বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৪

তুমি আর আমি

আমিতো আমার নিয়মেই আছি।
একটুও পাল্টাইনি তো।
তোমার এত ভালো লাগছে কেনো ?
কারণ আমি যে তোমার স্বপ্নের মতো।
আর আমার  এতো ভালো লাগছে কেনো ?
কারণ তুমিও যে ঠিক আমার স্বপ্নের মতো।

বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৪

শহর





ইট ,কাঠ ,সুরকির যান্ত্রিক এ শহরে
আকাশ'টা প্রতিদিন লুকোচ্ছে কোথারে ?

পাখিগুলো অস্থির খুঁজে চলে বৃক্ষ
হারিয়ে ছোট্ট নীড়  দুরু দুরু বক্ষ।

একটু সবুজ ছুঁতে প্রাণে ভারী ইচ্ছে
বিবর্ণ চারিধার; সবুজ হারাচ্ছে।

জল কোথা জল কোথা খুঁজি নদী সাগরে ,
ঝর্নার সন্ধানে চোখ যায় পাহাড়ে।

মেঘেদের কানাকানি পাহাড়ের মৃত্যু
আর যে হবেনা দেখা বৃষ্টির নৃত্য।

নিশ্বাসে বায়ূ নেই ,ধোঁয়া শুধু ধোঁয়া ,
বিশ্বাস কালো হয়ে খুন হয়ে যাওয়া।

যান্ত্রিক শহরের যন্ত্র জীবন
পালাচ্ছে প্রতিদিন ক্লান্ত এ মন।

শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৪

যাযাবর


“যে দৃষ্টির সঙ্গে মনের যোগাযোগ নেই সে তো দেখা নয়, তাকানো।”

বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৪

'চরিত্রহীন'

"যাহাকে ভালবাসি, সে যদি ভাল না বাসে, এমন কি ঘৃণাও করে, তাও বোধ করি সহ্য হয়, কিন্তু যাহার ভালবাসা পাইয়াছি বলিয়া বিশ্বাস করিয়াছি, সেইখানে ভুল ভাঙ্গিয়া যাওয়াটাই সবচেয়ে নিদারুণ। পূর্বেরটা ব্যথাই দেয়, কিন্তু শেষেরটা ব্যথাও দেয়, অপমানও করে।"
শ্রী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।

বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৪

সোনা বউ





টুকটুক লাল বউ
বসে জুড়ে পালকি
মিঠে মিঠে স্বপ্ন
রয় তার চোখে কি ?

ফুলখোঁপা কালো চুল
আছে বেলী হাসনা ,
সুবাসেতে ভরপুর
বলে দূর যাসনা।

হাতভরা চুড়ি তার
ঝনঝন বাজছে ,
ভালোবাসা ভালোবাসা
হৃদয়েতে নাচছে।

ভীরু ভীরু দুটি চোখ
কাজলের কন্যা ,
কখনো অশ্রু সেথা
কভূ হাসি বন্যা।

লালে লাল আলতা
পায়ে মল ঝমাঝম ,
হঠাত আকাশ জুড়ে
মেঘ কালো থমথম।

সোনা বউ ,সোনা বউ,
ডাকে তার বর'টি ,
একটুও ভয় নেই
আছি ধরে হাত'টি। 

মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৪

রাত্তির




পথ তার ছেয়ে আছে আমলকী জারুলে
গাছ যেনো কথা কয় ঝিঙেফুল পারুলে।
পাখিগুলো উড়ে উড়ে যায় কোথা খেয়ালে
ফিরে ফিরে ঘুরে ঘুরে আসে বেলা ফুরালে।

বধূ হেঁটে যায় দূরে পায়ে মল ঝমাঝম
কলসীর জল সাথে সুর তোলে সারাক্ষণ।
চুলে তার গন্ধের রাজা আছে লুকিয়ে
মৌমাছি মধু  যাচে যেন সেথা চুপিয়ে।

দূরে ওই আকাশটা ঘুমিয়েছে পাহাড়ে
সন্ধ্যের পিছু পিছু রাত নামে আহারে।
সাদা সাদা রূপো রূপো ঝরে পড়ে জোছনা
রাত্তির সেজে চলে নানা রঙে বর্ণা।

হাওয়া এসে ছুঁয়ে যায় থেকে থেকে শরীরে
মহুয়ার গন্ধ লুকোনো যে গভীরে।
সুখ সুখ ঘুম নামে দুচোখের আড়ালে
চাঁদখানা উঁকি দেয় মেঘখানা সরালে।









সোমবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৪

স্বপ্নকন্যা











মেয়েটির শাড়ী নীল
আকাশের সাথে দেখা।
চোখের কোণেতে সবুজ
বৃক্ষের ছবি আঁকা।

আলতাবরণ হাত
যেনো টকটকে জবা লাল।
গভীর তাহার চুলের ভিতর
আঁধার তুলেছে পাল।

আঙুলেতে স্বর্ণলতা
সূর্যের রং যাচে।
নখের ডগায় রুপোলী ইলিশ
মোহনার স্রোত খোঁজে।

গ্রীবায় তাহার শান্তির ছোঁয়া
ডাহুক জিরায় সেথা।
কমলালেবুর ঠোঁটের মায়ায়
সরিছে দুঃখ ব্যাথা।

অঙ্গে অঙ্গে জোনাকির আলো
গাঁথিছে আলোর মালা
দেখিতে দেখিতে বুঝিনা কখন
ফুরায় যে মোর বেলা।

রবিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৪

জলের মেয়ে ১০





অন্যরকম মেঘের গায়ে
অন্যরকম রঙে
আসলে তুমি ভালোবেসে
অন্যরকম ঢঙে।

সেই মেঘেতে জারুল রঙের
স্বপ্ন আছে মাখা ,
সেই স্বপনে দিন রাত্তির
তোমার চোখে আঁকা।

সমুদ্দুরের জলের থেকে
নয়তো সে মেঘ সৃষ্টি ,
সুখ গুড়গুড় শব্দ সেথা
নেইতো ব্যাথার বৃষ্টি।

পানার ফুলের বেগুনী রঙে
অন্যরকম সাজে ,
জলের মেয়ে সাজবে নাকি
ঢাকবে ও মুখ লাজে ?

তারার ফুল





ঝিলেতে জলের কণা চিকচিক করে
সাদা বক খোঁজে মাছ যেনো চুপিসারে।

পদ্মপাতার পরে জমেছে শিশির
কুয়াশার সাথে তার সন্ধি নিবিড়।

ফিঙেদের নাচানাচি নয়ন জুড়ায়
পাকা ধান নিয়ে বধূ ঢেঁকিতে মাড়ায়। 

ঝকঝকে সাদা রোদ রুপোলী আকাশ
গায়ে'তে  দিচ্ছে দোলা পূবের বাতাস।

মৌমাছি দলছুট মাঠের পরে
গাছি ভাই নিয়ে রস ফিরছে ঘরে।

ঝাপসা সন্ধ্যা এসে নামলো হঠাত
চুপিচুপি জানালায় জোছনার রাত।

ফুটেছে তারার ফুল আঁধার গাছে
মাটির বুকেতে তার সুবাস নেমেছে।


বুধবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৪

পাহলভী পাখির পাগল কথা ৭

প্রিয় রূপচাঁদা
অন্ধ হবার আগের গল্প,নগ্ন হবার পূর্বের সম্ভাবনা ।

রাধা’র শরীর জ্বলছেনা,চিতায় উঠানোর পরেও তার বুক থেকে নি:স্বরণ হচ্ছে বরফের সুবাতাস।নীত আগুনের কাছে এসে কৃষ্ণের বিনীত প্রশ্ন, কেন এই স্ব >অর্থ> পরতায় পষ্ণভূত একত্রিত! আগুনের সেকি গুণ প্রভু,স্বয়ং তাপ আর তীক্ষ্ণতার আধার হিসাবে আপনি কৃষ্ণবর্ণা,কলেবর থেকে উচ্চারিত ধ্বনি এই রাধা।ধারাকে উল্টে দিয়ে যিনি ফিরিয়ে নেন সকল চিৎশক্তির বিকিরণ। উৎসে ফিরে গেলে আলো, আমি অন্ধ হয়ে যাই।
দৃষ্টির বন্দনা তবে শুরু হোক এবার ।
সৃষ্টি থেকে হারিয়ে গিয়েছে স্রষ্টার সফেদ কবুতর। চিহ্নহীন গতি নিয়ে সর্পিল আলোয় এঁকে দিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির মানচিত্র। অরুপ ও রূপের বাইরে যদি কোন মানবমানবী দাঁড়ায়,তারা খুঁজে পাবে সেই পখ,পাথেও উভয় ঋতু।স্রাবে ও শ্রবণের টানে জেগে ওঠা সামুদ্রিক চর।
কে আছে ঐখানে! দিগন্ত না দিকশূন্য সবুজ শষ্যের পাহাড়! তার ওই  পাশে কুম্ভকর্ণের ফিসফিস।কাগজী পত্রের থেকে, বৃক্ষ থেকে ফলিত বর্ণমালা।তোমার আঙ্গুলের নিচে চেপে রাখা খবরের ইতিকথা।

