রবিবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০১৪

সেই বাড়ীটা



আমার খুব বড় কোনো দীঘি ছিলোনা ,
ছোট্ট ছোট্ট গুনতে পারা
একটা দুটো ডোবা ছিলো।
কোনোটা বেশ পানায় ঢাকা
কোনোটাতে ডিঙ্গি বাধা।
মাঝেমাঝে পানায় কেমন খুব বেগুনি ফুল ফুটতো
দেখতে পেলেই তুলতে যাবো
প্রাণ  চাইতো ,মন চাইতো।
ডিঙ্গিটাতে  একটু কেবল বসতে  নিতাম
মা বকবে এই ভয়েতে ফিরেই যেতাম।

আমার তেমন ছোট্ট ছোট্ট গাছ ছিলোনা ,
একটা কেবল  ছায়ায় ভরা বৃক্ষ ছিলো।
তার ফুলেতে এতই  সুবাস ,
শরীর কাঁপায় ,ভীষণ কাঁপায়।
নামটি যে  তার বকুল ছিলো।

একলা আকাশ ছিলোনাতো কোনোকালেই  ,
বরং একটা মস্ত বড় আকাশ ছিলো।
সেই  আকাশে সারা দুপুর উড়তো ঘুড়ি
ঘুড়িগুলো সবার ছিলো।
সবার ছিলো।

খেজুর রসে কে যে প্রথম চুমুক দেবে
কে শুনেছে এই  নিয়ে সব ঝগড়াঝাটি ?
কেউ শোনেনি ,কেউ শোনেনি।
বৃষ্টি এলেই ভিজতে হবে
এটুক জানি।
এটুক জানি।

সন্ধ্যে বেলা বাবার অমন রক্তচক্ষু
তারই ভয়ে উথাল পাথাল শান্ত বক্ষ।
সেই ভয়েতেই লেখাপড়ায় সমস্ত ভুল।
তবু কোনো পরীক্ষাতেই হয়নি ভুল।

হাতে গোনা মাত্রকটা  রং দেখেছি।
তার মাঝারে অনেক বেশী
সবুজ আর নীল চিনেছি।
অনেক রঙে রঙিন কোনো বাক্স ছিলোনা
কিনতু আমার চতুর্দিকেই রঙিন  ছিলো।


কবরখানা পেরিয়ে  যেতে একটু কেবল চোখ বুজেছি
এর বেশি কি কোনকালেই ভয় পেয়েছি?
পাইনি জানো ?

আমার একটা বাড়ী ছিলো।
সেই বাড়ীতে তোমার মতন মাত্রকটা লোক ছিলোনা।
সেই বাড়ীটা ছোট্ট বাড়ী ,
মানুষ ছিলো  ভুরি ভুরি।

সেই বাড়ীতে একটা ভীষণ ছিলো বুড়ি ।
এত্তগুলো নাতিপুতি
কাকে রেখে বকবে কাকে ?
তাই সে কেবল আদর  দিতো।
আদর দিতো ,আদর দিতো।
সেই  আদরে কি জানি কি জাদু ছিলো !!!!!
আমরা সবাই এক বিছানায় ঘুমিয়ে যেতাম।

সেই বাড়ীতে আমার ছোট্টবেলা ছিলো।

সেই বাড়ীটা এখন জানো মস্ত বড়।
সেই বাড়ীটা এখন শুধু একলা থাকে।
সেই বাড়ীতে আমার ছোট্টবেলা ছিলো।
সেই বাড়ীটা ভীষনভাবে আমায় ডাকে।
সেই বাড়ীটা আমায় কেবল পিছু ডাকে।



I WONDER

আজকাল আর তোমাকে খুব একটা কমেন্টস লেখা হয়না। কি লিখবো ?তুমি পুরো মানুষটাকেই তো  খুব ভালোমতোন দেখি এখন।তোমার সব খুঁত গুলো জানা হয়ে গেছে , যা কিছু জানতেই পাইনি ফেইসবুক  এ আপলোড করা ছবিগুলো মুগ্ধ হয়ে দেখতে দেখতে।  জানি আগে তীর্থের কাকের মতন তোমার একেকটা ছবির জন্যে কি ভীষণ অপেক্ষায় থাকতাম। কখন ছবি ভেসে উঠবে পর্দায়। সবার আগে আমি লিখবো। কত যে শব্দের ভান্ডার দুহাতে। লিখেও শেষ করা যায়না।তোমার বন্ধু গুলো ব্যাপক ঈর্ষান্নিত হতো তোমার ছবির  এত এত বিশ্লেষণ পড়ে।ধীরে ধীরে কবে কখন ওরা তোমার জীবন থেকে হারিয়ে গেছে ঈর্ষা আর অবহেলায় তুমি টেরই পেলেনা।
হায়রে বিশ্লেষণ ,হায়রে কাব্যকথা। এখনতো তুমি পুরোটাই আমার কাছে একটা  চুলচেরা বিশ্লেষণ।

