বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০১৪

কথা

১)সময় চলে যায় কথাটা সত্যি , কিনতু সময় কে ধরেও রাখা যায়। ধরে রাখতে জানতে হয়। সময়ের কাজ টা সময়েই সেরে নিতে হয়।
২) বুঝিনা মাঝে মাঝে প্রযুক্তি নির্ভরতা ভালো না খারাপ !প্রযুক্তি দিয়ে যখন অনেক দুরের মানুষ দের দেখার স্বাদ মেটাই  তখন মনে হয় এটা ভালো। আবার কাছের মানুষ গুলো যখন বাড়ি এসে খোঁজ না নিয়ে প্রযুক্তি ব্যবহার করে খবর নেয় তখন মনে হয় প্রযুক্তি খারাপ।
৩)সাজানো জীবনতো হয়না। জীবনকে সাজিয়ে নিতে হয়।
৪)বীট লবন যেমন মাঝেমাঝে খাবারের স্বাদ বাড়ায় ,তেমনি জীবনেও বীট লবনের মতো আলগা স্বাদের আবির্ভাব মন্দ নয়। কিন্তু ওই আলগা স্বাদ নিতে নিতে আসল লবনের কথা ভুলে গেলে স্বাস্থ্য খারাপের মতন জীবনটাও বোধ হয় শেষ হয়ে যায়।
৫)ভালবাসিনা। একবার ভালোবাসলে আর দুরে যাইনা।একবার দুরে চলে গেলে আর ফিরে তাকাইনা।
৬)Missing me one place,search another,
    I stop somewhere waiting for you.......
৭)ইসরায়েলের সাথে ফিলিস্তিনিদের যে যুদ্ধ তা কিন্তু ইহুদি মুসলমানের লড়াই নয়। জায়নবাদী দের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনের মানুষের জাতীয় মুক্তিসংগ্রাম। এই ফিলিস্তিন নামক বহুল আলোচিত জায়গাটাতে দেড় হাজার বছর খ্রিস্টান ,ইহুদি ও মুসলমান রা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করছেন।সকল অস্ত্র ব্যবহার শেষে এবার জায়নবাদী রা সেই পুরনো অস্ত্রের কাছে ফিরতে চায়।২০ জুলাই.......ইসরায়েলের সরকারী রেডিও তে জেরুজালেমের বার ইলান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্যের অধ্যাপক মরদেচাই কেদার ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্যে বলেন ,"অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ অনেক হয়েছে। এবার বরং গাজায় ঢুকে নারীদের ধর্ষণ করতে শুরু করুক আমাদের সেনারা।"
ঈশ্বর ,এই অস্ত্রের প্রয়োগ যেনো না হয় ..........................
৮)আনন্দের সময় গুলোকে যদি আচারের মতন বয়ামে ভরে রাখতে পারতাম।সময়ে সময়ে বের করে নেয়া যেতো। কি ভালো হতো তাহলে ?
৯)একটা দুটো শব্দ পাল্টে দিলে পুরো বাক্যের অর্থই পাল্টে যায়। জীবনটাও সেরকম। একটা দুটো ঘটনা পাল্টে দিলে জীবনের মানেটাই অন্যরকম হয়ে যায়।সমস্যা হলো  ভুল শব্দ মোছার জন্যে ইরেজার থাকে। কিন্তু জীবনের ওই ঘটনা গুলো মুছে ফেলার জন্যে কোনো ডিলিট বা ব্যাকস্পেস বা ইরেজার নেই।

১০)ছোটবেলায় বিজ্ঞান ক্লাস এ পেয়াঁজ খোলার একটা কাজ ছিলো। খুব মন দিয়ে কাজ টা করতাম।একের পর এক খোলস খুলছি তবু নতুন খোলস বেরুচ্ছে। এখন বড় হয়ে মানুষ খুলতে গিয়ে দেখি মানুষ ও পেয়াঁজ এর মতন। এত খুলি তবু আসল মানুষ টা  বের হয়ে আসেনা।শুধু খোলস আর খোলস।

