মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৬

স্বাধীনতা





ওরা রক্তের বিনিময়ে এনেছে স্বাধীনতা
আমরা রাখিনি ধরে
সে আমাদের ব্যর্থতা।
ওরা যুদ্ধের বিনিময়ে এনেছে সম্মান
আমার বোন এখনো ধুলোয় লুটায়
এ আমারই অপমান ।
শত বীরাঙ্গনার রক্ত গড়েছে
সূর্যটা পতাকার
সেই নারীদের খবর রাখি না
এ আমারই দীনতা বারেবার।
ভাইরা আমার জঙ্গি হয়েছে
যোদ্ধা তো হয়নি।
দেশ চলে গেছে ধর্মের কাছে
বুঝতেও পারিনি ।

স্বপ্ননারী




দেখা আর তাকানো
এক কথা নয়
আমি তোকে দেখেছি
তাকানো নয়।
আমি তোকে বুঝেছি
মুখের ভাষায় নয়
আমি তোকে ছুঁয়েছি
হাতের স্পর্শে নয়।
তোকে নিয়ে হারিয়ে গিয়েছি
এবং প্রতিদিন হারাই
তবে  পায়ে চলার পথ দিয়ে নয়।
 

মঙ্গলবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৬

তোমার জন্য অপেক্ষা



তোমার জন্য অপেক্ষা বড় অমনোযোগী করেছে আমায়,
একটু আগে আমি খেতে বসে পানি ভর্তি গ্লাস ফেলে দিয়েছি টেবিলে 
মাছের ঝোলে ভুলে গেছি লবন দিতে,
আকাশ দেখতে দেখতে কখন যে বারান্দার ক্যাকটাসে আঙুল বিঁধেছে দেখিনি,
এই ভীষণ শীতের বেলা
ঠাণ্ডা স্নানের জলে গরম জল মেশাতে গিয়ে হাত পুড়েছি ,
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দেখছি
চুলে চিরুনি লাগেনি,
চোখে কাজল ও নেই,
জানলার ধারে কাঁঠালগাছটায় কবে কখন বাসা বেঁধেছে টুনটুনি 
আমি দেখিনি। 
তোমার জন্য অপেক্ষা বড় অমনোযোগী করেছে আমায়,
আমি যে কি করছি আর কি করছিনা
তারও হিসেব রাখতে পারছিনা,
শুধু হিসেব রাখছি সময়ের
তোমার চলে যাবার সাথে মিলিয়ে,
কারন আমি জানি,
কোথায় যেন পড়েছি" চলে যাওয়া মানেই প্রস্থান নয়।"
চলে যাওয়া মানে আসলেই প্রস্থান নয়,
চলে যাওয়া মানে ফিরে আসার জন্যই কোথাও যাওয়া।

আর ভালবাসবো







ড্রিল মেশিন যেহেতু আমার হাতে 
তোমার তো দেয়াল হতেই হবে
ইছেমতন যেখানে খুশী আমি ছবি ঝোলাবো।

প্রেম




চোখের ভিতর প্রেম
হাসির ভিতর প্রান 
বুকের ভিতর লুকিয়ে আছে 
ভালোবাসার গান।

আসবে আমার কাছে











এখন শীতের সময়, 
শিশিরে ভেজা থাকে চারপাশ, 
মেয়ে তুমি এত যত্ন করে শিশিরে ভেজাও পা? 
যদি বলি
এই আমি 
জলজ্যান্ত একজন মানুষ 
এর চেয়ে বেশী যত্ন করে ছুঁয়ে দেবো তোমায়? 
আসবে আমার কাছে?

বুধবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৬

শিয়রে রবীন্দ্রনাথ ২

ইচ্ছেটা খুব অদম্য হয়ে উঠছিল ।
ঘুপচি গলি পেরিয়ে অনেকটা পথ
চারপাশে কেবল ইটের দালানকোঠা
কিছু ভাঙা
কিছুবা নতুনের লাইসেন্স পেয়ে
টগবগিয়ে নাম লেখাচ্ছে এপার্টমেন্টের খাতায়
পুরনো দালান গুলোর গা বেয়ে একটা দুটো
বটের উঁকি ঝুঁকি
অশ্বত্থও আছে,
পাখিগুলো বেশ উড়ে উড়ে
কখনো বসছে ওই নরম ডাল গুলোতে।
নেচে নেচে এদিক সেদিক হারাচ্ছে কেমন,
দোয়েল নাকি
ওই একটা পাখি আজকাল হরদম দেখা মেলে
স্কুলের বইয়ে এর নাম তো দোয়েলই পড়েছিলাম
কালো শরীরে ছোপ ছোপ সাদা দাগ।