ইনবক্স এ প্রতিদিন আলাদা করে শুধু আমার জন্যে ছবি চাইতাম। বলতাম :"ফেইসবুক  এ যাকিছু আপলোড কর সবতো পাবলিক আর ফ্রেন্ডস দের জন্যে। আমাকে আলাদা ভাবতে পারোনা ?"
ভালবাসার কি যে জোর ওই চাহিদায়। ইনবক্স বেলুন হোলে ফেটেই মরতো বুঝি। তুমিও ভীষণ গদগদ।উচ্ছাসে, আনন্দে ছবির পর ছবি ইনবক্স করেই যাচ্ছো।
কি সুখ সুখ। কি সুখ সুখ। ঘাড় ধরে যাচ্ছে। পড়ালেখা মাথায় উঠেছে। কাজকর্ম শিকেয় ঝুলেছে। তবু ফেইসবুক। তবু ফেইসবুক।
তোমার একেকটা ছবি ডাউনলোড কোরে সুপার ডুপার এডিটিং।পরবর্তীতে ট্যাগিং। আহা !!!!তোমার খুশি দেখে কে?
তোমার বন্ধুরাতো ঈর্ষায় যা ছিল বাকি সব শেষ।
ক্ষ্যাপা আনন্দে মেতে তুমি উল্লাসে ফেটে পড়ছো। স্ট্যাটাস লিখে ফেলছো  কত কি?লেখা থেকে সমানে গদ্য আর  পদ্য বেরুচ্ছে। তুমি ভাবছো কেও বোঝেনা। মানুষ যেন বড়ই বোকা।
আমিও জানি। মরি মরি !!!ওই সুন্দরীর সব লেখাতো আমারই  জন্যে।আজ বিকেলেইতো  বললো, কি লিখবে আমায় নিয়ে।
বন্ধুরা তাড়া  দিচ্ছে দেখতে। ধুর..................কি আর দেখবো ?
নতুন কিচ্ছু নেইতো। আমি জানি।আমি বেশ ভালো করে জানি। 

এক হারানোর শুরু তোমার এখান থেকেই ...............
তুমি জানোনা কবে কখন হাতের মুঠোয় চলে এসেছো।
তুমি জানোনা হাতের মুঠোয় প্রেম থাকেনা।
শুরু হলো আমার। ......................
আস্তে আস্তে লাইক দেয়া। লাইক তো একটা দেয়াই যায়। পথ চলতে চলতে একটু ফিরে তাকানো । LOOK এর মতোন একটা LIKE দেয়াই যায়।

তবুও কোথাও একটু কিছু অজানা ছিলো। সেই অজানায় হাত বাড়িয়ে ১৪ তারিখ।
এখন তোমায় জানি।  পুরোপুরি জানি।বাড়ি ফিরে প্রতিদিনের ঘ্যানঘ্যানানী ।
কি অসহ্য। কি অসহ্য।
আচ্ছা বলতো ?
তুমি কি ওই ছবির মতোন এতো মিষ্টি ছিলে কখনো ?
I WONDER...............I REALLY WONDER................

বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০১৪

আজ জ্যোৎস্না রাতে সবাই গেছে বনে

প্রায়ই মনে হয় একটা অদ্ভুত কথা। চোখের জলের যদি  রং থাকতো তবে দারুন হতো।কার চোখের জল সত্য আর কারটা  মিথ্যে বুঝে নিতে পারতাম সহজে ।বুঝে নিতাম কোথায় কোন্ মানুষের চোখের জলে  কত ব্যাথা ,কত ব্যাকুলতা। মনের ভেতর ঢুকে ঘুরে বেরিয়ে আসার যেমন কিছু উপায় নেই ঠিক তেমনি চোখের জল গড়াতে দেখলেই আমাদের ব্যাথিত হতে হবে,ভাবতে হবে মানুষটা সত্যিই  ভীষণ ভাবছেতো আমার জন্যে।আবেগের একটা অদ্ভুত ব্যবহার।
চোখের জল অনেক ব্যাথার উপশমকারী বটে কিন্তু এই চোখের জলের মূল্য শুধুমাত্র নিজের  ছাড়া আর কারোর কাছে খুব একটা থাকেকি ?

জানিনা।

এই নিয়ে  আমার অনেক অনেক প্রশ্ন ছিল যখন  খুব ভালো করে রবি ঠাকুর কে  জানতে চেষ্টা করা শুরু করেছিলাম। তাঁকে  জানা খুব সহজ নয়। অত ক্ষমতা  আমার নেই।

শুধু তাঁর একটা গানের গল্প ভীষণ টানে আমায় এখনো।

তিনি  পূরী  থেকে ফিরছিলেন ,তাঁর ছোট  ছেলে শমীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষকৃত্য সেরে। কলেরা  হয়েছিলো শমীন্দ্রনাথের। সে যুগেও চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি তাঁরা। তবু শেষরক্ষা হয়নি।

সেই ব্যাথাময় ফিরে আসা------ পূরী থেকে শান্তিনিকেতন। বাবার হাতে পুত্রের শেষ কৃত্য সম্পাদন শেষে। কতটা কান্না আর অশ্রুজলের। সেই আবেগের কি কোনো ভাষা হয়?
জলে ভরা হৃদয় নিয়ে ট্রেনের জানলার পাশের আসন  টিতে  বসে ফিরছিলেন কবি।
আকাশ ভরা জ্যোৎস্না। আলোতো  নয় যেন ভাসিয়ে নিয়ে যাবে দূর থেকে দূরে।
ওই আলোর অপার্থিব সৌন্দর্য কবির চোখের জলকে রূপান্তর করে ফেলে হঠাৎ । কবির হৃদয় নিংড়ে ঠিক ওই জ্যোৎস্নার জোয়ারের মতনই বেরিয়ে আসে  গান........................আজ  জ্যোৎস্না রাতে সবাই গেছে বনে। ................
আমরা সবাই গানটিকে প্রেমের গান বলেই জানি। কতো প্রেমিকের না বলা কথা বলা হয়ে  গেছে ওই গানে।
কি অনন্য। কি অসাধারন।
মনের দূর্বার আবেগের কি অদ্ভুত ব্যবহার !!!!!!
জলোচ্ছাসের মত আসতে চাওয়া চোখের জলের কি অসাধারণ পরিসমাপ্তি।
কোন্ টা ভালো বলতে পারো ?
অমূল্য তোমার চোখের জলের মাটিতে গড়িয়ে পড়া ?নাকি একটা সুন্দর সৃষ্টি ???
কোনটা ভালো ?

