শনিবার, ২৪ মে, ২০১৪

তোর্ সবকিছু কেবল আমার


দেখ দেখ ফাজলামির  একটা সীমা থাকা দরকার ,
উজবুক ,অসভ্য কোথাকার,এই কি দেখছিস ?
মেয়ে দেখিসনি আর ?
পুতুল ,তুই হাসছিস কেনো ?
মারবো এক চড়।
কেমন ক্যাবলার মতোন দেখছে তোকে। অদ্ভুত।
তুই আবার হাসছিস ?
তুই কি রে ?
এক্ষুনি পড়বি রিক্সা থেকে।
উফ ,এই মেয়েটাকে আর কতো সামলাবো আমি ?

এই ,এই তুই আবার আমার কোমর জড়িয়ে ধরলি ?
ছাড় ,ছাড় বলছি।
লাফ দেবো একেবারে।

দে না ,লাফিয়ে দেখ।
পারিস কিনা ?
হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়বেন তিনি
আর আমি একটু জড়িয়ে ধরলেই দোষ।

পুতুল ,তোকে নিয়ে আর রিক্সায় ঘুরতে বেরুবোনা আমি
মাথায় রক্ত চেপে যায়।
হাসছিস কেনো ?
দেখ,মেজাজ টা বিগড়ে আছে এমনিতেই।
আর বিরক্ত করবিনা আমাকে।

আচ্ছা ?তুই এমন কেনোরে ?
তোর্ জন্যে তবে রাস্তায় কারফিউ জারী হওয়া উচিত।
প্রতিবার কারুর না কারুর সাথে মারামারি করছিস ?
একটা কাজ কর।
একটা সুন্দর বাক্স বানিয়ে নে।
ওখানে পুতুল কে বন্দী করে রেখে দে।

খুব একটা ভুল বলিসনি কিন্তু।
আমি তোকে খুন ও করে ফেলতে পারি।
তোর্ সবকিছু কেবল আমার।
কেবল আমারই  দেখবার পুতুল।

বৃহস্পতিবার, ২২ মে, ২০১৪

তুই কবে বুঝবি ?



খেপেছিস ?
কি হলো ?
চুপ কেনো ?
খেপে আছিস ?

প্লিস ,নট  ফীল লাইক টকিং উইথ ইউ রাইট নাউ।
ওরে খেপেছেতো। ইংরেজিতে কথা বলছেতো।
কি হয়েছে বলবিতো?

তুইকি কিছুই বুঝিসনা পুতুল ?
কখন থেকে এইখানটায় দাঁড়িয়ে আছি।

কি করবো বলতো ?
সবকটা রাস্তা জ্যাম।
আজি বোধ হয় সবাই একসাথে কাজে নেমেছে।
লক্ষী সোনা আমার।
রাগ করেনা।
মাত্র তো দশ টা মিনিট।
কতো শত কাজ সেরে তবে আসতে হয় তোর্ কাছে।
কতো মিথ্যের ফুলঝুরি সাজিয়ে,
তবে শেষমেষ তোর্ কাছে আসা।
তুই কবে বুঝবি বলতো ?
বুদ্ধু একটা।

আমারতো দেরী হয়না পুতুল।
আমারতো কক্ষনো দেরী হয়না তোর্ কাছে আসতে।
আমিতো সব কাজ ফেলে ছুঁড়ে, পাগলের মতো ছুটে আসি।
পুতুল ,
তুই কবে বুঝবি ?
তোর্ দশ মিনিট
আমার দশ বছর বাঁচার হিসেব।

ছুঁয়ে দে আমায়


মাথায় কি গোবর ঠাসা আছে ?
এমন করে রাস্তা পার হয় কেও ?
হাত টা ধর ভালো করে।

আশ্চর্য !তুই এমন করিস যেন আমার বয়েস হয়নি মোটেও ?
ছোট্ট টি আছি এখনো ?
রাস্তা টাও পেরুতে পারবোনা ?