কি আছে এইখানে?
দৃশ্যত যা কিছু উড়ন্ত  ছিলো বেলুনের মতো, ত্রিশঙ্কুর মতো বোধ ঝুলছিলো বেহাল চৌরাস্তায়,গন্তব্যের বিপরীতে হেঁটে  আসা নীল প্রজাপতিই অবশেষে প্রজাহীন রাত্রি যাপনের ইতিহাস গড়ে।
উভয় চক্রের বিপরীতে ছিলো একটা উপত্যকা;
যার অতল দিয়ে ধাবমান মহুয়ার রসায়ন;
মাতালের ঐতিহ্য,আর উলঙ্গ রাত্রির ছাদে হেঁটে বেড়ানো কয়েকটি গোল্ডফিস।
মাছগুলো দালির ক্যানভাসে মেটামরফসিস। উড়ন্ত বালিহাঁস। হঠাৎ আচমকা বাকসদৃশ তুলির জবান:
‘আসো, পান করি,ঘনিষ্ঠ স্বপ্নের থেকে বেছে নেই অমৃত জল। সারাবান তাহুরা। বুকের ভেতর থেকে চিরন্তনী ওম;
নখ থেকে নীল বিষ টেনে নিয়ে পান করে নীলকন্ঠ তোমার মানচিত্রহীন পথের দিকে দেবে উড়াল;
সেই মাছ স্রোতের বিপরীতে গতির বিপরীতে আচমকা ঢুকে গেল জালবিস্তৃত কূপে;
আমি সেই আতিথিয়েতার জন্যে দাঁড়িয়ে  আছি বিনীত। আমাকে গ্রহণ করো আর নিজস্ব গৃহে রাখা যতনের প্রসাদটুকু দিয়ে আপ্যায়িত ,,,’

এরপর আর মাছটাকে দেখা যায়নি মিঠাপানির সংসারে;
কেবল শীতের আকাশে একটা হলুদ পাখির ডাক শোনা যায় !

ইতি
তোমার পাখি

মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১৪

পাহলভী পাখির পাগল কথা ৬

প্রিয় রূপচাঁদা,
 
উর্দ্ধারোহনের উপলব্ধিতে আমি পৌঁছে গেলাম আজ।

পৃথিবী থেকে যখন আমার পদযুগল শুন্যে উঠে যাচ্ছিলো তখন আমার প্রিয়বন্ধুরা অর্থাৎ মৌমাছিকূল ভাবছিলো আমি বুঝি মধুর সন্ধানে যাচ্ছি! 

ওরা আমার পিছু নিলো।
 
পিপিলিকারা ভাবছিলো মর্ত্যের  আগুনে আমার আর  চলছেনা,

অতএব সূর্যের আত্মাতে আত্মাহুতি দিতে চলেছি আমি,
ওরা আমার পিছু নিল;
 
বৃক্ষরা ভাবছিলো উর্দ্ধাগমনের ফলে সমগ্র আকাশ আমার দখলে চলে যাবে;বটবৃক্ষগুলো তাই মাটি থেকে নিজেদের শেকড়চ্যুত করে ডালপালা সমেত আমার পথ আড়াল করতে চাইলো;


বৃহৎ প্রতিভারা ভাবলো আমি যদি ঈশ্বরের থেকে দু’য়েকটা কালিদাস বধ করা বর পেয়ে যাই; যদি আমি উজ্জল দুপুরে প্রসব করি সন্ধ্যাকাব্য নামক কোন রাজপুত্তুরের; প্রতিভারা আমার জামাকাপড় টেনে খুলে ফেললো;
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান যে কিনা স্বাধীনতার পয়গম্বর,আমার উর্ধারহণ দেখে ভেবে নিলো আমি বুঝি হতে যাচ্ছি রাষ্ট্রকে তুচ্ছ করা পৃথিবীর প্রথম নিজের অধীন নাগরিক;

 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমার চক্রাবৃত্তের উর্ধারহণ দেখে  ভেবে নিলো যেন আমিই প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হ’তে যাচ্ছি এই ব্রহ্মাণ্ডের;

 
সকলের ধারনাকৃত লক্ষ্যবস্তু অতিক্রম করে আমি যে কেবল তোমার বর্ধিত নখের নেইলপলিশ হ’তে চেয়েছি অনুমান দ্বারা কেহই সেসব বুঝতে পারেনি!
আমার লক্ষ্যবস্তু যে আমার সামনে বসে শব্দব্রহ্মপাঠ করছে,
আমি তার কাছে গেলেই যে সকল জায়গায় যাওয়া হয় আমার ।-প্রাণীকূলের এই বিষয় অনুধাবনে পৃথিবীর মতো প্রদক্ষিণ করতে হবে তোমার ক্রিয়াকলাপ।
জীবজগতের অগোচরে তুমি যে ব্রহ্মাণ্ডের কেন্দ্র হয়ে উঠছো এ সংবাদ আজ আমারই গর্ভে জন্ম নিলো কেবল।

কতিপয় বর্ণমালা ব্যাতিত সবার কাছেই  এযে অধরা সংবাদ।


প্রিয় মাছ ,
কোনো শিল্পের সমূখে তুমি দাঁড়িয়না স্থির। 
আমি উন্মাদ হয়ে যাবো।

ইতি তোমার পাখি