বুধবার, ২২ জানুয়ারী, ২০১৪

স্বপ্নজুয়াড়ী


দখিন খোলা জানলা থেকে মৃদুমন্দ বাতাস হয়ো।
এত কাছে  নাইবা এলে।
তুমি আমার ভীষণ  চাওয়ার প্রবারণার জোৎস্না হয়ো।  
প্রতিরাতের  চাঁদে কি আর অমন ভালো জোৎস্না  নামে?

বৃষ্টি আমার চাইনা জানো ?
একটুখানি শিশির হয়ো ?
সেই শিশিরের গন্ধ  নেবো। 

আটপৌরে ধূসর আমার শাড়ীর  ভাঁজে  নাইবা এলে
ন্যাপথলিনের গন্ধে ভরা  বেনারশীর  ভাঁজে এসো
কি ক্ষতি হয়?
প্রাণ চাইলে হঠাৎ হঠাৎ একটু নাহয় গন্ধ নেবো।
ভাদ্র এলে পরম মায়ায় একটু নাহয় রোদ ছোঁয়াবো ?
খুব কি ক্ষতি?

তুমি আমার হঠাৎ দেখা মিষ্টি কোনো স্বপ্ন হয়ো ?
সেই স্বপনে হাসবো আমি যেমন হাসে ছোট্ট শিশু ঘুমের ঘোরে ?

দমকা হাওয়া  হও  যদিও মন্দ কিছু হয়না জানো;
হঠাৎ কোনো কালবোশেখি ঝড়ের মতন উড়িয়ে দেবে?

তুমি আমার একটা কোনো বৃক্ষ হবে ?
ছায়া আমার লাগেবেনাতো।
আমায় কেবল গন্ধ দেবে ?
অনেক রাতে বৃক্ষ যেমন গন্ধ বিলোয় ,ঠিক তেমনি গন্ধ দেবে।
পারবে বল?
রক্ত রসের গন্ধে তোমায় চাইনা আমি, চাইনা   প্রিয়। 



মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১৪

মায়া

সব ভালবাসাই পরিমিতির মধ্যে থাকা দরকার। আগল খুলে কখনো ভালবাসতে নেই। মানুষ বড়ই রহস্যময় জীব। রহস্য ভালবাসে  কেবল।সবকিছুতেই।  মানুষের কাছে খোলা  বই হয়েছো তো  হেরেছো । বই সে বারংবার পড়বে ঠিকই কিন্তু তোমাকে পড়বেনা। 
কাওকে দেখলেই যে  কারো এত ভালো লাগতে পারে,সমস্ত সত্তা হাওয়া  লাগা সজনে ফুলের ডালের  মত দুলে উঠতে পারে ,এই অনুভব বড়ই রহস্যময়।এই আসে এই চলে যায়। 
কেও সঙ্গে থাকলে ,কাছে থাকলে ,তার হাত ধরে একবারের জন্য আকাশভরা আলোয় সর্ষেফুলের মাঠ পেরোতে পারলে আর কখনো কোনো অসুস্থতা পীড়িত করবেনা ----- রহস্যময় অনুভব বটে। 
কিন্তু মানুষ ভাবতে ভালবাসে। এভাবেই ভাবতে ভালবাসে। অনেক বড় ব্যাথা  পেয়েও কেন যেন মানুষ একই ভুল বারবার করে। 
মানুষ বোঝেনা ওই দারুন মায়াবী হলদে ক্ষেত টা  পেরিয়ে গেলেই সব রহস্যের সমাপ্তি।
তাই খুব তাড়াহুড়া  না করে যত ধীরে মাঠটা পেরুনোর কারুকাজ করা যায় ততই ভালবাসার জয়।

সোমবার, ২০ জানুয়ারী, ২০১৪

Comfort Zone


কেনো জানিনা সবসময়ই মনে হয়,যে কোনো মানুষ তার নিজস্ব উন্নতির একটা চুড়ান্ত মাত্রায় পৌঁছুতে পারে যদি তাকে তার "Comfort Zone" থেকে বারবার বের করে দেয়া যায়।যতক্ষণ আমি আরামে থাকবো,আমার অবস্থান নিয়ে ভীষণ বিগলিত থাকবো,আমি কোনোদিনই আর নতুন কোনো আবিষ্কার বা উন্নয়নমূলক কিছু করার পরিকল্পনা করবোনা।


যেমন আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ..............অসহনীয় অত্যাচারে নিপীড়িত হতে হতে আমার দেশের শান্ত,তথাকথিত দুর্বল মানুষগুলো একসময় সবল হয়ে ওঠে,অস্ত্র হাতে তুলে নেয়।যুদ্ধে নামে আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা।এবং অবশেষে বিজয়॥
এভাবেই বুঝি কিছু অর্জন হয়।আমি আমার সন্তানকে একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ঐ "লক্ষণরেখার" ভেতরে রাখবো।আমি চাই এরপর সে বেরিয়ে যাক।না বেরুলে আমিই বের করে দেবো।তাহলেই আমার সন্তান খুব স্বাভাবিক ভাবেই নির্ভরশীল হবে।আশ্রয়স্থল তৈরী করবে।এবং নিজেকে আর অন্যকেও "Comfort Zone" তৈরী করে দেবার উপায় আবিষ্কার করে নেবে।
আমাদের দেশের হর্তাকর্তাগুলোকেও যদি ঐ "Comfort Zone" থেকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়া যেত,তাহলে বোধ হয় একটা কিছু হতো ।
অভ্যাসের বদ্ধ চিলেকুঠুরী থেকে এভাবেই বেরিয়ে আসতো সবুজ॥॥॥॥
 