বুঝবিনা তুই আসলে।

উফ বারেবারে এক কথা।
বুঝবিনা পুতুল ,তুই বুঝবিনা।

আরে আরে ধীরে সুস্থে খা।
এত্ত তাড়া কিসের তোর্ ?
দিলিতো সব গুবলেট করে ?
পুরো মুখে লাগিয়েছিস।
চাওমিন টাও ঠিকঠাক খেতে শিখিসনি !
আয় মুছে দিই।

ন্যাকা ,আমি যেন বাচ্চাটি।
মুছতেও  জানিনা।
আশ্চর্য সমস্ত কথাবার্তা।
পাগল একটা।

বুঝবিনা পুতুল
তুই সত্যিই বুঝবিনা।
তুই বড্ড বোকা রে।

এই দেখতো ,চোখটা কেমন জ্বালা করছে হঠাত।
কিছু পড়ল বুঝি ?

কই দেখি ,দেখি .
আরেবাবা দেখতে দে আমায়।
পিপড়ে পড়লে খবর হয়ে যাবে কিন্তু।


হলো তোর্ দেখা ?

না ,না এখনো হয়নি।

এই জীবনে হবেওনা।

কি ?কিছু বললি আমায় ?

হুম ,ভুল বললাম কিছু ?
তোর্ পুতুল রাস্তা পার হতে জানেনা ,
তোর্  পুতুল খেয়ে মুখ মুছতে জানেনা ,
তোর্  পুতুল চোখে পিপড়ে পড়লে সরাতে জানেনা ,
তুই ছুঁয়ে না দিলে তোর্ পুতুল কিচ্ছু করতে জানেনা।

বন্দী স্বপ্ন



কি হয়েছিলো ?
বললাম তো।
কেনো এমন করেছিলে ?
জানিনা
কতদিন ?
দিন নয়তো ,বছর। দশ বছর। আজ মিলিয়ে দশ বছর পাঁচ দিন হলো।
আশ্চর্য !কেনো একটাবার বললেনা ?
ভয়ে।
কিসের ভয় ?আমিকি বাঘ নাকি ভালুক ?
হা হা হা।তার চেয়ে বেশি ।
কি বেশি ?
সুন্দর। খুব বেশি। খুব বেশি। এই পাগলি বুঝি কখনো আমার হতে পারে ?
বছরের পর বছর কেবল এই ভাবতে ,ভাবতেই।
কত শত কৃষ্ণচুড়ার রঙিন পথ একা,বড় একা পেরিয়ে গিয়েছি।
কত শ্রাবন মিশে গেছে চোখের শ্রাবন ধারায়।
কেবল ওই চারতলা বাড়িটার বারান্দা খানা।
কখন  দাঁড়াবে রাজকুমারী,
কখন বেরুবে ওই লাল গেট পেরিয়ে,
কত শত বার ওই বোকা দারওয়ান টার কাছে জানতে চাওয়া :"এই বাড়িটা খালি আছে ?"

এত কিছু ?

হুম। এত কিছু।

তবে কেনো এলে ?
এখনতো বড় অসময় হয়ে গেলো।

পারলামনা আর।
দম বন্ধ হয়ে আসছিলো।
আমি আর পারলামনা পুতুল।
আমি বাঁচতে চাই পুতুল।
আমায় তুই বাঁচা।
গল্পটা পাল্টে দে আমার।
পুতুল আমার জীবনের গল্পটা পাল্টে দে তুই।

এতো অসময়ে ?
এতোটা সময় চুরি করে ফেললি ?
আমিতো সত্যি কারোর পুতুল হতে চেয়েছিলাম।
অমন যত্নে সুন্দর সাজিয়ে রাখা একটা পুতুল।
বন্দী স্বপ্ন ছাড়লি যদি তবে এত দেরী কেনো করলিরে ?
কেন বুঝিসনি ?