এই সমস্ত দেখতে দেখতে ইচ্ছেটা যেন আরো বাড়ছে
আমার চোখ দুটো অবাক হবার আগেই
খুব ধীরে গোধূলির রঙে সেজে ফেললো আকাশটা
আজ আকাশের হাতে অনেক রঙ
প্রতিদিনই কি তাই থাকে?
সবুজ ও বাদ নেই
স্বচ্ছ নীল আকাশে সবুজাভ আভা ধীরে মিলিয়ে গেছে বেগুনি আলোয়
শরতে কেমন ঝুপ করে রাত্রি নামে
আর একখানা ঘোলাটে চাঁদ হেসে ওঠে
প্রতি মুহূর্তে মনে হয় এই বুঝি
চাঁদটার একপাশ পড়বে গলে
আর সারা আকাশ রুপোর রঙে মাখামাখি হবে।
নানা ভাবে চাঁদের দিকে চাইলাম
কখনো বাঁ পাশ গলা
কখনো মনে হচ্ছে ডান পাশ
ঠিক এমন সময়ে কেঁপে উঠলো ছায়াটা,
কাঁপছিল কেমন অনেকক্ষণ ধরে?
আরো কেউ বৈরাগী বেরিয়েছে নাকি আজ?
আমার মতন?
বৃষ্টি খুঁজতে ?
আমি তাঁকে ডাকলাম
বেশ চিৎকার করেই ডাকলাম,
ধীরে এগিয়ে এলেন বৈরাগী বাবু।

আমি কিছুটা বিভ্রান্ত হলাম
অমন গাল ভরা লম্বা দাঁড়িওয়ালা
আলখাল্লা পরা মানুষ টাকে আমি তো রবি ঠাকুর বলেই চিনি
তবে কি তিনিও?
তাঁর আত্মাও?
ইচ্ছেটা আরো অদম্য হয়ে উঠলো যেন।
কবিতা লেখার জন্য
কিজানি
হয়তো গান লেখার জন্য
যেতে যেতে পথে পূর্ণিমা রাতে
চাঁদ উঠেছিল গগণে
যেতে যেতে পথে পূর্ণিমা রাতে
চাঁদ উঠেছিল গগণে
হয়তো বৃষ্টির জন্য?
তিনিও তো এখানেই নেমে এসেছেন
ওখানে হয়তো বৃষ্টি নেই,
ওখানে হয়তো বৃষ্টি হয়না।
তাই কবিতা লেখা হয়না
লেখা হয়না্‌,
চাঁদ উঠেছিল গগণে।
চাঁদ উঠেছিল গগণে।
আমি আর বৈরাগী রবি ঠাকুর
এক অদ্ভুত অপেক্ষায়,
বৃষ্টির জন্য
শুধুমাত্র বৃষ্টির জন্য
বৃষ্টি হলেই একটা কবিতার জন্ম হবে
একটা গানের জন্ম হবে
সেদিন দুজনে
দুলেছিল বনে
ফুলডোরে বাঁধা ঝুলনা।

শনিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৬

একখানা সবুজ বাংলাদেশ



আমার তখনো জন্ম হয়নি
আমি তাই ঠিক ততোটাই জানি
যতটা আমায় জানিয়েছে ইতিহাস।
তবে আমার এক কাকা ছিলেন
চলে গেছেন ওপারের দেশে
অজানা অভিমানে
অসুখে বিসুখে
অযত্নে অবহেলে ।
কিন্তু আমি আজ কোন অভিমানের কথা বলতে আসিনি,
আমি আসিনি অভিযোগের পসরা সাজিয়ে।
কাকার সাথে আমার বড়ই সখ্য ছিল,
গল্প ছিল
যখন আমি ঘুঘু ডাকা দুপুরবেলায়
ঘুম হারিয়ে, দুষ্টু স্বরে বলতাম,
কাকা, ও কাকা, গল্প বল।
কাকা বিরক্ত হয়ে বলতেন, গল্প নয়রে সত্যি।
আমিও হেসে বলতাম, ও আচ্ছা, সত্যিই তো,
আমার কেন লাগে রূপকথার মতন?
কাকা কেমন হারিয়ে যেতেন,
আমার কথায় হারিয়ে যেতেন,
গল্প তখন শুরু হত।

গল্প শুনতে শুনতে আমি এখন অনেক কিছুই জানি,
আমার সমান তরুণী দের সম্ভ্রমহানীর কথা জানি,
মায়ের বুকের থেকে কি করে হারায় দুধের শিশু আমি জানি,
নারকীয় হত্যাকাণ্ড শব্দের অর্থ আমি এখন জানি,
আমি এমন অনেক কিছুই জানি।
অসহ্য কষ্টের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার রঙের কথা জানি,
একটা সবুজ বাংলাদেশের লাল সূর্যটা কি করে আমাদের হয়েছিল
আমি জানি।
আমি বঙ্গবন্ধুর সেই শ্লোগানের কথা জানি
যে কথা মনে হলেই
কাকার চোখ দুটো জ্বলজ্বল করে উঠত ,
আজীবন জ্বলবে হয়তো,
যতদিন আমি আছি,
আমরা আছি,
আছে ১৬ ডিসেম্বর
আর একখানা সবুজ বাংলাদেশ
কারণ কাকা যে আমায় সত্যিকারের গল্প বলে গেছেন।

শনিবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৬

চুমু




তোমার আমার নিঃশ্বাস যখন এক হয় 
আমাদের হৃদ স্পন্দন বাড়ে
ধুকধুক শব্দটা প্রবল হয়,
বুঝতে পারি বেঁচে আছি, 
বেঁচে আছি এখনো 
তুমিকি তাহলে বুঝতে পারছো 
আমাদের এক হওয়া কত প্রয়োজন? 
কত প্রয়োজন নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাস মিলিয়ে একটা গভীর চুমু?