বারো রকমের মানুষ

এক মানুষের কত রূপ!!!অনেক বছর আগে একটা নাটক দেখেছিলাম,'বারো রকমের মানুষ'।তখন নাটকটার ঠিক মর্মার্থ ধরতে পারিনি।
এখন শুধু মনে হয় বারো রকমের নয়,বারো কোটি রকমের মানুষ!!!!!!!!!!
আচ্ছা রঙতো বদলায় গিরগিটি;মানুষতো মানুষ।সৃষ্টির নাকি সেরা জীব!!!মানুষ তবে কেনো রঙ বদলায়?গিরগিটি রঙ বদলায় সময় আর প্রতিরক্ষার প্রয়োজনে।মানুষ ও কি তবে তাই?তবে কেনো শুধু একাই গিরগিটির দুর্নাম হবে?গিরগিটির নামের পাশে মানুষ শব্দটিও লেখা হোক॥॥
এতক্ষণ লেখার পর হঠাৎ মনে হলো লেখাটাকে পাল্টে দিই।
মানুষ পাল্টাক॥॥॥
মানুষ পাল্টাক সময়ের প্রয়োজনে।তবে বিচ্ছিরিভাবে নয় সুন্দরভাবে।কাউকে কষ্ট দেবার জন্যে নয়।বরং সুন্দর কিছু সৃষ্টির জন্যে।মানুষ পাল্টাক॥॥॥

REST IN PEACE KHALED KHAN.........................


প্রায়ই বারান্দা থেকে দেখি।লোকটা ড্রাইভার।প্রাইভেট কার চালায়।এত যত্ন নিয়ে গাড়ীটা মোছে।ধোয়।পরিষ্কার করে।ওর নিজের গাড়ী নয়।কিন্ত্ত সুন্দর একটা ভালোবাসার সম্পর্ক ওদের।ওর কাজে একটু ফাঁকি ও দিতেই পারে।কেউ বুঝবেনা।কিছু যায় আসেওনা।কিন্ত্ত সে কাজটা করে অদ্ভুত মমতায়।একেই বোধ হয় বলে 'Performing from the core of heart' .
আমার এইরকম মানুষগুলোকে খুব ভালো লাগে।ওদের সবকটা কাজের মাঝেই অদ্ভুত একটা perfection আনার প্রচেষ্টা।
আরো একজনকে দেখেছি।আমাদের make up artist ।খুব মজার।দারুন সাজায়।ওর কাছে make up নেবার জন্যে আমরা প্রায় সবাই ভীষণ আগ্রহী থাকি।কিন্ত্ত খুব মজার ব্যাপার হল ও চাইলেই একটু হেলাফেলা করে কাজটা করতে পারে।কিন্ত্ত ও করেনা।ও যখন সাজায় মনের মাধুরী দিয়ে সাজায়।যেকোনো মুখশ্রীকে সুন্দর করে তোলার প্রানান্তকর প্রচেষ্টা।
আচ্ছা?এগুলোইকি কাজের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ?
আমার খুব শিখতে ইচ্ছে করে ওদের কাছ থেকে।এই ছোটখাটো মানুষগুলোর কাছ থেকে।ওদের প্রাপ্তির তেমন কিছু নেই তবু কি অদ্ভুত একটা স্বভাব।
Perfection....Perfection....Perfection....
দারুন না?????????
আমি আজ এখানে কোনো বিশাল ব্যক্তিত্যের কথা না লিখেই শেষ করতে চেয়েছিলাম। কারণ উনারাতো perfect বলেই বিশাল।
কাল চলে গেলেন আমার চিরকালের Magician খালেদ খান(উনার নামের পাশে কোন বিশেষণের প্রয়োজন আছে কি?)একজন বিরাট perfectionist....সেই ছোটবেলা থেকে যার অভিনয় দেখে বুঝতে পারিনি উনি কি আমারি কেউ না কোনো চরিত্র!!!!!
সব মৃত্যুই কষ্টের।কিন্তু এগুলো মৃত্যু নয়,একজন Perfect Magician এর হঠাৎ উধাও হয়ে যাওয়া॥॥॥