কি করে বুঝবো ?এই পাগলি কখনো আমার পুতুল হয়ে যেতে পারে ?





 

সোমবার, ১৯ মে, ২০১৪

তোর চলে যাওয়া



আমার সমুখ থেকে তুই  চলে যাস।
ধীরে মিলিয়ে যাস দূরে, বহুদূরে।
আমি কেমন অপলক চেয়ে থাকি।
আমি ভুলে যাই একটা ব্যাস্ততম রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি।
যে কোনো মুহুর্তে ঘটে যেতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা।
আমি সব ভুলে যাই।
তোর চলে যাওয়া দেখতে দেখতে
আমি কেমন সব ভুলে যাই।
আমার তখন কেবল মনে পড়ে
তোকে আমার ঠিকঠাক দেখা হয়নি।
আমার মনে পড়ে
অনেক কথা সাজিয়ে রেখেছিলাম 
বলা হয়নি।
বলা হয়নি :"তোর মুখের মতন আরেক খানা মুখ কেন খুঁজে পাইনাকো ?"
আরো  কি অদ্ভুত জানিসতো ?
তুই চলে যাস যখন একেবারে চোখের বাইরে,
ঠিক ,
ঠিক তখনই মনে পড়ে
বলা হয়নি,
বলা হয়নি .............
"পুতুল, আমি তোকে সবচাইতে ,সবচাইতে ,সবচাইতে ,সবচাইতে, সবচাইতে  বেশি ভালবাসি।"

বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০১৪

আর বলবোনা ভালবাসি







কি  ভেবেছো ?

বারেবারে একাই ভাঙ্গবো ?
একাই নুয়ে যেতে থাকবো ঝড়্লাগা দুর্বল ইউক্যালিপ্টাস এর মতন ?
একাই ন্যুজ হবো  ডানা ভাঙা পাখির মতন ?
একাই জ্বলতে জ্বলতে আলোক হারাবে সকল আমার ?
গ্রহণ লাগা চাঁদের মতন একাই হারাতে থাকবো ?
নির্বিকার তোমাকে শোনাতেই থাকবো "ভালবাসি "?
আর দিনের পর দিন ,বছরের পর বছর
তোমার  অল্প বিস্তর যত্নে এই ক্যাকটাসের বুকে জন্ম নেবে সোনালী ফুল ?

বড় ভুল ভাবছো যে।
আমার প্রেম,আমার প্রতিক্ষা ,আমার পাগলামি,আমার পুরো আমিকে
এত অযত্নে ,অবহেলায়  ধীরে বুঝতে শিখিয়েছো
সকলের জন্যে প্রতিক্ষা নয়।
নয় প্রেম সবার জন্যে।
জানো ?
আমি তোমায় ছাড়া থাকতে শিখে ফেলেছি।
আর বলবোনা "ভালবাসি"।


সোমবার, ১২ মে, ২০১৪

আমি বলবোই ভালবাসি




অভিমানের তীব্রতা ঠিক কতোটা ?
ভালবাসার চেয়ে বেশি ?
ভালবাসার তীব্রতা তবে কেমন ?
অভিমান কে হারানোর চেয়ে কম ?

ভালবাসা যদি বৃষ্টি হয় ,
অভিমান তবে ঝড়।
ভালবাসার শক্ত দেয়াল
ধসে পড়ে ঝরঝর।


আমি তেমন মানুষ নইকো।
হব অভিমানের দাসী।
যতই দূরে সরাও
আমি বলবো ভালবাসি।

আমার ঘর যদি হয় ঘড়ি
তবে আমরা দুজন কাঁটা।
ঘন্টার সাথে মিনিটের বল
হয়কি দুরে থাকা ?
যতই যাওনা দুরে
ফিরে আসবেই তুমি জানি।
ভালবাসা আর অভিমান মিলে
প্রেম হয়ে যাবে মানি।

আমি নইকো তেমন মানুষ
হবো অভিমানের দাসী।
তুমি নাইবা বুঝলে আমায়
আমি বলবোই ভালবাসি।
 



 

স্বপ্ন



একটা কোথাও টান পড়েছে
বুঝতে কি পাও ?
ছিড়ছে সুতো ধীরে ধীরে,
দেখতে কি পাও ?

