লাগে আমি তাই খুব সাবধান থাকি।বারান্দার কাঁচের দরজাটা বেঁধে রাখি।ঝড়ো হাওয়া তারপর বৃষ্টি , সারাঘর কাদা ধুলোয় মাখামাখি হয় যদি।আমি বড় বেশী বৃষ্টি বিলাসী কিন্তু অসুখ করে ঘরে শুয়ে থাকতে হবে বলে এখন আর ভিজিনা।অথচ আমার শ্রবণেন্দ্রীয় কেন যেন তীক্ষ্ন প্রতিক্ষায় থেকে যায় বারবার , একটু বাতাস অথবা একরাশ বৃষ্টি ।একবার মিষ্টি সুরে আমার দরজার চাইম টা বেজে উঠুক।
বাজেনা।আমার দরজা বন্ধ।বৃষ্টি আসেনা আমার বাড়ী।জানলার কাঁচে মেঘেদের আনাগোনা। আমি মেঘ ছুঁয়ে দি।
মেঘ ছুঁলে তো আর অসুখ করেনা।

জলের মেয়ে ১

 
 
 
হঠাৎ ইচ্ছে হল বাতাসে হারাই
হারাই বৃষ্টি জলে
আমরা হারাচ্ছিলাম
আমাদের হাতে আধ ঘণ্টা বরাদ্দ ছিল
আমার স্লিপারের তলায় এখনো কাদা,
কারণ আমরা এক মিনিট রাস্তায় হেঁটেছিলাম ,
আমার চুলের আগায় বৃষ্টির ফোঁটা
এখনো শুকোয়নি
কারণ আমরা চার মিনিট বৃষ্টিস্নান করেছিলাম।
এই চার মিনিটের জল অনেকটা কাঁঠালের আঠার মত,
কারণ তাতে পাগল প্রেম ছিল।
আমার হাতের ভাঁজে এখনো সিগারেটের তীব্র গন্ধ
কারণ গোটা পাঁচ মিনিট আমাদের দু হাত এক হয়ে ছিল।
তারপর বাকি বিশ মিনিট আমি অগ্যান ছিলাম
আমার কিছু মনে নেই
কারণ আমার ঠোঁট তখন থেকে আর
আমার কাছে নেই।