মঙ্গলবার, ১ নভেম্বর, ২০১৬

স্বর্ণলতা






স্বর্ণলতা ,স্বর্ণলতা
স্বর্ণ চুরি করে
কোন কাননে আছিস শুয়ে
কোন সুখেরই তরে ?

তোর রুপের তোড়ে সূর্য লুকোয়
আলোকশিখা যাচে
কি দিবি বল সূর্য যদি
পাগল হয়ে নাচে?

স্বর্ণলতা, স্বর্ণলতা,
কোন বাড়ীটির বউ?
আঁকড়ে ধরিস বৃক্ষ যতই
আপন নয় যে কেউ।


কবিতার কোন ভুল নেই

কবিতার কোন ভুল নেই।
কবিতা কল্পনা হোক
বাস্তব হোক
হোক শ্লীল
অথবা অশ্লীল ,
কবিতার কোন ভুল নেই।
কবিতা বিদ্রোহী হোক
শ্রমের অথবা বিশ্রামের
নগ্ন , অপাঠ্য অথবা সুপাঠ্য
দুর্বোধ্য অথবা সহজ
ভালোবাসার বা ঘৃণার
পার্থিব নয় অপার্থিব
হোক কবিতা তোমায় নিয়ে লেখা
অথবা দূর ছাই
কি আসে যায়?
করি থোড়াই কেয়ার।
কবিতা শুধু কবিতাই
কবিতা সুন্দর
কবিতার কোন ভুল নেই
কবিতার কোন ভুল হতে পারেনা।

সোমবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৬

কুয়াশা বিলাস

উত্তুরে হাওয়ার তোড়ে
সূর্য বিধ্বস্ত ,
লুকিয়েছে চুপিচুপি
মেঘের আড়ালে নয়
নিজেরই আড়ালে যেন।
তির্যক কিরণ তার
পড়ছে চোখের তারায়
মনের ভেতরে খেলে বুঝি
কেবলই হারাই হারাই।
উষ্ণতা জমা নেই
তীব্রতা নেই
প্রিয়ার চিবুকে আজ
বিন্দু বিন্দু ঘাম নেই।
উত্তুরে হাওয়ার তোড়ে
জেনেছে আকাশ
খুব বেশী দূরে নেই
কুয়াশা বিলাস।

রবিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৬

জীবনহীন জীবন










বারান্দায় দাঁড়ালেই অট্টালিকা
ঢেকে দিয়েছে আকাশটাকেও
চাঁদ কবে দেখেছি এখানে দাঁড়িয়ে
মনে পড়েনা আর
মাঝে মাঝে চুপি চুপি একটু খানি হাওয়া
লুকোচুরি খেলে চুলে কঠিন আসা যাওয়া
উর্দি পরা প্রহরী গুলো হাঁটাহাঁটি করে রাস্তায়
পীচ ঢালা কালো পথ ঘাস হীন অযত্ন অবহেলায়,
মেঝেতে বিছানো ছোট ছোট গাছগুলো
কখনো কি পেয়েছে দেখা অবারিত সবুজের?
পায়নি।
জীবন এখানে এমন।
মানুষ মানুষের থেকে দূরে,
গাছেরা গাছেদের থেকে দূরে।
হয়তো পাখিরা মিলে মিশে থাকে
হারিয়ে অজানায় উড়ে উড়ে।

অন্য কোথাও, অন্য কোনখানে








অন্য কোথাও
অন্য কোনখানে
দেখা হবে কোনোদিন
স্বপ্ননারীর সনে।
চাঁদহীন এক গভীর কালো রাতে
ফিনফিনে গাউনের মাঝে
অপার্থিব এক রূপবতী নারী
বলেছিল আনমনে,
সবুজ যুবক,
নিশ্চয়ই দেখা হবে
অন্য কোথাও
অন্য কোনখানে।
স্নান শেষে ভেজা চুল শুকোয়নি তখনো
গালের নরম ভাঁজে জলের রেখা ফুরোয়নি তখনো
চোখা ইলিশের মাথার মতন নরম কচি আঙুলে
স্পষ্ট অক্ষরে এসেছে লেখা,
হে সবুজ যুবক
দেখা হবে দেখে নিয়ো
অন্য কোথাও
অন্য কোনখানে।
অনেক দূরের থেকে সুবাস কি পেয়ে গেছে যুবক তাহার?
সদ্য স্নানের শেষে ভেজা জুঁইয়ের সাথে
মিলিয়েছে কি কোনভাবে।
ঘুটঘুটে কালো আকাশে এঁকেছে কি পূর্ণিমার চাঁদ?
নাকি ওই ফিনফিনে গাউনের
ছিপছিপে নারীর ছায়ায়
হারিয়েছে পথ?
বিভ্রান্ত যুবক,
রাত্রি দেখেনি আর
দেখেনি জোছনা বাহার
এক নারী দেখেছে
ছিপছিপে নারী
ফিনফিনে গাউনের ভিতর।

  

রবিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০১৬

পারলে ঠেকাও








তোমাকে ভালোবাসার অধিকার আমি খোদ ঈশ্বরের কাছ থেকে নিয়ে এসেছি।
পারলে ঠেকাও ।
একটি সামান্য প্রশ্ন কি যথেষ্ট নয় যে তিনি কেন এত অশরীরী সুন্দর করে সৃষ্টি করেছেন তোমায় ?
আমি এই প্রশ্ন টা ঈশ্বর কে করেছি।
আমি জানতে চেয়েছি পৃথিবীর অন্য নারীদের কি দোষ
ওই রুপের ছিটেফোঁটা না পাবার?
ফুলেদের কি দোষ?
পাখিদের কি দোষ?
প্রজাপতির ?আকাশের? চাঁদের ? নক্ষত্রের?
কেনই বা পৃথিবীর সমস্ত রূপ নিয়ে
মানবী হয়ে আসতে হবে তোমার?
ঠিক আমার চোখের কিনারায়?
এত সব প্রশ্নের উত্তর দিতে না পেরে
অবশেষে ঈশ্বর হারলেন আমার কাছে।
আমি তোমাকে ভালোবাসার অধিকার স্বয়ং ঈশ্বরের কাছ থেকে নিয়ে এসেছি। 
পারলে ঠেকাও।

মঙ্গলবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৬

স্বপ্ন নারী






শিউলি ফোটা ভোর
আলতা পায়ে নূপুর
শিশির ভেজা ঘাসে
নূপুর ফেলে আসে

 
চোখ ফেরালাম যেই
স্বপ্ন নারী নেই
হারিয়ে গেল কোথা
কুয়াশামাখা ব্যাথা।

রবিবার, ৯ অক্টোবর, ২০১৬

শোলকবলা





নোলক পড়ে অমন শোলকবলা হয়ে চেয়ে থেকোনাতো 

বড্ড অসুবিধে হয়। 
সবচেয়ে বড় অসুবিধেটা হল 
মস্তিষ্ক হৃদয়ের কাছাকাছি চলে আসতে চায়, 
দুজনের ভাব হয়, 
সেই আদান প্রদান এতো বেশী যে 
মন ও মগজ দুটোই তোমায় চাইতে থাকে, 
এভাবে দিন যাপন বেশ কষ্টের বটে। 
মস্তিষ্কের সাথে যুদ্ধ করে বেশ আছি 
ওখানেও তুমি ঢুকে গেলে 
ঐ মানুষটার সংগে আর থাকতে দেবোনা কিন্তু 
ঠিক আসতে হবে আমার বাড়ী।

ভালোবাসা দেবো






সোনার চুড়ি পারবোনা দিতে
কাঁচের চুড়ি দেবো 
ভালোবাসার গন্ধ দিয়ে
স্বপ্ন কথা কব।
একটি নোলক আর কিছু নয়
দিতে পারি বড়জোর,
তোর মুখের আলোর ঝলকানিতে
জেগে থাক ঈশ্বর ।

রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

শেষ বিকেলের আলো






তুমি চলে যাও

আমার সমূখ থেকে চলে যাও তুমি,
বৃষ্টি ভেজা আকাশটা এখন
এক অদ্ভুত আলোয় উদ্ভাসিত
তোমার পেছনে কাশবন
নুয়ে পড়ে পড়ে উল্লসিত,
সূর্যের দেখা নেই
তবু তার অস্তিত্ব আছে
নদীর জলের ঢেউয়ে
একাকার হয়ে মিশে গেছে,
মাঝিকে বলে দিচ্ছি
তোমায় পৌঁছে দেবে বাড়ি
বড় সাধ করে এনেছিলাম
নদীর মাঝে নারী ।
এখন সত্যি বলছি তুমি চলে যাও
আমার সমূখ থেকে চলে যাও তুমি,
সন্ধ্যে হতে আর বেশী দেরী নেই
এক্ষুনি ঠিকরে পড়বে আলো
তোমার মুখে নিমেষেই ,
শেষ বিকেলের আলো
শেষ বিকেলের আলো
নারী তোমায় ওই আলোতে না দেখাটাই ভালো ।

শুক্রবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৬

শিয়রে রবীন্দ্রনাথ

ইচ্ছেটা খুব অদম্য হয়ে উঠছিল ।
ঘুপচি গলি পেরিয়ে অনেকটা পথ
চারপাশে কেবল ইটের দালানকোঠা
কিছু ভাঙা
কিছুবা নতুনের লাইসেন্স পেয়ে
টগবগিয়ে নাম লেখাচ্ছে এপার্টমেন্টের খাতায়
পুরনো দালান গুলোর গা বেয়ে একটা দুটো
বটের উঁকি ঝুঁকি
অশ্বত্থও আছে,
পাখিগুলো বেশ উড়ে উড়ে
কখনো বসছে ওই নরম ডাল গুলোতে।
নেচে নেচে এদিক সেদিক হারাচ্ছে কেমন,
দোয়েল নাকি
ওই একটা পাখি আজকাল হরদম দেখা মেলে
স্কুলের বইয়ে এর নাম তো দোয়েলই পড়েছিলাম
কালো শরীরে ছোপ ছোপ সাদা দাগ।