ইট কাঠেরই ঘরটা ছিলো
সন্দেহ তো নেই।
কেমন করে তাসের হলো
মাত্র নিমেষেই ?

ভুলের মাঝে আজো কেনো
করছি বসবাস
কালো মেঘে ঢাকছি কেনো
আমার নীল আকাশ ?

ঘুরছি কেনো গোলকধাঁধায়
আজো জানিনা।
আমার তবে স্বপ্ন দেখার
শেষ কি হবেনা ?


রবিবার, ১১ মে, ২০১৪

ইচ্ছেঘুড়ি ৩




ঘুড়ি আমার ভীষণ প্রিয়
নয় ওড়াবার সাধে।
ছোট্ট এক ইচ্ছেখেলা ,
খেলছি ঘুড়ির সাথে।

সেই সে খেলা আজো খেলি।
লিখি ঘুড়ির পাতায়।
এক বিকেলে ঘুড়ি যদি ,
তোমার দেখা পায়।

লাল,নীল ওই ঘুড়ির পাতায়
অজস্রবার লেখা.......
রঙিন হয়ে আকাশ তোমার
সামলে নেবো একা।

তোমার আকাশ কতো দূরে ?
কতো বল রঙিন ?
আর কতকাল উড়লে হব
তোমার মাঝে বিলীন ?

আজ হাতে মোর একটি ঘুড়ি।
দৃষ্টি তোমার পানে।
আকাশ কে আর দেবনাতো
আনবো তোমায় টেনে।

আর কতকাল ছবি হয়ে
থাকবে তুমি মা 'গো ?
এমন করে ডাকি তবু
নীরব কেনো থাকো ?

শনিবার, ১০ মে, ২০১৪

বকুল







অনেক ভালোবাসলে মানুষ নাকি পাখি হয়ে যায়।
তুই উড়বি আমার সাথে ?

চোখের ভিতর মন ঢুকলে মানুষ নাকি প্রজাপতি হয়।
তুই ঘুরবি রঙিন হয়ে ?

হাতের পরে হাত রাখলে মানুষ নাকি নাটাই খুঁজে পায়।
তুই ঘুড়ি হবি আমার ?

নিশ্বাসে বিশ্বাস জমা হলে মানুষ নাকি ফুল হয়।
তুই হবি আমার বকুল ?

পায়ের সাথে পা মেলালে মানুষ নাকি গাছ হয়ে যায়।
তুইকি আমার গায়ের কাছে একটা বিশাল বৃক্ষ হবি ?
আমিও বকুল ,তুইও বকুল,
পাশাপাশি গন্ধে আকুল,
গায়ের সাথে গা মিলিয়ে,
পায়ের সাথে পা মিলিয়ে,
শেকড় যাবে অনেক দূরে,
থাকবি  সারাজীবন ধরে। 

বৃহস্পতিবার, ৮ মে, ২০১৪

দোষ দিওনা








যান্ত্রিক এই শহরে এখনো ঠিকই
গাছে গাছে আগুন ধরে।

পাগল করা সবুজের ভিড়ে
কৃষ্ণচুড়ার অদ্ভুত লাল রঙ
এখনো হৃদয় কাঁপায়।
আমার চলার পথে এখনো শুয়ে থাকে মিষ্টি বকুল।
আমি চিত্কার করে বলি , "দেখো ,দেখো ,তোমার বকুল "
আমি জানতেই পাইনি কবে কখন
তোমার দুচোখ শান্তি খুঁজে চলেছে
অট্টালিকায়।
ওই বকুলের মালা যদি হয় আজ অন্য কারো ,
দোষ দিওনা আমায়।