১১)নিজের সম্মান নিজেই বুঝতে পারা অনেক প্রয়োজনীয় একটা ব্যাপার। আমরা প্রায়ই ভালবাসায় আপ্লুত হয়ে নিজের প্রাপ্য সম্মান বড় বিচ্ছিরি ভাবে হারিয়ে ফেলি।আকাশের চাঁদ মাটিতে নেমে এলে লোকে ভেবে নেয় সেতো মাটির ঢেলা বৈ আর কিছু নয়।

১২)প্রত্যেক মানুষের ভেতর ভালো এবং মন্দ দুটো দিকই থাকে।তুমি কার ভেতর থেকে কোন দিকটা বার করে নিয়ে আসবে এটা একান্তই তোমার ব্যাপার।
১৩)আমায় কিছু শিখিওনা।নিজের ফ্রান্কেস্টআইন সহ্য করার ক্ষমতা সবার থাকেনা।
১৪)যাকে ভালো লাগেনা তার সংস্পর্শ যতোটা সম্ভব এড়িয়ে চলাই মঙ্গল।জীবন টা খুব ছোট।হাসবার জন্যে সময় সত্যিই খুব অল্প।কেও যেনো তোমার জীবনের একটা মুহূর্ত ও নষ্ট করতে না পারে।
১৫)  জানি সবকিছুর জন্যেই যত্নের প্রয়োজন। সে তোমার সম্পর্কই হউক অথবা গাছপালা। তবে গাছের যত্নে ফুল ফল অবধারিতভাবে পাওয়া যায়। কিন্তু সম্পর্কের বেলা ?
১৬) যাকে তোমার একান্তই প্রয়োজন ,তার সাথে কখনো কোনদিন এমন কোনো দূরত্ব সৃষ্টি করোনা যেন পরবর্তিতে আর কাছেই ডাকতে না পারো।কারণ প্রতিটি মানুষের ভেতরেই আত্মপ্রাধান্য(ego) নামক একটি ব্যাপার প্রবল ভাবে বিদ্যমান।
১৭)নিজেকে কারোর কাছে খুব বেশি প্রয়োজনীয় ভাবাটা একটা অপরাধের পর্যায়ে পড়ে। প্রয়োজন ফুরাতে খুব বেশী সময় লাগেনা। মানুষ মাত্রই পরিবর্তনশীল এবং খাপ খাইয়ে নিতে জানে।
১৮)আমি কত ভালো আছি এটা জানার জন্যে প্রত্যেক মানুষের একবার অন্তত যে কোনো হাসপাতাল অথবা বার্ন ইউনিট ঘুরে আসা দরকার।কষ্টের ও একটা সীমা আছে। মানুষ কি দানবই হয়ে যাচ্ছে শেষ পর্যন্ত ?

১৯)সময় টা কেমন যেনো ছিলো। অন্তত আমার কাছে। কেমন যেনো একটা অপেক্ষা ছিলো। অপেক্ষার পর পাবার আনন্দ আর না পাবার কষ্ট দুটোই কি অদ্ভুত অন্যরকম অনুভূতি। কেমন যেনো হারিয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন। কথা গুলো খুব বেশি মনে হলো অলিতে গলিতে এ টি এম বুথের বাড়াবাড়ি আবির্ভাব দেখে। মা তখন মাসের শেষে একটা কিছু পছন্দ হলে বেমালুম ইচ্ছের কথাটা গিলেই ফেলতো। সযত্নে অপেক্ষায় থাকতো বাবাকে রাজী করাবে। নয়তো নিজেই কিছু টাকা কোনভাবে জমাবে তারপর জিনিষটা কিনবে। কি যে অদ্ভুত অনুভূতি। টাকা জমিয়ে সুন্দর করে সংসার করা। যখন তখন জমানো টাকা অনর্থক খরচ না করা। কখনো কিছু ইচ্ছেকে ভীষণ স্বাধীনতা দেয়া আবার কখনো একটু বাঁধ দেয়া।
এখন আমাদের কাছে জীবনের সব আনন্দ হাতের মুঠোয় এনে দেবার শপথ করেছে  প্রযুক্তি।কিন্তু আনন্দ শব্দটার অর্থটাও যেন ভীষণ করে পাল্টে দিয়েছে।