এই সমস্ত দেখতে দেখতে ইচ্ছেটা যেন আরো বাড়ছে
আমার চোখ দুটো অবাক হবার আগেই
খুব ধীরে গোধূলির রঙে সেজে ফেললো আকাশটা
আজ আকাশের হাতে অনেক রঙ
আচ্ছা?
প্রতিদিনই কি তাই থাকে?
এমনকি সবুজ ও বাদ নেই
স্বচ্ছ নীল আকাশে সবুজাভ আভা ধীরে মিলিয়ে গেছে বেগুনি আলোয়
শরতে কেমন ঝুপ করে রাত্রি নামে
আর একখানা ঘোলাটে চাঁদ হেসে ওঠে
প্রতি মুহূর্তে মনে হয় এই বুঝি
চাঁদটার একপাশ পড়বে গলে
আর সারা আকাশ রুপোর রঙে মাখামাখি হবে।
নানা ভাবে চাঁদের দিকে চাইলাম
কখনো বাঁ পাশ গলা
কখনো মনে হচ্ছে ডান পাশ
আচ্ছা?
ওই ছায়াটা কিসের?
কাঁপছে কেমন অনেকক্ষণ ধরে?
আরো কেউ বৈরাগী বেরিয়েছে নাকি আজ?
আমার মতন?
এই যে,
কে আপনি?
দাঁড়ান ,
একটু দাঁড়ান না।
আপনিও কি আমার মতন?
কাঁপা গলায় বলে ওঠে বৈরাগী, আপনি কার মতন?
আপনার মতন হতেই পারি বটে কিছুটা
নয়তো এমন উছন্নের মতন কেউ রাস্তায় ঘোরে আকাশ দেখতে?
আপনি আকাশ দেখছেন কেন?
জানতে পারি?
হা হা হা অপেক্ষা করছি,
বৃষ্টির জন্যে।
আশ্চর্য ! আমিও তাই।
ধীরে ধীরে ছায়া স্পষ্ট হল
আমি কিছুটা বিভ্রান্ত হলাম
অমন গাল ভরা লম্বা দাঁড়িওয়ালা
আলখাল্লা পরা মানুষ টাকে আমি তো রবি ঠাকুর বলেই চিনি
তবে কি তিনিও?
তাঁর আত্মাও?
ইচ্ছেটা আরো অদম্য হয়ে উঠলো যেন।
কবিতা লেখার জন্য
কিজানি
হয়তো বৃষ্টির জন্য।
তিনিও তো এখানেই নেমে এসেছেন
ওখানে হয়তো বৃষ্টি নেই,
ওখানে হয়তো বৃষ্টি হয়না।
তাই কবিতা লেখা হয়না।

মঙ্গলবার, ৯ আগস্ট, ২০১৬

হৃদয় কাব্য ৪

আমার হৃদয় সত্যি বড়
সবার তাতে জায়গা হয়
বল মেয়ে বুঝবে কবে
হৃদয়রানী একজনই হয়।

হৃদয় কাব্য ৩





মেয়ে তোমার আকাশ আছে
বৃষ্টি , রোদ কি নেই সেথা?
হৃদয় জুড়ে সব নিয়েছ
নাওনি কেবল এই ব্যাথা।

হৃদয় কাব্য ২







বৃষ্টি তোমার, রোদ টা তোমার
জ্যোৎস্না তোমার আর কি চাও?
আমার কেবল আকাশ আছে
দুচোখ মেলে দেখতে দাও।

বৃহস্পতিবার, ৪ আগস্ট, ২০১৬

হৃদয় কাব্য ১




তোমার হৃদয় অনেক বড়
সবার তাতে জায়গা হয়
আমার হৃদয় একটুখানি
তোমার পরে আর কেও নয়।

শেষ প্রহর



আজ দুপুর ঠিক তিনটায় আমার জীবনাবসান হবে।
কাল ওরা এসেছিলো ,
আমার শরীরের মাপ নিয়ে গেছে,
আমার সংগে আরো অনেকের,
বয়স হয়েছে অনেক,
নিজেকে নিয়ে আমার তেমন দুশ্চিন্তা নেই,
আমি শুধু ভাবছি বছর বছর
আমার শরীরে গর্ত করে বাস করা প্যাঁচাটার কী হবে?
পাখী গুলো ছ 'টা ছানা দিয়েছে
ওদের তো কিছুই জানাতে পারিনি।
আমার সবচেয়ে বড় আর প্রসারিত ডালটাতে ছানাদের রেখে
খুব ভোরে বেরিয়েছে খাবারের খোঁজে।
ওরা ফিরবে কখন?
কত দেরী আর?
ফিরতে যে সন্ধ্যে হয় ওদের,
আহা, ছানা গুলো এখনো উড়তে শেখেনি তো,
ওদের কোথায় রাখি ?
পাখীগুলো কে কী জবাব দেবো আমি?
আমার গায়ের সাথে দিনের পর দিন আঁকড়ে থাকা
স্বর্ণলতা ,
কোথায় মেলবে পাতা ?
আমার ছায়ায় বসে থাকা চঞ্চল চিত্রা
আর কী কখনো বলবেনা কথা?
আমি আসলে ঠিক বুঝতে পারছিনা
কী করবো?
আমার শরীরে কেবল আমি তো নই
আছে হাজার জীবের বসবাস ।
আমার সংগে কেবল আমি তো নই
আছে হাজার জীবনের সর্বনাশ ।
আমি আছি এক শান্তিময় সুন্দর বনে
কারোর পথের বাঁধা হয়ে তো নয়।
আমি আছি এক চির সবুজের বনে
কারো জীবনের বিঘ্ন করে তো নয়।
তবে আমাকে নিয়ে এতো আলোচনার ঝড় কেন?
আমার অস্তিত্ব এতো টা বিপন্ন কেন?
আমি কথা বলতে পারিনা বলে?
হে ঈশ্বর তুমি ওদের বলে দাও ,
ওদের সৌভাগ্য আমি কথা বলতে পারিনা।
ওদের সৌভাগ্য আমি চলতে পারিনা ।
ওদের সৌভাগ্য আমার ডাল-পালা গুলো কোন বীভৎস অস্ত্র নয়,
নয়ত ওদের মতন মানুষ গুলোকে
ঠিক ঝাঁঝরা করে দিতাম আমি।

