শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

আমার রাজকন্যা




ছোট্ট মিষ্টি জামাগুলো
দেখতে কেনো এত্ত ভালো ?
ছুঁয়ে থাকবে কেমন বল
ছোট্ট শরীর তুলোতুলো ?

একটি মোটে রক্তকণা ,
ঠিক যেনো এক বালুর কণা।
এসব তবে কি ভাবনা ?
সুখবিলাসে ঘুম আসেনা ?

দিন যায় যায় একটি করে
রক্তকণা দ্রুতই বাড়ে।
একটু হঠাত নড়লো বুঝি ?
উপোস চোখে শুধুই খুঁজি।

দুলবি নাকি দোলনা টাতে ?
দুলতে তোকে দেবো বুঝি ?
দিনরাত্তির বুকের ওমে ,
থাকবি হয়ে ফুলের সাজি।

এই সুখ সুখ সুখ স্বপ্নগুলো
এত্ত কেনো দেখি ?
আসবি কবে আমার বুকে
রাজকন্যা পাখি ?

তুই আসবি ভেবে
রক্তজবা  অনেক ফুটেছে।
লাল নীল ওই জামাগুলো
রোদ্দুরে হেসেছে।

আসবি বলে
জোসনা আলো দেবে বলেছে 
মিষ্টি হাওয়া বইবে তখন
কথা দিয়েছে।

এমনি করেই স্বপ্ন সুখে
দিন যে কেটেছে।
কল্পনাতে স্পর্শ করে
তৃষ্ণা বেড়েছে।


তারপর এলো সেই সে সেদিন।
বললি আমায় : "বাচাঁও "
আমি কেবল দেখতে পেলাম
রক্ত ..............................
রাজকন্যা উধাও।

অপেক্ষাতো শেষেই ছিলো।
মাত্র কদিন বাকি।
রক্তে কেনো গেলি ভেসে
কেনো দিলি ফাঁকি ?


মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

সূর্যাস্ত

হরিণী হরিণী চঞ্চল
সকাল  সাঁঝে তে  প্রাঞ্জল,
এমনি  দেখেছি তারে
পাখির  মতন ওড়ে।

ছিল সে দারুন বন্য
সমুদ্রস্নানে ধন্য,
জোয়ারের টানে ভাসবে
বোশেখের ঝড়ে উড়বে।

আমার কিছুটা ভিন্ন,
ভালোলাগা ছিলো অন্য।
কোমল  শান্ত চোখ
পেতে চাইতো এ বুক।

তবুও হয়েছে দেখা
হয়ে গেছে পরিচয়।
এমনই ছিল  যে লেখা
পরিচয় থেকে পরিনয়।

তার ঝড় ঝড় ভালোবাসায়
পাইনি কখনো বৃষ্টি।
তার  উথাল পাথাল চাওয়ায়
দিইনি কখনো দৃষ্টি।

পাহাড়ের কাছে চেয়েছি
বৃক্ষে আসন পেতেছি,
তুফান ঝড়ের চেয়ে
মাতাল হাওয়ায় মজেছি।

তার  ভুবনভোলানো হাসি
খিলখিল স্বরে বাজতো।
আমি বলতাম ,"ধীরে ,
রিনিঝিনি করে হাসোতো "

এমনি  করেই সকাল,
এমনি করেই রাত,
বুঝিইনিতো কখন
মনে মনে সংঘাত।

তার জোয়ার ভালবাসায়
লাগাম দিলাম মস্ত।
জানিনা কবে কখন
এসে গেছে সূর্যাস্ত ।

যখন  বুঝেছি তুফান
আমারও আসলে চাই।
আমারি অবহেলায়
হারিয়ে ফেলেছি তায়।

বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

চোরকাঁটা



হয়ে যা চোরকাঁটা তুই শাড়ির ভাঁজে
নিয়ে আসি কোনো এক একলা সাঁঝে
জমা থাক সেই শাড়িটা আমার বুকে
জানি তুই থাকবি শুধু আমার সুখে।

যারে আমি এই জীবনে এত পেয়েছি
তারে শুধু ভুল বুঝেছি ,ভুল বুঝেছি।
জানি তুই হঠাত আসা দমকা হাওয়া
তবু কেন তোরেই নিয়ে এত চাওয়া ?

যে আমায় সুখে দুঃখে সব দিয়েছে
সে কেন হৃদয় মাঝে 'না' হয়েছে ?
বোঝা আর হলোনাকো এই জীবনে
মন আমার কেবল অবাক এই দহনে।

এ আমার কোন হিসেবের দুঃখবিলাস ?
এত সুখ তবু ও মন কোথায় পালাস ?
আলোকের মাঝে কেনো আঁধার খোঁজা ?
আঁধারে আলো কি আর এতই সোজা ?

চোরকাঁটা হয়েই তোরে থাকতে হবে।
চুরি চুরি করেই তোরে দেখতে হবে।
থাকেনা ভালোবাসা সব জানাতে।
বুঝেছি সকল সুখ ঐ চোরকাঁটা তে।

মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

সময় চুরি

কৃষ্ণচূড়া ছিলো তোমার ভীষণ প্রিয় ফুল
ওই ফুল মাড়িয়ে হেঁটে আসাই ছিলো বড় ভুল।
কৃষ্ণচূড়া রাগ করে আর দেয়নি আসন পেতে
তাইতো তুমি চাওনি পিছু আমায় ছেড়ে যেতে।

পূর্নিমাতে পাগল হয়ে জোস্না স্নানে  নামা
কৃষ্ণকালো অমাবস্যা করলোনাতো ক্ষমা।
অমাবস্যার রাত টি বলে চাওনা কেনো আমায় ?
সব রাতেকি চাঁদটি অমন জোসনা দেবে তোমায়?