দীর্ঘশ্বাস

তোমাকেতো কখনো কিছু দিতে পারিনি,তবু তুমি মাথার ওপর থেকে ঐ আশ্রয়ের ঠিকানাটুকু সরিয়ে নাওনি কেনো?
আজীবন তোমাকে কষ্ট দিয়েছি,তোমাকে আশ্রয় করে আমার আশ্রয়স্থল পাকাপোক্ত করেছি।তবু তুমি কেনো স্নেহের ছায়া বিছিয়ে রেখেছো?তুমি কেনো এত ধৈর্যশীলা ছিলে মা?তুমি কেনো বারেবারে আমায় ভুল করার সুযোগ দিয়েছো স্নেহের আড়ালে?একটিবার তুমি প্রতিবাদ করে চিৎকার করোনি কেনো?কেনো বলোনি: "আমারোতো সহ্যের সীমা আছে!!!!!!!!!!!!"মানুষ যে বড় নিষ্ঠুর প্রানী।মানুষকে যে চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দিতে হয় সবকিছু!!!!
ও দেশ আমার,তোমাকে মানুষ 'মা' ডাকে কেনো?কষ্ট দেবার জন্যে? তোমার কাছ থেকে সব শুষে নিয়ে তোমাকে ছিবড়ে করে ফিরিয়ে দেবার জন্যে?
তুমি মা হয়োনা।তুমি জেগে ওঠো।তুমি ভূমিকম্প হও।তুমি প্রলয়ন্করী ঘূর্ণীঝড় হও।তুমি অস্থির,অসহ্য হয়ে ওঠো।তুমি আর তোমার বুকে আমাদের আশ্রয় দিয়োনা।তুমি অন্যকিছু হও।তুমি মমতাময়ী 'মা' হয়োনা।তাহলে তুমি বাঁচবে।
হে ধরণী,তুমি আর দ্বিধা হয়োনা।আর আশ্রয় দিয়োনা।এবার তুমি উগরে ফেলো।

মানুষের দীর্ঘনিঃশ্বাস কে কখনো সংগী করতে নেই।দীর্ঘশ্বাস খুব অজান্তেই অভিশাপ হয়ে জীবনে ফিরে আসে।১৬ কোটি মানুষের দীর্ঘশ্বাস অভিশাপ হয়ে ফিরে আসবেই॥॥॥
আসতেই হবে॥॥॥

বিজয়


  1. বিজয়ের আনন্দ কি ওরা এখনো বোঝেনা।প্রায়ই বিজয়ের উল্লাসে দিন কাটেতো ওদের।যা চায় সবইতো পেয়ে যায়।আমরা আজকালকার মা-বাবা রা সন্তানদের তো সব আগল খুলে দিতে চাই,যতটা সামর্থ আছে সব সন্তানকেই দেবো।ওদেরতো 'এসো নিজে করি' type কোন দুশ্চিন্তা নেই।তাই ওরা বিজয় বোঝে কিন্ত্ত এর পেছনের কাহিনী নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নয়।চিন্তিত নাহোক ,আমার শুধু মনে হয় ওদের একটু লাল-সবুজ জামা পরাই।বলি:'পতাকা গায়ে দিয়েছো সোনা,অনুভব কর।"
    একজোড়া বেলুন হাতে দিয়ে বলি:"ওড়াও।অনুভব কর।"
    এভাবেই ফেব্রুয়ারীতে কালো,বৈশাখে সাদা-লাল,বর্ষায় নীল-----একদিন ঠিক বুঝে নেবে এই আনন্দ,এইতো বিজয়।
    আর…………………….
    দেশের বিজয়ের সুখানুভূতিতো আমারো নেই।যুদ্ধতো দেখিনি।শুধু পড়েছি।এখন প্রতিদিনের খবরে যুদ্ধ দেখতে দেখতে বুঝি এর ভয়াবহতা।কিন্ত্ত বিজয় ঠিক এখোনো বুঝিনা ভালোমতন।এখনোতো কারো না কারোর গোলামী করেই যাচ্ছি॥॥॥॥॥
    শুধু অনেক দূরের গ্রামের দেশে,সবুজ প্রান্তরে,প্রানখোলা হাওয়া নিতে দাঁড়ালেই কেবল মনে হয়-----এই কি বিজয়???এই কি স্বাধীন দেশ আমার???ওই ১৯৭১ না এলে এভাবে তাহলে নিঃশ্বাস নিতে পারতামনা???
    আমার কাছে এইই বিজয়।ওই সবুজ মাঠটাই পতাকা।

    থাকুকনা বিজয় আমার সন্তানদের কাছে তেমনি।ওরা না যাক এদেশ ছেড়ে।গেলেও ফিরে আসুক আবার।এখন দেশের একেকদিনের একেক পরিস্থিতি আমার সোনার বাংলার সোনার সন্তানদের দ্বিধায় ফেলে দিতে পারে।কিন্ত্ত ওরা হারিয়ে গেলে এ দেশ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে???আমার সন্তান যত ঝড় আসুক আমার দেশেই থাকুক।অন্তত আমার টানে।আমাকে ভালোবাসুক।তাহলে দেশকেও ভালোবাসবে।

মানুষের রূপ


মানুষ জাতটা ভারী অদ্ভুত।একটা সময় ছিল পরিবারের মানুষগুলোকে দেখে দেখে বড় হয়েছি।বাবা-মা-ভাই-বোন-চাচা-মামা-ফুপু-খালা।একেকজন একেকরকম।একদম নিজ পরিবারের সীমানার ভেতর আমরা ভাইবোনগুলোও অদ্ভুত অন্যরকম যদিও আমরা একই মাতৃগর্ভ থেকে বেরিয়েছি।
মানুষের রূপ------------
কারোর সাথে খুব ভালো ব্যবহার করছিতো সে ভেবে নিচ্ছে-এখানে আমার বুঝি কিছু স্বার্থ আছে,আবার একটু কঠিন ব্যবহার করেছিতো ওটা আমার Attitude.
কখনো ইচ্ছে করছে কিছু কিছু মানুষকে ধুয়ে মুছে জীবন থেকে erase করে দিই।পারছিনা।কেউ খুব ভালোবাসছে তার ভালোবাসা অসহনীয় লাগছে,আবার কেউ অবহেলা করছে,করেই যাচ্ছে ,তাকে ভালো লাগছে বেশী ।ভুল মানুষের কাছে চলে যাচ্ছে চিঠি, আর ফিরে আসছেনা।ভুল দরজায় কড়া নেড়ে যাচ্ছি বারেবার।বুঝতে পারছি।তবু ভুলের কাছেই আত্মসমর্পণ।এতশত ভুলের মাঝে বেরিয়ে আসছে মানুষের বিচিত্র রূপ।ওই বিচিত্র রূপের ভিতর বদ রূপটা কেনো এত বেশী!!!!!!!!!
আমার দেয়ালে অনেকদিন ধরে ঝুলছে একটি কাঠের জাপানী মুখোশ।
এক অতি বদ দৈত্যের মুখ,সোনালী রঙে উজ্জ্বল।
দরদ নিয়ে আমি দেখি।
কপালের শিরা কেমন ফুলে উঠেছে।
বুঝি.....
বদ হওয়া কি কষ্টকর॥॥॥
ভালো হওয়াটাই মানুষের স্বাভাবিক বৃত্তি।
তবুও মানুষ ঐ অস্বাভাবিক পথে হাঁটে কেনো ?নিষিদ্ধ পথে কি অনেক আনন্দ??????.......CONFUSED......

রবিবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০১৪

The Magic Mirror


যে কোনো মানুষের কাছে যদি জানতে চাওয়া হয় তার জীবনে সবচেয়ে প্রিয় কে?যার সন্তান আছে সে তার সন্তানদের কথা বলে।কেউ স্বামীর কথা বলে,অনেকেই বাবার কথা বলে,প্রায় সবাই মা'য়ের কথা বলে।
এই নিয়ে ভেবেছি অনেকদিন।একসময় মনে হতে থাকলো এই পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষ নিজেকেই সবচেয়ে বেশী ভালোবাসে।মানুষ মাত্রই স্বার্থপর।সে নিজের চেয়ে বেশী কাউকেই ভালোবাসেনা।
এবং............
মানুষের সবচেয়ে বড় পছন্দের বস্তু 'আয়না'।
একটা মানুষ সে দেখতে কুৎসিত হলেও আয়নায় নিজেকে দেখবেই।দেখে হয়তো একটু কষ্ট পাবে তবু শেষ পর্যন্ত নিজেকে ভালোবাসবেই।আর অপরূপ দেখতে হলেতো কথাই নেই।দিনশেষে মানুষ সত্যিই একা,ভীষণভাবে একা,একান্তভাবে সুখী অথবা দুঃখী,নিজের মতন,স্বার্থপর॥॥॥
এবং .......
মানুষের একমাত্র সংগী একটি ছোট্ট অথবা বড় আয়না॥॥॥
The Magic Mirror.................
...

শনিবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০১৪

The Living Legend

প্রায়ই Star Sports এ শচীনের শেষ ম্যাচটা দেখি আর ওর শেষ কথাগুলো শুনি।সম্পূর্ণ সফল একজন মানুষ।খুব ভালো লাগে দেখতে।জীবিত ইতিহাস ক'জন মানুষ হতে পারে?কবিগুরু রবীন্দ্রণাথ ও এই স্বাদ পেয়ে গেছেন।পাননি অনেকেই যেমন নজরুল,জীবনানন্দ দাশ।অবর্ননীয় কষ্টের জীবন ভ্যান গগের।
শচীনের ইতিহাস এখনই লেখা হয়ে গেছে ভারতের শিশুদের পাঠ্যসূচীতে।একটা মানুষের এই জীবনে আর কিইবা চাওয়ার থাকতে পারে?খুব কাছ থেকে দেখা শচীনের প্রাপ্তি আর বইয়ে পড়া জীবনানন্দের কষ্টের মৃত্যু,দুটো ভিন্ন মাত্রার জীবন দেখার পর কেবল মনে হয় কোনটা ঠিক?কোনটা স্রষ্টার অবিচার?

What is the truth?God or hard work or luck or dedication or chance or intelligence?Which one?
I guess God does nothing just gives us a chance.Luck is in ur hand whether u can pick the chance or not?
No.....
I guess God is also confused to whom he will give the chance or whom He will make The Living Legend.....
No.....its also not....what will b than?
Confused

শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০১৪

Life is nothing but Waiting...........