কেও একজন তোমার অপেক্ষায় থাকে।
কবে কখন তোমার দুচোখ বলবে :"এতো সুন্দর কেনো তুমি?
যেন বৃষ্টির মতন
যেন গোধুলির মতন
যেন চাঁপার বরণ
যেন কামিনীর গন্ধ
যেন বাঘিনীর বন্যতা
যেন জোয়ারের উচ্ছ্বাস "
ওই বুনো আমায় যদি শান্ত করে কেও
দোষ দিওনা আমায়।

কেও একজন তোমার অপেক্ষায় থাকে।
ভালোবেসে দুয়ার খুলবে বলে।
সারাবেলার অজস্র সঞ্চিত শব্দ
হৃত্পিণ্ড ভারী করে তোলে ,
ঠোঁটের আলিঙ্গনে ওই শব্দ যদি খুঁজে পায় আর কোনো পথ
দোষ দিওনা। 

দোষ দিওনা আমায়।
যদি হারাও কোনোদিন।
ভালবাসা দিতে গিয়ে হেরেছে কখনো কেও ?

প্রতিদিন ,প্রতিরাত।
এ এক অদ্ভুত হেরে যাওয়া।
খুব বেশি ভালবাসতে চেয়ে হেরে যাওয়া।

কামিনীর পাগল পাগল সুবাস আমিতো কেবল তোমার জন্যেই রেখেছিলাম।
কৃষ্ণচুড়ার রঙিন পথে আমিতো কেবল তোমার হাত ধরেই হাঁট তে চেয়েছিলাম।






মঙ্গলবার, ৬ মে, ২০১৪

নীল অপরাজিতা





কচি কুঁড়ির মিষ্টি সবুজ রঙ দেখেছো ?
অন্যরকম।
তোমায় আমার অমন ভালো লাগে।

প্রবারণার জোসনা দেখেছো ?
প্রতিরাতের চাঁদে অমন জোসনা হয়না কিন্তু।
কি অপরূপ রুপোলি আকাশ তখন।
দেখেছো ?
তোমায় আমার অমন ভালো লাগে।

কাঠফাটা রোদ্দুরে, শান্ত দীঘির জলে হঠাত ঝাঁপিয়ে পড়া ?
দেখেছো ?
দেখেছো কি সেই দীঘিস্নান?
তোমায় অমন প্রশান্তির মতন দেখতে।
জানো ?
তোমায় আমার অমন ভালো লাগে।

নীল অপরাজিতা।
তুচ্ছ একটি ফুল।
হউক।
তবুতো স্পর্শের ভেতরে।
আমি তোমার মাঝে অপরাজিতার নীল দেখতে চাই।
আর কোনো ভালো লাগা নয়।
সত্যি বলছি ------
আমি কেবলমাত্র ওই তুচ্ছ অপরাজিতার অদ্ভুত নীল দেখতে চাই
অথচ 
তুমি বারেবারে কেবলই দূর আকাশের নীল হয়ে যাও।
কখনো কাঁদাও ।
কখনো কেমন অস্থির করে তোলো।
খুব কাছে থেকেও স্পর্শের বাইরে থাকা
কেমন যেনো নীল কষ্ট।
অপরাজিতা ,
তুমি কি নীল কষ্ট বোঝ ?