মৃত্যু স্পষ্ট



টুপটাপ ফুল ঝরে
নেই কোন শব্দ
পাখিগুলো বোঝে সব
চুপচাপ স্তব্ধ।

সবুজ ঘাসের বুকে
হলদেটে ঘাস ফুল
অদ্ভুত ফুটে আছে
যেন কোন বড় ভুল।

থেকে থেকে কুকুরের
ঘেউ ঘেউ হাঁক ডাক
জানান দিচ্ছে যেন
ভয় নেই থাক, থাক।

তবুও থাকেনা কেও
ভয় আর কষ্ট
এখানে এলেই দেখি
মৃত্যু স্পষ্ট।


রবিবার, ২৪ জুলাই, ২০১৬

ইচ্ছে গুলো কেমন যেন






দৈনন্দিন জীবনের বেশীর ভাগ সময় জুড়ে তুমি আছো

আছো মুঠোফোনে
আছো মুখোমুখি দর্শনে
কবিতায়
আলিঙ্গনে
চুমু অথবা চরম মিলনে
সবখানে,
সকল সময়ে
বড় তীব্র তোমার উপস্থিতি।
মাঝেমাঝে অনুপস্থিত তোমাকে পেতে ইচ্ছে করে
ওখানে কেমন তুমি
কেমন তুমি নৈশব্দে
অথবা কেমন দীঘির ধারে
জলের পাশে একাকী বসে থাকায়
খুব জানতে ইচ্ছে করে
পিচঢালা রাস্তার দুপাশ জুড়ে অপরুপ লালে
সেজে থাকা কৃষ্ণচূড়া
কখনো কি বেশী সময় চুরি করে আমার?

আজ তেমনই এক বিকেল ছিল
কৃষ্ণচূড়ার রঙিন আলোয় উদ্ভাসিত আকাশ ছিল
আর আমার খুব ইচ্ছে ছিল একাকী থাকার
এমন কর বেঁধোনা বারেবার
আমার খুব ইচ্ছে করে
মাঝে মাঝে একাকী থাকার। 

সবুজ নারী






সবুজ নারী যাচ্ছে বাড়ী
পাতার শাড়ী পড়ে
রোদের আকাশ মুখ ঢেকেছে
শ্রাবণ মেঘের তোড়ে।


পাতার বুকে এঁকেছিলেম
হৃদয় মাখা ঘর
সেই ঘরেতে বসত করে
অচিন যাদুকর। 


সোনার কাঠি, রুপোর কাঠি
ছোঁয়াই যত তারে
ঘুম ভাঙ্গেনা একবারটি
কেবল দূরে সরে।

সবুজ নারী, কল্পনারই
থাকুক আজীবন
স্বপ্নে আসুক, হাওয়ায় ভাসুক
ছিনিয়ে নিক মন। 

বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই, ২০১৬

আনফ্রেন্ড


বন্ধু করেছো যে আঙুলের ছোঁয়ায়
অবন্ধু করে দিয়েছো এক নিমেষেই
ওটা আঙুল
হৃদয় তো নয়।
একবার হৃদয় দিয়ে ছুঁয়ে দেখ প্রিয়তমা
দেখবে তর্জনী কেঁপে ঊঠবে ভালোবাসায়
তখন ঠিক  কী-বোর্ডের অস্থির চাবী গুলো দিয়ে
আর খুলবেনা ঘৃণার দুয়ার
আর একটিও বিচ্ছেদের শব্দ না এঁকে
হৃদয় ঠিক আঁকবে হৃদয়ের ছবি।
তোমার ভীষণ আধুনিক মুঠোফোনটাকে
একবার হৃদয় দিয়ে ছুঁয়ে দেখ শুধু।


বুধবার, ২০ জুলাই, ২০১৬

লজ্জাবতি




লজ্জাবতি গাছটি তুমি
ফুলের ছোঁয়ায় মূর্ছা যাও
কেমন করে বুঝবো বল
সূর্য না চাঁদ কোনটা চাও?