২০) একটা কিছু কারণে মন যদি বিক্ষিপ্ত হয়ে থাকে তবে ওই নির্দিষ্ট সমস্যা টা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত কোনো কিছু দিয়েই মনটা ঠিক করা যায়না।
২১) যে কোনো  সম্পর্কের ভিতর মাঝেমাঝে একটু দুরত্ব আসাটা জরুরী।তাহলে আঁকড়ে ধরার প্রবণতা টা বেড়ে যায়।
মানুষ নানাভাবে ওপরে ওঠে ,সব সিঁড়ি তো একরকম না।

মঙ্গলবার, ২২ জুলাই, ২০১৪

মিকি





আমি তখন ক্লাস নাইন এ পড়ি।আমার এক বন্ধু রাস্তা থেকে কুড়িয়ে একটা বেড়াল নিয়ে এলো । বললো, বেড়ালটা খুব দুখী। আমরা যেনো ওর ভরণ পোষণের ব্যবস্থা করি। হয়ে গেল কাজ।আমরা চার ভাই বোন কে আর পায় কে। শুধু আম্মার অনুমুতি বাকি।আব্বাকে  আম্মাই সামলে নেবে।বেড়াল পালবার প্রস্তাবের শুরুতেই আম্মা বললো ,এই পৃথিবীতে কেও যদি কাওকে শত্রু বানাতে চায় তবেই নাকি বেড়াল উপহার হিসেবে দেয়। কেবল একটা বেড়ালের মাধ্যমে নাকি যেকোনো বন্ধুত্ব ভেঙ্গে যেতে সক্ষম। বেড়াল এতই বিরক্তিকর প্রাণী।আম্মার কথাটা অবশ্য সত্যি হয়েছে। যাই হউক,আম্মার সব উপদেশ আমাদের  বেড়াল ভালবাসার কারণে একসময় ব্যর্থ হলো।
আমাদের কান্নাভেজা  চোখের দিকে  তাকিয়ে অবশেষে আম্মা রাজি হলেন।
এরপর আব্বার অশান্তির কথা নাই বা লিখলাম। আম্মা আর আব্বার চরম ভ্রু কুচকানো চেহারার সামনে সগর্বে বসত হলো মিকির।

যেখানেই মিকি যায় আব্বা বিরক্ত। ইলিশ মাছ কেনা বন্ধ। কারণ ইলিশের গন্ধ পেলে মিকি আর বেড়াল থাকেনা। মানুষ হয়ে যায়। টেবিল চেয়ার এ সম্মানের সাথে খাদ্য গ্রহণ করতে চায়। এরকম নানা অবস্থায় খাপ খাইয়ে মিকির জীবন চলতে থাকে।
মিকি অসাধারণ সুন্দরী হবার কারণে ধীরে ধীরে বাড়ীর আশেপাশে সকল বেড়াল ওর বন্ধুত্ব পেতে আগ্রহী হয়ে ওঠে।
তার ফলাফল স্বরূপ মিকি ১১ টি বাচ্চার জন্ম দেয় স্তরে স্তরে অর্থাৎ বছরে বছরে।
এবার শুরু হলো আসল যন্ত্রণা। আমরা কিছুতেই বাচ্চা গুলো কাওকে দেবোনা। সবাই মিলেমিশে থাকবো।আব্বার রক্তচক্ষু পুরোপুরি আম্মার উপর চাপিয়ে দিয়ে মিকি আর তার গোটা পরিবার এর দায়িত্ব নিলাম আমরা।