রবিবার, ৪ মে, ২০১৪

ইচ্ছেঘুড়ি ২







আমি চেয়েছিলাম আমাকে দেখার পর তোমার চোখ দুটো নষ্ট হয়ে যাক।

আমি চেয়েছিলাম আমি ,কেবল আমি একাই তোমার কাছে
পৃথিবীর সবচেয়ে বিশাল সৌন্দর্যের একটাই উপমা হয়ে থাকি।

আমি চেয়েছিলাম আমিই কেবল তোমার বাগানের একমাত্র সুন্দর আমাজন লিলি হই।
অন্য কোনো ফুল যেনো ওই সৌন্দর্যের সীমা পরিসীমা ও স্পর্শ করতে না পারে।

আমি চেয়েছিলাম একটামাত্র সবুজ টিয়াপাখি তোমার হৃদয় পিঞ্জরে বন্দী থাকুক।
বাকি সমস্ত পাখিরা কেবল ওই পিঞ্জরের বাইরে ডানা ঝাপটে মরুক।

আমি তোমার কাছে খুব দুর্লভ রংধনু হতে চেয়েছিলাম।
যেনো আমাকে দেখার পর আর কোনো রং তোমার ভালো না লাগে ,
সে হউক গোধুলী অথবা ভোরের আকাশ।
ওই রংধনু দেখার পর যদি তুমি দুচোখ হারাতে বেশ হতো।

আসলে আমি চেয়েছিলাম আমি ছাড়া
পৃথিবীর আর কোনো সৌন্দর্যের সন্ধান তুমি না পাও।

তাই তোমাকে দেখার পর আমার কেবল একটাই সাধ জেগেছিলো -----তুমি অন্ধ হয়ে যাও।

আমার শরীরের প্রতিটি রক্তবিন্দু তে ঈর্ষার ঝড় বয়ে যায় ,
যখন তোমার চোখের মনির উথাল পাথাল দেখি,
অন্য কোনো সৌন্দর্যের কামনায়।

আচ্ছা ,অভিশাপে তো জানি অনেক কিছু হয়।
ভালোবেসে চাইলে হয়না ?
তোমার চোখের এতো নাচন
তবু আমার কেনো তোমায় ছেড়ে
কোত্থাও যাওয়া হয়না ?

রুদ্মিলার চিঠি







বাড়িতে খুব তাড়াহুড়ো চলছে। মা খুব ছুটোছুটি করছে।গতরাতেই সব গোছানো প্রায় শেষ। তবু মা'র চিন্তার কোনো শেষ নেই। লাশ আসবে। আর মাত্র চারঘন্টা বাকি।মা খুব ব্যাস্ত হয়ে আছে।কষ্ট পাচ্ছে কিনা তাও বুঝতে পারছিনা।

আমি ভীষণ কাঁদছি। এই নিয়ে বকাও খেলাম কয়েকবার মা'র কাছে--"রুদ্মিলা ,এমন করছো কেনো ?এই ভাগ্য কজনের হয় ?এতগুলো দিন তো থাকার কথা ছিলোনা। এখন আর লাশ রাখা যাচ্ছেনা। এতোদিন লাশ রাখার নিয়ম নেই।কবর দিয়ে দিতে হয়। কপাল ভালো তোমার সামনে মৃত্যু টা হয়নি। হলেতো এই একটা বছর ও  পেতেনা। সাথে সাথেই কবর দিয়ে দিতে হতো। "

আমি মা এর সামনে থেকে সরে গেলাম।আমার কেমন অদ্ভুত কষ্ট হচ্ছে। বমি পেলে যেমন হয় তেমন একটা শারীরিক অনুভূতি।আশ্চর্য !আজকের দিনটা কতো সেকেন্ড এ মিনিট ?এতো দ্রুত সময় চলে যাচ্ছে কেনো ?আরেকটু পর থেকে আর মা কে দেখবোনা ?আর কোনোদিন না ?মা ওই লাশ টার ভিতর ঢুকে যাবে ?