শ্রাবণ




আজ শ্রাবণের প্রথম দিনে জানাই নিমন্ত্রন
মেঘের গায়ে লিখে দিয়ো তোমার সবুজ মন।
শ্রাবণধারা ঝরবে যখন অঝোর হয়ে বনে
খুব বুঝবো তুমি তখন থাকছো আমার মনে।

শনিবার, ১৬ জুলাই, ২০১৬

আমি খাঁচার দরজা কখনো বন্ধ করিনা



আমার বুকের ভিতরে থাকা পাঁজরের খাঁচাটার দৈর্ঘ্য , প্রস্থ এতটুকুই
কিন্তু তোমার আকাশ চাই।
উড়তেই তো শেখনি এখনো
এত্ত বড় আকাশ টাকে সামলাতে পারবে তো?
যদি ভয় পাও ফিরে এসো
আমি খাঁচার দরজা কখনো বন্ধ করিনা,
তুমি থাকলেও না
না থাকলে তো নয়ই।

ধন্যবাদ ভালোবাসা

ধন্যবাদ ভালোবাসা,
তোমার দেয়া কষ্ট আমায় কবি করেছে।
অসহ্য সুন্দর সব প্রেমময় শব্দের বিন্যাসে
আমি এখন প্রতিদিন সাজাই সাদা ডায়েরিটা।
ধন্যবাদ ভালোবাসা,
তোমার বিরহ আমায় বাধ্য করেছে
নীরবতার স্বাদ নেবার।
এই চঞ্চল, কোলাহলময় পৃথিবীতে
নীরবতার গান শুনতে পারে ক'জন মানুষ?
ধন্যবাদ ভালোবাসা,
তোমার উপেক্ষা আমায় অপেক্ষা শিখিয়েছে
আমি এখন অপেক্ষা করতে জানি
এ জগতে সম্ভবত এর চেয়ে কষ্টের আর কিছু নেই।
ধন্যবাদ ভালোবাসা,
তোমার অনুপস্থিতি আমায় পাগলামি শিখিয়েছে
যে পাগলামির জোয়ারে
আমি ছিনিয়ে আনতে শিখেছি
তোমাকে
আমার ভালোবাসাকে।
ধন্যবাদ ভালোবাসা।
আমি হারবো না
দেখে নিও।

কথা ছিল



গ্রীষ্মে আসার কথা ছিল
কৃষ্ণচূড়ার পায়ে
রোদের ভিতর শীতল ছায়া
জড়িয়ে দিয়ে গায়ে।
গ্রীষ্মে তুমি এলেনা।
বললে তুমি বর্ষা আসুক
কদম আমার চাই
কদম বনে পথ হারাবো
চোখ যতদূর যায়।
বর্ষায় তুমি এলেনা।
সাদা কাশের তুলোয় ঝেঁপে
মেঘের ভেলা ভাসে
শিউলি ফুলের গন্ধ বুকে
শরত চলে আসে।
শরতেও তুমি এলেনা।
বললে এবার ধানের সুবাস
প্রানের কথা কবে
পিঠে পুলির উৎসবেতে
দেখা হবেই হবে।
হেমন্তেও এলেনা।
ভাবছো বুঝি আসবে শীতে ?
শীতে এসো না।
বুনো ফুলের দেশে যাবো
আমায় পাবেনা।

আমার আকাশ কুসুম চাওয়া







আমার আকাশ কুসুম চাওয়া
তোমার কঠিন বাস্তবতা
আমার রঙিন মিষ্টি দুপুর
তোমার সাদা কালো খাতা।

তুমি নাটাই হাতে ঘোরো
আমি ঘুড়ি হয়ে উড়ি
তুমি ইচ্ছে হলেই ছাড়ো
আমার সবটা বাড়াবাড়ি।

তুমি হাত বাড়িয়ে রাখো
পাশে অতল সমুদ্দুর
আমি ছুঁতে গিয়ে দেখি
তুমি দূর বহুদূর।

কেবল রাত্রি নামার আগে
কেও পাশে এসে ডাকে
আমি চোখ ফেরালেই উধাও
শুধু স্বপ্ন হয়ে থাকে।

এই স্বপ্ন বন্ধ করে
আজ দুচোখ ভরে দেখ
আর যাবো না তো ছেড়ে
শুধু একটু ধরে রেখো।
 

ক'দিনের ছুটি


ক'দিন ছুটি তে ছিলাম,
ভেবেছি অনেক ভালো থাকবো।
সে আর হোলো না।
আমার কাজই ভালো
আমার ব্যস্ত জীবনই ভালো
অন্তত ভুলে থাকার জন্যে
ব্যস্ততার মতন বড় কোন পথ্য নেই।

আমি আজ ফিরে যাচ্ছি কাজে
ফিরে যাচ্ছি আমার ব্যস্ততার বুকে।
যে কাজ আমায় ভুলিয়ে দেবে
কখনো কোথাও কোন এক একাকী মেঘ কেঁদে ওঠে
নীরব সাগরে
আর ভাবে ওখানে কি রূনি নামের কোন ঝিনুক আছে?
আমার ভুলে যেতে হবে
কখনো অভিজিতের রক্তাক্ত শার্ট অথবা
বন্যার কাটা আঙুল
ভুলে যেতে হবে
রাজীব , দীপন
অথবা তনু
কিংবা মিতুর আর্তনাদ
ভুলে যেতে হবে কোন এক পুরোহিতের
সকরুণ প্রার্থনা
অথবা আমার ভুলে যেতে হবে
নগ্ন হিংস্রতায় ভরা পহেলা জুলাই ।
আসলেই ভুলে যেতে হবে
অথবা
ভুলে যাবার ভান করতে হবে।
নয়তো
ঐ রক্তাক্ত লাশের রক্ত গন্ধের ভিতর
আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাবে
এমন কি আমি আর দীর্ঘশ্বাস ও ফেলতে পারবোনা
আমি কি করে বাঁচবো তাহলে?
আমার কাজে যেতে হবে প্রিয় মানুষ
আমার ভুলে যেতে হবে
আর এভাবেই আমার বাঁচতে হবে।
আমরাতো এখন এভাবেই বেঁচে আছি।