মাত্র হলতো বাচ্চাটা।এত অস্থিরতা কেনো?ছেলে না মেয়ে!একটা হলেই হলতো।নাকি?এই হল শুরু।
অপেক্ষার॥॥॥
ছেলে?না মেয়ে।ছেলে হলেতো মেয়ের জন্য অবশ্য আর তেমন অপেক্ষা নেই।ওখানে একটু ক্ষমা আছে।মেয়ে হলতো ঠিক ঐ মূহুর্ত থেকে পরবর্তী নতুন জন্মটির অপেক্ষা।এই নিয়ে সবাই জানে।নতুন করে আর কিই বা লিখি।
আমার প্রসঙ্গ অন্যতো।
কখন বড় হবে সন্তানটি?কখন বসবে,হাঁটবে,কথা বলতে শুরু করবে,কাকে কি ডাকবে?
অপেক্ষা।
এমন করে গড়াচ্ছে সময়।এবার স্কুল।একটা ভালো স্কুল।টিকবেতো?অনেক প্রতিযোগিতা যে।
অপেক্ষা..........
ভালো স্কুল হল কি হলোনা।হলে আবার অপেক্ষা, ক্লাসগুলো ভালোভাবে পাড়ি কখন দেবে?মন্দ স্কুল(আসলে মন্দ বলে কোনো স্কুল থাকতে পারেনা),অখ্যাত স্কুল হলে ওখান থেকে বাচ্চাটাকে বড় করা একটু ভালোভাবে,সেতো আরো দুঃসহ অপেক্ষা।
SSC,HSC,এসবের অপেক্ষা লিখতে গেলে বই হয়ে যাবে।বলি ডাক্তার না ইঞ্জিনীয়ার না আরো বিশাল কিছু???কি হবে আমার সন্তান?কোথায় টিকবে?অপেক্ষা............
টিকে গেলো ভালো জায়গায়।অপেক্ষার কিন্ত্ত শেষ নয়।।ঠিকঠাক পাশ করে বেরুবেতো সময়তো?আর না টিকেছেতো সে অন্যরকম যন্ত্রণাময় অপেক্ষা।নাইবা লিখলাম।
আবারো অপেক্ষা মায়ের পায়ে ফুলাঞ্জলী।
পাশ করে বেরিয়ে গেছে।চাকরী পাবেতো ঠিকঠাক?বেকার ঘুরে বেড়াবেনাতো?চাকরী পেলোতো ভালো একটা, তো ভালো।না পেলোতো----কি লিখি বলোতো???
এবার এই চাকরীতে প্রমোশন,উন্নতি।
অপেক্ষার পূজার কোনো শেষ নেই।
সব হয়তো সুন্দরমতন হচ্ছে,এবার জীবনসংগী বাছাইয়ের পালা।জুটবেতো ঠিকঠাক?হায়রে অপেক্ষা............
সংসারের শুরু।শ্বশুড়বাড়ীতে সম্রাজ্ঞী অথবা সম্রাটরূপে পরিণত হবার সময়টা কখন?শাশুড়ী,ননদের মন কবে কখন পাবো?
অপেক্ষা.....
এভাবেই বয়সটা বাড়ছে কিনত্ত।
ঐ যে যেখান থেকে লেখাটা শুরু করেছি,ওসব ঘটনা ঘটছে।ধীরে ধীরে বয়সটা একটা পর্যায়ে আসলো।কারোর ঠিকানা বৃদ্ধাশ্রম,কেউবা দমবন্ধ করে মৃত্যুর অপেক্ষায়।
বৃদ্ধাশ্রমেও অপেক্ষা কবে দেখতে আসবে আমায়।
এখানেও অপেক্ষা একদিন বউটা ঠিক বুঝে নেবে --আমি খুব একটা খারাপ ছিলামনা।হয়তো আমি মরে গেলে বুঝবে।
এই বোঝা আর না বোঝাতেই একদিন মৃত্যু এসে কানে কানে বললো---এখনই সময়।
বললাম:মৃত্যু তুমি ফিরে যাও।আমি যাবোনা।আমি আরেকটু অপেক্ষা করতে চাই।দেখি কি হয়!
এর মাঝে আরো কত শত রকমের অপেক্ষার কথাতো লেখাই হয়নি।অসুস্থ মানুষের সুস্থ হবার অপেক্ষা।পরবাসীর ফেরার অপেক্ষা।ভুল ভাঙার অপেক্ষা।ভালোবাসা ফিরে পাবার অপেক্ষা।প্রতিশোধের অপেক্ষা।কত রকমের বাহারি অপেক্ষা।লিখতে গেলে শেষ হবে কি?অস্থির অস্থির লাগে।
মৃত্যু আর মানেনা।সত্যি করেই হঠাৎ হাজির।
বলে: "আরতো সময় নেই।এবার যেতেই হবে তোমার"
তবুও মিনতি:আরেকটু.......
মৃত্যু বলে: "চল যাই।ওপারে গিয়েও অপেক্ষা করতে পারবে।"
: "যেমন?"
মৃত্যু হেসে বলে:"স্বর্গে যাবে না নরকে তার সিদ্ধান্তের অপেক্ষা।
হায়রে অপেক্ষা॥॥॥এখানেই ভেবেছিলাম Life is nothing but Waiting............
তোমরা হয়তো ভাবছো ছবির মানুষটার সাথে লেখাটার কোথায় কি????
কি জানোতো?আমার শুধু জানতে ইচ্ছে করে এই মানবী কিসের অপেক্ষায় ছিলেন???ক্ষমতার চরম শিখরে উঠে কে কবে ক্ষমতা ছেড়েছে?আমার জানা নেই।
কিন্ত্ত সফলতার চরমে উঠে এই ছবির মানবীকে আমি উধাও হতে দেখেছি।এই একটা জায়গায় এসে আর হিসেব মেলাতে পারিনা।শুধু প্রশ্ন মনে ঘুরতে থাকে এই মানবীর কিছু একটাতো অপেক্ষা ছিলই।ভীষণ বুদ্ধিমতী যে,বিচক্ষণা।কি তবে সেটা?ভাবতে ভাবতে ভারী অদ্ভুত এক ভাবনা আসে মনে।
তিনি অপেক্ষায় ছিলেন হয়তো কোন মানুষ তাঁর বৃদ্ধ কুচকানো রূপ না দেখুক।তিনি আমৃত্যু আমার,আমার বাবার,আমার ভাইয়ের এমনকি আমার ছেলেটার কাছেও কিংবদন্তি অপরূপা নায়িকা হয়ে থেকে যেতে চেয়েছেন……..
নিশ্চয়ই.........
কোনো না কোনো অপেক্ষাতো ছিলই।
ভারী সুন্দর অপেক্ষা।পৃথিবী এমন মানুষ একবারই পায় বুঝি?????








মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০১৪

আশ্রয়



এটা একান্তই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা।নামাজ ব্যাপারটা একটা সময় ছিল মা'বাবার মার খাওয়ার ভয়ে পড়া।পড়তাম,পড়তাম,অভ্যাস হয়ে গেল।সেইসাথে মনের ভেতরে ভয়ের শেকড় ও ঢোকানো হয়েছিল।নামাজ না পড়লে ভালো result করতে পারবিনা পরীক্ষায়।ব্যস,হয়েই গেল।আরো ব্যাপক অভ্যস্ততা।
একসময় একটু একটু করে বড় হলাম।একটু একটু করে মা-বাবার অবাধ্য হতে শুরু করলাম।পরীক্ষার আগের ভয়ে ছাড়া সারাবছর আর আল্লাহ্ কে ডাকিইনা।
এভাবেই অনেকদিন।irregularly regular নামাজ চলতে থাকলো।কোনো ভালোবাসা টাসা কিচ্ছুনা,ধর্মান্ধতাতো নয়ই,আল্লাহ্ কেও দেখিনি স্বচক্ষে।পরকাল ঘুরে এসে কেউ বলেনি স্বর্গে ছিল না নরকে?দেখিনি একটাও পূণর্জন্ম।simply অভ্যাস চলতে থাকলো।
তারপর এলো ২৬ অক্টোবর'২০১২।মা চলে গেলো।অসহ্য কষ্ট থেকে ঐ নামাজের ওপরেই রাগ,ক্ষোভ ঢাললাম।তখনো অনুভূত হয়নি সবচেয়ে প্রিয় কিছুর ওপরই মানুষ সবচেয়ে বেশী অভিমান করে।সব বন্ধ,বন্ধ করে দিলাম।
বিভিন্ন ব্যস্ততা।কেটে যাচ্ছে সময়।এভাবেই চলতে চলতে হঠাৎ একদিন মনে হলো:"আমার সময় কই?আমার সময় কোনটা!!!!!!!!!!!!!!!!!
একটা ওয়াক্তে বসলাম।সেই প্রথম।চরম ও পরম মমতায়,সম্পূর্ণ নিজের কথা ভেবে নিজেকে সমর্পন করলাম ওই ওয়াক্তে।উফফ্ কি অসাধারন অনুভূতি।আমার, শুধু আমার সময়।পাঁচটা ওয়াক্ত শুধু আমার।একান্তভাবেই আমার।আমি স্বার্থপর নই কিন্ত্ত আমি স্বার্থপর হলাম--আমার অকৃত্রিম ভালোলাগার জন্য।
এভাবেই একদিন নিরাকারের আকার পাওয়া যায় বুঝি??????
এখন আমার প্রায়ই মনে হয়,পৃথিবীর সমস্ত ধর্মের সকল প্রার্থনা কোনকিছু পাওয়ার আশায় না হয়ে যদি নিজের আনন্দের জন্য হতো তবে কি ওই ধর্ম নিয়েও এত হানাহানি,এতো সংঘাত থাকতো?একই রক্তের রক্তওয়ালা মানুষ আরেকটা মানুষকে রক্তাক্ত করতে পারতো?ঐ রক্তের ভেতরে লুকোনো কোনো সম্পদ নেইতো!!!!!!!!!!!!
কোথাওতো কেউ নেই।ঈশ্বর ,আল্লাহ্ ,ভগবান----কারোরতো প্রমান নেই।তবু আমরা ভালোবাসি প্রার্থনায়।কিচ্ছুর জন্য নয় হয়তো এতটুকু নিশ্চিন্ত আশ্রয়ের জন্য।নিরাকারের সাজানো পৃথিবীতে একটু নিশ্চিন্ত আশ্রয়।ঐ আশ্রয়টুকুও থাকবেনা!!!!!!!!!!!এই পাখিটার মতন ভয়ে ভয়ে থাকবে মানুষ?সংখ্যালঘু আবার কি?আরে!!!! ওরা মানুষতো॥॥॥

আমি সুন্দর



মা আজকাল খুব বিরক্ত হয়।কেমন যেন অসহায়ও লাগে মা'কে দেখতে।একটু একটু মনে পড়ে আমার এই পা হারানোর দুর্ঘটনা ঘটার আগেও মা যেন কি মায়াবতী ছিল।কত স্বপ্ন দুচোখে!!!একবার বলে ডাক্তার হতে হবে,একবার ইঞ্জিনিয়ার,কখনো উচ্ছ্বসিত হয়ে: না, না, উড়বি--উড়ে যাবি।পাইলট হবি তুই মা।পাখি হবি।
আজকাল মা আর কোন স্বপ্ন দেখেনা।দুঃস্বপ্ন দেখে শুধু।অথচ মা কিনত্ত জানেনা যাকে নিয়ে মা দুঃস্বপ্ন দেখে তার জগৎটা স্বপ্নে ভরা।

আমার কোনো করুণার প্রয়োজন নেই।। ।
বরং আমার বিস্ময় আমি দ্বিজ।আমার দুটো জীবন।আমি সবার থেকে আলাদা।আমি একই জীবনে দুটো ভিন্ন জগৎ পেয়েছি।কেনো প্রতিটি অধ্যায়ে আনন্দ থাকবেনা?জীবনের এক এক অধ্যায়ের এক এক আবেদন।আমি এই অধ্যায়ে হারবোনা।সামান্য দুটো পা আমায় হারিয়ে দেবে?না,তুমি দেখে নিয়ো আমি উড়বোই।একদিন ঠিক পাখি হবো।দ্বিজ জীবনে একটা অধ্যায়ে মানুষ আরেক অধ্যায়ে পাখি।ক'জন পারে বলতো?
আমি Disable নই। আমি দ্বিজ।আমি সুন্দর।