বেশ ভালই ছিলাম সবাই মিলে।ঋতু বদলাচ্ছে। সময় গড়াচ্ছে। মিকির বাচ্চারা বড় হচ্ছে। ওরই  রাজত্ব কারণ আমার মায়েরই তো এত ছানাপোনা নেই।
এমনি করতে করতে  শীতের এক মিষ্টি দুপুর। আমরা চার ভাই বোন একসাথে ঘুমাচ্ছি, লেপ মুড়ি দিয়ে ভীষন আরামের ঘুম। সাথে ১১ টি বেড়াল ছানা  আমাদের জড়িয়ে।
হঠাত ঘরে ঢুকলো আব্বা। আমরা যথাসম্ভব আব্বার কাছ থেকে মিকির পরিবার কে দুরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করতাম। কিন্তু এবার ধরা খেলাম। আব্বার সেকি রাগ। আমি বড় হয়ে যাওয়াতে মারতে পারছেনা। বাকিগুলা সমানে মার খাচ্ছে।
এই দৃশ্য দেখে কি হলো মিকির জানিনা। ও মনে মনে কি যেন প্রতিজ্ঞা করে ফেললো। ওই দিন থেকে শুরু হলো মিকির অদ্ভুত কার্যকলাপ। আব্বা যা করছে মিকি তাই করছে। শুধু কথা বলা ছাড়া আর সমস্ত কিছু সে আব্বার মতন করার চেষ্টা করছে। আব্বা আয়েশী চেয়ার এ বিশ্রাম নিতে গিয়ে দেখছে মিকি ওখানে আগের থেকেই আব্বার মতন করে শুয়ে আছে। একই ভাবে। মোদ্দা কথা আব্বা বাজার নিয়ে এলে মিকিও বাজার নিয়ে আসার মতন একটা ভঙ্গী করছে চার  পা দিয়ে । অদ্ভুত অবস্থা। আমরা কিছুতেই মিকির এইসব বেয়াদবি সামাল দিতে পারছিনা।
ঘরে ভয়াবহ অশান্তি। যথারীতি আম্মা একাই সব সামাল দিয়ে যাচ্ছে।
ভেবেছিলাম এমন করেই চলবে। তবুতো  মিকি আছে গোটা পরিবার সহ।
আমরা নিশ্চিন্তে কাজ করি ,ঘুমাই ,খাই দাই। জানতেই পাইনি আব্বা আর আম্মার মনে এই ছিলো।

একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি মিকিরা কেও নেই।সেকি ভয়াবহ অবস্থা আমাদের। কিছুদিন পর আমার বিয়ে। এই চরম আনন্দময়  মুহুর্তে আমার ভাইরা ভাবতেই পারছেনা মিকি নেই।মিকি কে ছাড়া আপার  বিয়ে।কিকরে সম্ভব। কিন্তু মিকি কোথায় ?কোথায় মিকি ?
তন্ন তন্ন করে খোঁজা হলো। পাওয়া গেলোনা।আমাদের সন্দেহ খুব স্বাভাবিক আব্বার দিকে। কিন্তু আব্বাও এত মর্মাহত ভাব করছে কিছু বোঝার উপায় থাকলোনা যে আব্বা নিজেই আমাদের বাবুর্চি কে সঙ্গে করে অনেক দূরে নদীর পারে মিকির পুরো পরিবার কে রেখে এসেছে। বাবুর্চি আঙ্কেল বহু দিন পর স্বীকার করেছিলেন বলেই জানতে পেরেছিলাম।

এরপর আমার বিয়ে হলো। মিকি নেই। আমি নেই। অসহনীয় কষ্ট আমার ভাইদের। কষ্ট করে করে ২০০৩ সাল। ১৩ ই জুলাই। এক সুন্দর সন্ধ্যায় জন্ম হলো আমার মেয়ের। আমার ভাইরা আগেই বলে রেখেছে  মেয়ে যদি হয় তবে মিকি ফিরে আসবে।কি অদ্ভুত ভালবাসা।এখনো ওরা আমার মেয়েকে বেড়াল ছানা ডাকে।এখনো ওদের কাছে আমার কন্যা মানে আমাদের মিকি।

