বৃহস্পতিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৫

নদী সাজে




নদীটা কেবলই অপেক্ষায় থাকে
একটা সোনালী বিকেলবেলার ,
কত তার আয়োজন
মাঝিদের করে বারণ ,
বলে :"ওরে ,এখন আসিস নে মোর জলে
দেবতা আমার ভাসবেন এই কোলে। "

সকালটা যেনো গড়ায়না আর বিকেলে।
একটু জল শুষে নিতে মাছরাঙ্গা টা
যেইনা ভেজায় ঠোঁট ওই কোমল নরম বুকে
নদী বলে :"ঢেউ তুলিসনে পাখি ,
ঢেউ তুলিসনে এই জলে ,
দেবতা বুঝি আসছেন এই কোলে। "

হঠাত বাতাস বৈরী হয়ে
ঝড় তুলে যায় ভীষণ রেগে
বড় কষ্টে নদী কাঁদে ,
বলে :"ওরে ঝড় তুলিসনে ,
ঢেউ তুলিসনে এই বুকে
যতন করে, আদর ভরে সাজাই আমি কাকে ?"

এমনি করেই ঢেউ এর থেকে
ঢেউ বাঁচিয়ে থেকে
আপন মনে সাজে নদী
মধুর স্বপন এঁকে

উষ্ণ ,প্রখর সূর্য কখন
ভিজবে এসে স্নানে
ঠিক তখনই বইবে জোয়ার
নদীর শান্ত প্রাণে।



বুধবার, ২২ এপ্রিল, ২০১৫

অশ্রু




একবার ভেবেছি জলটা থামিয়ে দিই ,
অমন অমূল্য রতন
নাই যাক ঝরে অবহেলায় ,অযত্নে ,
অথবা তাকে পাঠিয়ে দিই
সেই নীলাভ ধূসর গ্রন্থীতে
জমা থাক
সে জমা থাক
ভারী কোনো মেঘের মতন।
অতঃপর কেনো মনে হলো
বর্ষণ হউক ?
উথাল পাথাল সমুদ্র হউক ,
হউক জোয়ার ,
মিশে যাক হৃদয়ের ভাঁজে
চোখ হউক শুষ্ক মরুপ্রান্তর
আর
আমি তাতে দূর্লভ ক্যাকটাস হয়ে বাঁচি
সহস্র বছর।

শনিবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৫

আমি আরেকটা জীবন চাই










ঠিক তোমার কাছে গিয়ে বুঝলাম
আমার আরেকটা জীবন চাই
তোমার সাথে একরাত্তির
আমায় জানিয়ে দিয়ে গেলো
আমার লক্ষ রাত্তির চাই
তোমার চুলে একটু হাত
আমার হাজার ক্লান্ত দুপুর চাই
তোমার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়া সন্ধ্যেবেলা 
আর ওই আধো ভেজা চুম্বন
আমায় আবার আবার জানিয়ে দিয়ে গেলো
আমি আরেকটা জীবন চাই ,
আমি আরেকটা জীবন চাই।

জীবনের খোঁজ








পাখিদের জীবন দিতে যদি
হঠাত কোনো এক ঝড়ে
অনেক বাঁচার সাধ কে আঁকড়ে ধরে
মৃত্যুর শিশির স্বাদ নিতাম।
আমি জেনেই যেতাম
বোশেখের ঝড়ে ঝরে পড়ে আমাদের জীবন।

ফুল হয়ে গেলেও ভালই হতো
ভালবাসার রেশ জড়িয়ে
একটা ছোট মৃত্যু হতো
আমি জেনেই যেতাম
একরাত্রি জীবন আমার অথবা একটি সকাল।

করে দিতে একটা কোনো গাছ
ঠিক যেখানটাতেই দাঁড়িয়ে থাকা
সেখানটাতেই মরণ
সহবাসের মৃত্যু
প্রানের সখার সাথে ?

আকাশ কর'নি তুমি এমনকি নদী ও
তবেতো মেঘের সাথে ,জলের সাথে
কেবলই বেঁচে থাকা হতো।

মানুষ আমি
ঝড়ে অথবা এক রাত্তিরে
অথবা সহমরণের সুখ নেইতো
নেইতো আকাশ কিংবা  নদীর সঙ্গে আমৃত্যু বয়ে চলা ,
জীবন দিলেই যদি অমরত্বের খোঁজও দিয়ে দিতে।

বুধবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৫

আমি তোর্ উষ্ণতা চাই




আমি তোর্ উষ্ণতা চাই
অঝোরে ঘাম হতে চাই
কালো মেঘ দূর দেশে যা
রোদ্দুর আয় ছুঁয়ে যা।

আমি একটা জল পাখি হব
মাছরাঙ্গা নয়তো আলবাট্রস
জলের সাথে আকাশের
মিষ্টি বন্ধু করে দেবো।

আমি তোর্ উষ্ণতা পাই ,
রৌদ আজ এই ঘরটায়
আমি সত্যি পাখি হয়ে যাই
কষ্ট গুলো ভয়েতে পালায়।

শনিবার, ৪ এপ্রিল, ২০১৫

চোখের আলোয়










আকাশ ভেঙে চাঁদ নেমেছে
নাম হলো তার জোছনা 
মাটির কাছে জ্বলছে জোনাক
বইছে আলোর বন্যা।

রুপোয় রুপোয় হাত ছুঁয়েছে
গাছ পড়েছে গয়না ,
আলোয় ভরা সবখানেতে
আঁধার তবু যায়না।

নদীর জলে সাজ করছে
শামুক ,ঝিনুক,পান্না
মত্স্যনারী নাইতে এসে
দেখছে সুখে আয়না।

জোছনা আর জোনাক মিলে
আলোর মাঝে কন্যা
বললে হেসে ,চোখের আলোয়
একটু দেখা হোক না ?


শুক্রবার, ৩ এপ্রিল, ২০১৫

আমি আর ঘাসফড়িংটা



আমি একটা ঘাসফড়িং হতে চেয়েছিলাম।
খাঁচায় বাঁধা জীবন থেকে
ডানায় ডানায় উড়বো স্বাধীন
ফুলের থেকে ফুলের দেশে
হারিয়ে যাব ঠিকানাবিহীন।
আমি একটা সবুজ ঘাসফড়িং হতে চেয়েছিলাম। 
শ্যাওলা সবুজ পাতার কোলে
শিশির বিন্দু যেমন জ্বলে
সেই জলেতে মুখটা আমার
একটুখানি দেখবো বলে।
আমি একটা চঞ্চল ঘাসফড়িং হতে চেয়েছিলাম।
তাইতো দুহাত ছড়িয়ে দিয়ে
রঙিন ডানা পিঠে নিয়ে
দূর আকাশে হারিয়ে গিয়ে
মেঘের সাথে  গা ভাসিয়ে   
আমি বন্ধনহীন একটা সুন্দর ঘাসফড়িং হতে চেয়েছিলাম শুধু।
অথচ সে গাছের জীবন চেয়েছিলো
বলেছিলো ,
গাছ হয়ে যাও
পায়ের সাথে পা মিলিয়ে
অনন্তকাল পেরিয়ে গিয়ে
সুবাস নিয়ে ,সুবাস দিয়ে
খুব থাকা যায় ঠাঁয় দাঁড়িয়ে
ভারী অদ্ভুত
আমি ঠিকানা বিহীন হতে চেয়েছিলাম
আর ঘাসফড়িং টা একটা ঠিকানা চেয়েছিলো।
আমি মুক্ত হতে চেয়েছিলাম
আর সেই ফড়িং টা বন্ধন চেয়েছিলো।