ভীষণ কালো অন্ধকারে একরকমের সুখ
হারাবে যেদিন ,বুঝবে যেদিন খালি হবে বুক।
ইচ্ছে হবে অন্ধকারে লুকিয়ে রাখো মুখ
ওই সুখ ও কি অমাবস্যা দেবে খানিকটুক ?

জোসনা নিয়ে ছিলেম পড়ে চাইনি অমাবস্যা
ফাগুন নিয়ে ছিলেম পড়ে চাইনি শরৎ ,বর্ষা।
আজ দেখোনা ওই ফাগুনে আগুন লেগেছে
কৃষ্ণচূড়া লালের থেকে কৃষ্ণ সেজেছে।
জলের তোড়ে ভাসিয়ে দেবো সেই সে কালো রং
পারছিনাতো বর্ষাকে আর করতে নিমন্ত্রণ।

তোমার সুরে সুর মেলাতে হারিয়ে গেছে সব
বুঝিইনিতো একলা আমি নেইতো কলোরব।
কখন তোমার ইচ্ছেগুলো আমায় কেড়ে নিলো।
বুঝতে আমার এত্তখানি সময় চুরি গেলো।

সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

Call Waiting




ফোন টা  বেজেই যাচ্ছে। ধরতে ইচ্ছে করছেনা।
আর কি ?
জানতে চাইবে :" কিরে ?বাসায় ফিরেছিস ?ভালো আছিস?মাইগ্রেন পেইন কমেছে ? সোনামনি গুলো ভালো  আছে ?"
প্রতিদিন এক কথা। কেন যে  বোঝেনা ?এককথা প্রতিদিন ভালো লাগেনা।অফিসের জরুরী  ফোনে টাতে  কথা হচ্ছে। এর মাঝে কল ওয়েটিং।
ওয়েটিং  এই থাকুক। এখন ফোন  টা ধরা মানেই একঘন্টার গল্প । আমার সময়ের কি কোনো মুল্য নেই?আশ্চর্য !
কেনো যে বোঝেনা ?কবে যে বুঝবে ?
আজ শরীরটাও তেমন ভালো লাগছেনা। কেমন যেনো জ্বর জ্বর লাগছে। রাতে নিউস আছে।শরীরটা ভালো থাকলেই হয়।জ্বর এলে বিরাট ঝামেলায় পড়তে হবে। অনেক কাজ বাকী।


যা ভেবেছি তাই হলো। জ্বর বাড়ছে।
সন্ধ্যার দিকে হু হু কোরে  এলো জ্বর।
কোনোরকমে ফোন টা দিলাম।
"খুব কষ্ট হচ্ছে, পারলে চলে এসো। "
ঐ একবারই জানি বললে হবে। হাজির হয়ে যাবেতো। কোনো টেনশন  নেই। যত দূরেই থাকুক ,যেখানেই থাকুক আসবে।
আমি জানি।

আমি জানতাম। আমি এমনই  জানতাম। মা কে  খুব বেশি না ডাকলেও চলে আসে। মা দের পিঠে ডানা থাকে।ডানায় ভর করে চলে আসে । মা দের দশটা হাত ও থাকে। সব কাজ করে দিতে পারে এক নিমেষে।আমি এমনই জানতাম।একহাজার টা  বকা দিলেও আবার ফোন করে।একটু অভিমান করে। ওটাও আমি পাত্তা দিইনা। তবু অসুবিধা হয়না।মনে রাখেনা কিছু। বিরাট একটা আদর আদর বুক আছেতো। ওখানে আবার টেনে নেয়। আমি চাই কি না চাই কিছুতে কিছু এসে  যায়না।
কি অদ্ভুত ভাবনা ছিলো আমার।আমি জানতাম মা রা পুতুল হয়। কখনো রাগ করে কোথাও চলে যায়না।আর বাচ্চার অসুখ করলেতো  পুতুল মা দের কোত্থাও যেতে নেই। বারণ আছে।

আমি  শুধু জানতামনা পুতুলেরও অসুখ করে। পুতুল ও রাগ করে।আমি জানতামনা পুতুলের মত ওই মুখ অনেক দিন না দেখেও ঘুমানো যায়। আমি জানতামনা পুতুল টার  সাথে খেলা ধুলা  না করলেও দিনের পর দিন কাটানো যায়।

আমি জানতাম পুতুলটার অনেক অসুখ করলেও ,অনেক কষ্ট হলেও আমার অসুখে ও আসবেই মিষ্টি হেসে।আর ওই হাসিতেই অসুখ আমার একদম ভালো হয়ে যাবে।

আমি এভাবেই জানতাম।
জানো ?



এখন 
অনেক অসুখ করলেও আমার পুতুল মা আর আসেনা।


পুতুল মা ,
আমি কথা দিচ্ছি একবার তুমি এসে দেখো। আমি আর কোনদিন তোমার কল ওয়েটিং এ রাখবোনা। 
একটা চুমুর জন্যও তোমাকে একটাবার বলতে হবেনা। 
একবারের জন্যেও জড়িয়ে ধরতে চাইতে হবেনা।
আমি তোমাকে আর কোনদিন একবিন্দু বকবনা। আমি তোমার সব কথা শুনবো। তুমি শুধু একবার ডাক দিয়ে দেখো আমি কতটা কাঙ্গাল হয়ে আছি।আমি সব ফোন কেটে দিয়ে শুধু তোমার কথা শুনবো। আমি আর কোনদিন তোমার কল ওয়েটিং এ রাখবোনা।তুমি শুধু একবার এসে দেখ আমার কাছে।