সোমবার, ২১ জুলাই, ২০১৪

সেই বাড়ীটা







আমার খুব বড় কোনো দীঘি ছিলোনা ,
ছোট্ট ছোট্ট গুনতে পারা
একটা দুটো ডোবা ছিলো।
কোনোটা বেশ পানায় ঢাকা
কোনোটাতে ডিঙ্গি বাধা।
মাঝেমাঝে পানায় কেমন খুব বেগুনি ফুল ফুটতো
দেখতে পেলেই তুলতে যাবো
প্রাণ  চাইতো ,মন চাইতো।
ডিঙ্গিটাতে  একটু কেবল বসতে  নিতাম
মা বকবে এই ভয়েতে ফিরেই যেতাম।

আমার তেমন ছোট্ট ছোট্ট গাছ ছিলোনা ,
একটা কেবল  ছায়ায় ভরা বৃক্ষ ছিলো।
তার ফুলেতে এতই  সুবাস ,
শরীর কাঁপায় ,ভীষণ কাঁপায়।
নামটি যে  তার বকুল ছিলো।

একলা আকাশ ছিলোনাতো কোনোকালেই  ,
বরং একটা মস্ত বড় আকাশ ছিলো।
সেই  আকাশে সারা দুপুর উড়তো ঘুড়ি
ঘুড়িগুলো সবার ছিলো।
সবার ছিলো।

খেজুর রসে কে যে প্রথম চুমুক দেবে
কে শুনেছে এই  নিয়ে সব ঝগড়াঝাটি ?
কেউ শোনেনি ,কেউ শোনেনি।
বৃষ্টি এলেই ভিজতে হবে
এটুক জানি।
এটুক জানি।

সন্ধ্যে বেলা বাবার অমন রক্তচক্ষু
তারই ভয়ে উথাল পাথাল শান্ত বক্ষ।
সেই ভয়েতেই লেখাপড়ায় সমস্ত ভুল।
তবু কোনো পরীক্ষাতেই হয়নি ভুল।

হাতে গোনা মাত্রকটা  রং দেখেছি।
তার মাঝারে অনেক বেশী
সবুজ আর নীল চিনেছি।
অনেক রঙে রঙিন কোনো বাক্স ছিলোনা
কিনতু আমার চতুর্দিকেই রঙিন  ছিলো।


কবরখানা পেরিয়ে  যেতে একটু কেবল চোখ বুজেছি
এর বেশি কি কোনকালেই ভয় পেয়েছি?
পাইনি জানো ?

আমার একটা বাড়ী ছিলো।
সেই বাড়ীতে তোমার মতন মাত্রকটা লোক ছিলোনা।
সেই বাড়ীটা ছোট্ট বাড়ী ,
মানুষ ছিলো  ভুরি ভুরি।

সেই বাড়ীতে একটা ভীষণ ছিলো বুড়ি ।
এত্তগুলো নাতিপুতি
কাকে রেখে বকবে কাকে ?
তাই সে কেবল আদর  দিতো।
আদর দিতো ,আদর দিতো।
সেই  আদরে কি জানি কি জাদু ছিলো !!!!!
আমরা সবাই এক বিছানায় ঘুমিয়ে যেতাম।

সেই বাড়ীতে আমার ছোট্টবেলা ছিলো।

সেই বাড়ীটা এখন জানো মস্ত বড়।
সেই বাড়ীটা এখন শুধু একলা থাকে।
সেই বাড়ীতে আমার ছোট্টবেলা ছিলো।
সেই বাড়ীটা ভীষনভাবে আমায় ডাকে।
সেই বাড়ীটা আমায় কেবল পিছু ডাকে।



শনিবার, ১৯ জুলাই, ২০১৪

চিঠি





চৈত্রের খর রোদ্দুরে পাখির বাসা খুঁজতে খুঁজতে
সেই যে হারিয়েছি...........
আমি!
নাকি তুই ?

তবু তোর ঠিকানা আছে।
আর
ঠিকানাবিহীন আমি
আজ বিকেলে বেরিয়েছিলাম
পাখিটা নতুন করে খুঁজবো ভেবে।
কি আশ্চর্য !
সেতো আগের ঠিকানাতেই রয়ে গেছে।
জানিস ?
ওর একটা সংসার হয়েছে।
তিনটে ছানা।

পাখিরাও কথা রাখে।

আচ্ছা ?
তুই মানুষ না হয়ে পাখি হলিনা কেনো ?

