ফোন টা বেজেই যাচ্ছে।রুদ্মিলা ধরছেনা।
আর কি ?
জানতে চাইবে :" কিরে রুদ্মি ?বাসায় ফিরেছিস ?ভালো আছিস?মাইগ্রেন পেইন কমেছে ? সোনামনি গুলো ভালো আছে?"
প্রতিদিন এক কথা। কেন যে বোঝেনা ?এককথা প্রতিদিন ভালো লাগেনা।অফিসের জরুরী ফোনে টাতে কথা হচ্ছে। এর মাঝে কল ওয়েটিং।
ওয়েটিং এই থাকুক। এখন ফোন টা ধরা মানেই একঘন্টার গল্প।
আজ শরীরটাও তেমন ভালো নেই। কেমন যেনো জ্বর জ্বর। রাতে একটা অনুষ্ঠান আছে।শরীরটা ভালো থাকলেই হয়।জ্বর এলে বিরাট ঝামেলায় পড়তে হবে। অনেক কাজ বাকী।
যা ভাবা হয়েছে তাই হলো।সন্ধ্যার দিকে হু হু কোরে এলো জ্বর।কোনোরকমে ফোন টা টেনে নেয় রুদ্মিলা:"খুব কষ্ট হচ্ছে, পারলে চলে এসো। "
ঐ একবারই বললে হবে। হাজির হয়ে যাবেতো। কোনো চিন্তা নেই। যত দূরেই থাকুক ,যেখানেই থাকুক আসবে।রুদ্মিলা জানে।
রুদ্মিলা এমনই জানতো মা কে খুব বেশি না ডাকলেও চলে আসে। মা দের পিঠে ডানা থাকে।ডানায় ভর করে চলে আসে । মা দের দশটা হাত ও থাকে। সব কাজ করে দিতে পারে এক নিমেষে।হাজার টা বকা দিলেও আবার ফোন করে।একটু অভিমান করে।ওটা পাত্তা না দিলেও হয়।অসুবিধা হয়না।মনে রাখেনা কিছু। বিরাট একটা আদর আদর বুক আছেতো। ওখানে আবার টেনে নেয়।চাই কি না চাই কিছুতে কিছু এসে যায়না।
কি অদ্ভুত ভাবনা ছিলো রুদ্মিলার।সে জানতো মায়েরা পুতুল হয়। কখনো রাগ করে কোথাও চলে যায়না।আর বাচ্চার অসুখ করলেতো পুতুল মা দের কোত্থাও যেতে নেই। বারণ আছে।
রুদ্মিলা কেবল জানতোনা পুতুলেরও অসুখ করে। পুতুল ও রাগ করে।সে জানতোনা পুতুলের মত ওই মুখ অনেক দিন না দেখেও ঘুমানো যায়।সে জানতোনা পুতুল টার সাথে খেলা ধুলা না করলেও দিনের পর দিন কাটানো যায়।
রুদ্মিলার বিশ্বাস ছিলো ,পুতুলটার অনেক অসুখ করলেও ,অনেক কষ্ট হলেও ওর অসুখে সে আসবেই মিষ্টি হেসে।আর ওই হাসিতেই অসুখ ওর একদম ভালো হয়ে যাবে।
রুদ্মিলা এখন শুধু ঘুড়ির পাতায় চিঠি লেখে। ............
পুতুল মা ,
আমি কথা দিচ্ছি একবার তুমি এসে দেখো। আমি আর কোনদিন তোমার কল ওয়েটিং এ রাখবোনা।
একটা চুমুর জন্য তোমায় আর কোনোদিন বলতে হবেনা।
একবারের জন্যেও জড়িয়ে ধরতে চাইতে হবেনা।
আমি তোমাকে আর কোনদিন একবিন্দু বকবনা।তোমার সব কথা শুনবো।শুধু একবার ডাক দিয়ে দেখো আমি কতটা তৃষ্ণার্ত হয়ে আছি।আমি সব ফোন কেটে দিয়ে শুধু তোমার কথা শুনবো।আর কোনদিন তোমার কল ওয়েটিং এ রাখবোনা।তুমি শুধু একবার এসে দেখ আমার কাছে।
very nice
উত্তরমুছুন