সন্ধ্যা নামতে নামতে একটা অদ্ভুত ঘটনা ঘটলো।খবর এলো, কি এক আইনী জটিলতায় আজ মায়ের লাশ
আসছেনা।আগামীকাল আসবে।অপেক্ষায় কিছুটা ক্লান্ত কিন্তু চোখদুটো একটু চিকচিক করছে মায়ের।মা বললো :"যা, আরেকটা দিন পেয়ে গেলি তুই।কাঁদছিলি খুব বেশি। তাই সৃষ্টিকর্তা কিছু একটা করলেন। "

এক বছর মায়ের আত্মার সাথে থাকতে থাকতে আমি ভুলেই গিয়েছিলাম একদিন মায়ের আত্মাটার ও চলে যাবার সময় আসবে।ওই  দূর থেকে আসা লাশের ভিতর চুপটি করে ঢুকে পড়বে মা।আর ফিরে আসবেনা। সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে পাওয়া  এক বছর সময় শেষ হয়ে এসেছে। 

মা কে নিয়ে দেখা নানারকম স্বপ্নের ভিতর এই স্বপ্ন টা আমার খুব প্রিয়।এটা স্বপ্ন নাকি কল্পনা আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারিনা এখনো। আমি প্রায়ই স্বপ্ন আর কল্পনার মাঝে ফারাক করতে পারিনা। খুব সম্ভবত এটা আমার কল্পনা।কিন্তু কেমন যেনো স্বপ্নের মতো অনুভব হয়।আমার মন হয়তো চায় এই স্বপ্নটা বারবার দেখতে।

মা মারা গেছে অনেক দূরে। মা এর লাশ না ফেরা পর্যন্ত সৃষ্টিকর্তা আমাকে একটা বছর সময় দিয়েছেন মায়ের আত্মার সাথে কাটানোর। এবং লাশ চলে এলেই মা চলে যাবে। আমি স্বপ্নের ভিতর কোনো না কোনো ভাবে প্রতিবারই মা কে যেতে দিইনা।আমার মন,  যেভাবেই হউক একটা কোনো বাধার সৃষ্টি করে দেয়। মা আর যেতে পারেনা। মায়ের লাশ আর দেখতে হয়না। আমি মায়ের বুকে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়ি।

মা কে নিয়ে অন্য সব স্বপ্ন আমার অনেকক্ষণ দেখতে ইচ্ছে করে শুধু এই স্বপ্ন টা ছাড়া। আমি যে কোনো ভাবে স্বপ্ন টাকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করি, যেনো আর রাত টা  না কাটে।যেনো আর ভোর না হয়।যেনো কোনভাবেই লাশ না আসে। যেনো কোনভাবেই লাশের ভিতর মা হারিয়ে না যায়। 

মা ,
তোমার আত্মা নিয়ে আজো বেঁচে আছি, স্বপ্ন আর কল্পনার মাঝামাঝি।প্রতিরাতে একদিন করে বাড়িয়ে নিচ্ছি তোমার আয়ু।যখন পাশে ছিলে তখনো প্রতিটি দিন তোমার ছিলো। আজো প্রত্যেকটা দিন তোমারই আছে।তোমার ভালবাসা কে হারাতে চেয়েছিলাম আমার ভালবাসা দিয়ে। পারলামনা।
তুমি ভালো থেকো মা।

শনিবার, ৩ মে, ২০১৪

Feelings




আমার খুব প্রিয় বইটা।মন খারাপ হলেই পড়ি। রবি ঠাকুরের "রাজা।"আশ্চর্য ,আজ আমার বইটা পড়তে ভালো লাগছেনা। আমি খুব কষ্ট করে কেবল একপাতা পড়তে পারলাম।প্রথম শুরুর কটা লাইন আমার মুখস্থ। এতবার পড়েছি এই জীবনে।যখনি মনে হয় কোথাও কোনো আলো নেই তখনি এই বইটা নিয়ে বসি।বারবার ওই শুরুর লাইন গুলো পড়ি। ........
"আলো কই ?এ ঘরে কি একদিন ও আলো জ্বলবেনা ?"
"রানীমা ,তোমার ঘরে ঘরেই তো আলো জ্বলছে -তার থেকে সরে আসবার জন্যে কি একটা ঘরেও অন্ধকার রাখবেনা?"
এই লাইন দুটো পড়লেই মনে হয় আলো কে ঠিকঠাক চেনার জন্যে অন্ধকার ছাড়া গতি নেই।