শুক্রবার, ১৮ জুলাই, ২০১৪

ব্যবচ্ছেদ

আমিও বহুদূর থেকে দেখছি। আর ওরা দূর পাহাড়ের ওপার থেকে দেখছে আর্তনাদ।আর্তনাদ কি দেখার কিছু?সেতো শোনার আর অনুভব করার।কতকিছুই তো দেখি। কতোটা সময় করে দেখি ?মনের জানালা কি সবসময় খুলে দেখি?
আমার শিশুটি আমার বুকেই সুরক্ষিত। পরম নির্ভরতায়।কি এসে যায় আর কারো শিশুর কান্নায় ?ওদের কান্না দেখবার হতে পারে ,দেখে  ভুলে যাবার হতে পারে ,হৃদয়ঙ্গমের হতে পারেকি ?
হৃদয়ঙ্গমের হলেতো কিছু দায়িত্বের বোঝা কাঁধে নিতে হয়। ভাবতে হয়।অপরকে ভাবাবার কাজ নিতে হয়।
আমিতো ভালই আছি।আমি কিছুটা পলায়ন প্রবণ হয়ে জন্মেছি।সকল বিপদে আমি মনে মনে একজন দেবদূতের অপেক্ষায় থাকি। এখনো তাই আছি।
দেবদূত আবির্ভূত হবেন। যাঁর কাছে থাকবেনা হিন্দু,মুসলিম, বৌদ্ধ ,খ্রিস্টান অথবা ইহুদি,ফিলিস্তিন এর চিরকালের বৈষম্য।যিনি ব্যবচ্ছেদ করতে বসবেননা মানবতা।আকাশের মত বিশাল মনের একজন দেবদূত আসবেন।আমাদের বাঁচাবেন।
হায় !আমিতো এখানেও ভুল করলাম। আকাশ সীমাহীন নয়তো। আকাশেরও সীমা আছে।ভুলেও কেও আর আকাশ কে একার ভেবোনা। বড় বিচ্ছিরিভাবে ধংস হয়ে যাবে।
আমরা তবে কার কাছে যাবো ?

ঈশ্বর ,
তুমি নিজেই বলে দাওনা তোমার লুকোনো কোথায় সেই স্বর্গ, যেথায় কোনো সীমা নেই ?তোমার দেবদূতের এখন আকাশ নিয়েও বাধা। তুমি কেবল পরকালের লোভ দেখাও কেন ঈশ্বর ?তুমি আমাদের একটা স্বর্গ ধরনীতে রচনা করে দেখাও।

বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০১৪

অপেক্ষা






শহরে নয় ,
শহরতলী ছাড়িয়ে,
হাত দুটো বাড়িয়ে,
স্তব্ধ সে দাঁড়িয়ে।
 
ছোট ছোট অশ্বত্থ দেয় উঁকিঝুকি ,
শ্যাওলা ক্লান্ত হেথা রোদ্দুর খুঁজি ,
কাঁকর বিছানো পথ লাল রঙে ছাওয়া ,
সবুজ নীলের মাঝে করে আসা যাওয়া।

সেইখানে দাঁড়িয়ে
হাত দুটো বাড়িয়ে
শহরে নয়তো সে ,
শহরতলী ছাড়িয়ে।


পথ তার একটুও ধুলোমাখা নয়।
ঝরাপাতা শুয়ে শুয়ে কি যে কথা কয়।
বেগুনি জারুল সেথা ছুঁয়েছে আকাশ,
স্তব্ধতা ভেঙ্গেছে দখিনা বাতাস।

শহরে নয়তো সে ,
শহরতলী ছাড়িয়ে
রয়েছে যে দাঁড়িয়ে,
হাত দুটো বাড়িয়ে
যেনো বা অপেক্ষা
আসবে কখন কবে 
রিনিঝিনি হাস্যে,
আলতা নুপুর পায়ে
ঝরাপাতা মাড়িয়ে।



বুধবার, ১৬ জুলাই, ২০১৪

এতো সুন্দর কেনো তুই









কি সুন্দর ফুলগুলো !