কিন্তু আজ আমার এই বইটাও ভালো লাগছেনা।আমি পণ করেছি আমি সুস্থির থাকবো। আমি পারছিনা।আমি সকাল থেকে অনেকের সাথে ফোন এ কথা বলার  চেষ্টা করেছি। সবচেয়ে বেশি চেষ্টা করেছি শিশু দের সাথে কথা বলে সময় টা সুন্দর করতে। এই কাজটাও আমার খুব পছন্দের। কিন্তু আশ্চর্য ,আমি পারছিনা। আমার সবচেয়ে ভালো লাগার কাজ টাও ভালো লাগছেনা।

আমার রাঁধতে খুব ভালো লাগে। নানান কিছু নিয়ে বসলাম। দারুন কিছু রাঁধবো আজকে। আমার এই ক্লান্তিকর সময় কেটে যাবে।আমি কাজটা করলাম। খুব বিরক্তির সাথে। আমি পারছিনা।আমার কিছুই ভালো লাগছেনা।

এরই মাঝে ঝুম বৃষ্টি নামলো হঠাত। ছুটে গেলাম বারান্দায়। আহা ,আমার গাছ গুলো। ভিজে কি অপূর্ব লাগছে দেখতে। ছুঁতে প্রাণ চাইছেনা কেনো ?গানের তালিকায় সবকটা ভালোলাগার গান পরপর সাজানো যেনো কখনো আগাতে বা পেছাতে না হয়।আমার সারাক্ষণের উদ্বেগ কিছুতেই যেনো না হারায় ওই সংগ্রহ। ওগুলো যে আমার বৃষ্টির সময়ের ও  গান আবার ভীষণ তপ্ত রৌদ্রের অসময়ের ও গান। ওগুলো যে আমার সকল সময়- অসময়ের গান।এই অপরূপ বৃষ্টিতেও গান গুলো অসহ্য লাগছে।

আমার কিছু ভালো লাগছেনা।আমি বুঝতে পারছি আমার আর কিছু ভালো লাগবেনা।আমার সময় চুরি হয়ে গেছে। আমি বুঝতে পারিনি।আমি চাইলেই তোমার নম্বর টাতে ডায়াল করতে পারি। কিন্তু আমার একটা বার জিত তে ইচ্ছে করছে। আমিতো প্রতিবার হার মেনে তোমার কাছে যাই।আমার এবার একটু অহংকারী হতে ইচ্ছে করছে। আমার প্রাণ চাইছে তুমি একবার আমাকে ডাকো।একবার তুমিকি পারোনা আমায় জিতিয়ে দিতে?


বৃহস্পতিবার, ১ মে, ২০১৪

রামধনু







ক্ষনিকের তরে দেখা দাও তুমি
ফুরায়না মোর আশ।
কেও দেখে হেথা সাতরং
আর আমি দেখি উচ্ছাস।

নদী ,ফুল ,পাখি ,প্রকৃতির মাঝে,
বিরাজ কর হে তুমি।
আমি ভাবি হায় ,
ছোঁয়া নাহি যায় ,
সেইখানে আছো তুমি।

দুরের আকাশে ,অর্ধবৃত্তে ,
সেতু কর নির্মাণ।
সবে বলে তারে রামধনু।
আমি বলি ভগবান।

  
রামের ধনুর সকল শক্তি
জড়াইয়া এক করি।
অসুন্দরের বাসনা ভঙ্গ
আমরা করিতে পারি।


লাল ,বেগুনী,আসমানী
আর কতটা আবীর চাই ,
কতটা আবীরে জড়ালে তোরা
রঙিন হবি সবাই ?