হুম, শাপলা।
খেতে মন্দ নয়।

এসব কি বলিস তুই ?উজবুক কোথাকার।
কতো মিষ্টি রংটা। কি সুন্দর গোলাপী !

তোর ঠোঁটের রঙের চেয়ে বেশি কি ?

তোর মাথাটা খারাপ।
দেখনা কি কোমল পাপড়িগুলো !
মনে হয় যেনো ছুঁয়ে থাকি।

বারণ করেছে কেউ ?
ছুঁয়ে থাকনা।
এনে দেবো ?
একবার কাছ থেকে দেখ
ফুলের রঙ  তোর রঙের কাছে কতোটা হারতে থাকে!

মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০১৪

জীবনের স্বাদ






আমার পরান যাহা চায়
তাহা তুমি নও ,
পরানের গহীন ভিতর
আছে অন্য কেউ।

আমি যারে চাই
তারেতো হয়না বোঝাতে
ভোরে ,দুপুরে অথবা মাঝরাতে।
সে আমায় আপনি বোঝে।

আমি যারে চাই
তারেতো পাইনা দেখিতে
ছুঁয়ে ,চুমিয়ে অথবা দৃষ্টি দিয়ে !
সে আমার হৃদয়ে আপনি রিনিঝিনি বাজে।

থাকা যায়
বেশ থাকা যায় ,
না ছুঁয়ে অথবা ছোঁয়ার বাহিরে ,
আমার পরান দিয়ে আমি জানি
জীবনের স্বাদ আছে হৃদয়ের গভীরে।

থাকা যায়
বেশ ভালো থাকা যায়
স্বপ্ন আর কল্পনার মাঝারে ,
আমার পরান দিয়ে আমি জানি
জীবনের স্পর্শ আছে স্পর্শের বাহিরে।


মঙ্গলবার, ৮ জুলাই, ২০১৪

রুমাল



আরেকটু থাকনা।
বুঝিনা আমার কাছে এলেই কেবল বাড়ির জিনিসপত্র দেখতে থাকিস।
আশ্চর্য ওটা রুমাল
ওটায় কি দেখছিস ?

তোর ঠোঁটের ওপর এই যে  শিশির জমা
মুছিস তো এই রুমালে ?
ওই হলো।
আর কিছু না বুঝলেও চলবে।

এতো তাড়া কিসের তোর ?
এসেই যাই যাই ?
কেন আসিস বলতো ?

গন্ধ নিতে আসি।
দেখতে নয়।
দেখে আশ মেটেনা।
চোখের জ্বালা বাড়ে।
যাই ,
নইলে লোভে পড়বো।
চোখ আমার আগেই গেছে।
শ্বাস গেলে আর বাঁচবোনারে।


মঙ্গলবার, ১ জুলাই, ২০১৪

মাটির কতো রং









মাটির রং টা কালো ছিলো ,
কুচকুচে কালো নয় ,
কেমন একটু বাদামী ও ছিলো মনে হয়।
কিন্তু আমিতো কালোই দেখেছিলাম।
আজ সবুজ লাগছে কেনো ?
মাটির কতো রং!!!!
এই রং টা এত ভালো কেনো ?

নিজের হাতে ঘর বানিয়ে
শুইয়ে দিলাম অন্ধকারে ,
কোত্থেকে তুই আলো  পেলি ?
বেরিয়ে এলি সবুজ হয়ে ?

মৃত্যু কি তবে শেষ কথা নয় ?
আমার পাখি হারায়নি ?
মাটির গভীরে পেয়েছে নতুন জীবন ?
তবে কি  জীবন আছে সবখানে ?
আমার চলার পথে ?
সবুজ ঘাসে ?
জীবন আছে ?
তবেকি আমার পাখি ঘাস হয়ে আছে ?