শুক্রবার, ২৪ জুন, ২০১৬

প্রতীক্ষা



ক্লান্ত মনের খবর জানা
সহজ যদি হতো
খুব না ভেবে আজকে ঠিকই
দেখা হতোই হতো।

মুক্ত হবার ইচ্ছে যদি
বুকের মধ্যে ঘোরে
আর ঢুকোনা খাঁচার ভিতর
উড়াল দিও জোরে।

খাঁচা যখন পড়ে থাকা
তোমায় ছাড়া একা
কষ্ট কেমন বোঝনাতো
এমন করে থাকা।

ইচ্ছে মতন আকাশ ছোঁবে
ইচ্ছে মতন খাঁচা
আর হবেনা এমন জেনো
ফাঁকির ভিতর বাঁচা ।

শীতে তুমি এসোনা

গ্রীষ্মে আসার কথা ছিল
কৃষ্ণচূড়ার পায়ে পায়ে
রোদের ভিতর শীতল ছায়া
জড়িয়ে দিয়ে গায়ে গায়ে।
গ্রীষ্মে তুমি এলেনা।

বললে তুমি বর্ষা আসুক
কদম আমার চাই
কদম বনে পথ হারাবো
চোখ যতদূর যায়।
বর্ষায় তুমি এলেনা।

সাদা কাশের তুলোয় ভোরে
মেঘের ভেলা ভাসে
শিউলি ফুলের গন্ধ বুকে
শরত চলে আসে।
শরতেও তুমি এলেনা।

বললে এবার ধানের সুবাস
প্রানের কথা কবে
পিঠে পুলির উৎসবেতে
দেখা হবেই হবে।
হেমন্তেও এলেনা।

ভাবছো বুঝি আসবে শীতে ?
শীতে এসো না।
বুনো ফুলের দেশে যাবো
আমায় পাবেনা।



ধন্যবাদ ভালোবাসা





ধন্যবাদ ভালোবাসা,
তোমার দেয়া কষ্ট আমায় কবি করেছে।
অসহ্য সুন্দর সব প্রেমময় শব্দের বিন্যাসে
আমি এখন প্রতিদিন সাজাই সাদা ডায়েরিটা।

ধন্যবাদ ভালোবাসা,
তোমার বিরহ আমায় বাধ্য করেছে
নীরবতার স্বাদ নেবার।
এই চঞ্চল, কোলাহলময় পৃথিবীতে
নীরবতার গান শুনতে পারে ক'জন মানুষ?
ধন্যবাদ ভালোবাসা,
তোমার উপেক্ষা আমায় অপেক্ষা শিখিয়েছে
আমি এখন অপেক্ষা করতে জানি
এ জগতে সম্ভবত এর চেয়ে কষ্টের আর কিছু নেই।
ধন্যবাদ ভালোবাসা,
তোমার অনুপস্থিতি আমায় পাগলামি শিখিয়েছে
যে পাগলামির জোয়ারে
আমি ছিনিয়ে আনতে শিখেছি
তোমাকে
আমার ভালোবাসাকে।
ধন্যবাদ ভালোবাসা।
আমি হারবো না
দেখে নিও।

রবিবার, ১৯ জুন, ২০১৬

ভাবনা গুলো ভুল কি ছিল



সংখ্যালঘু শব্দটা ঠিক
তেমন করে বুঝিনা
তোমরা হয়তো অনেক জানো
আমি খুব বেশী জানিনা।
আমার শুধু চোখের তারায়
শৈশবটুকু ভাসে
মাসীমার হাতে চিড়ের মোয়া
পাঁচনের সুবাস আসে।
বিহ্বল হয়ে শুনেছি কোরান
মায়ের মধুর স্বরে
ওদিকে শুনেছি কাঁসার ঘণ্টা
সন্ধ্যে হলেই পরে।
বড়ুয়া স্যার কি সংখ্যালঘু
বুঝতে তো পারছিনা
বরাবরই তাঁকে জেনেছি বিরাট
হিসেব তো মিলছেনা।
বড়দিন এসে একা চলে যাবে
প্রার্থনা করা হয়নি
বন্ধু ডিকেন্স কেক খাওয়াবেনা
এমন ঘটনা ঘটেনি।
সমস্যাটা কি আমার নাকি
অন্য সবারও হচ্ছে
সঙ্খ্যালঘুর অর্থটা এতো
কঠিন কেন মনে হচ্ছে?

বোকা তারাটা








তারাটা অদ্ভুত উজ্জ্বল
বড় তীব্রভাবে জ্বলে
নিজের আলো বলেই হয়তো।
কখনো রূপসী চাঁদ টাকেও
ম্রিয়মান মনে হয়।
একটা নির্দিষ্ট দূরত্বে থাকে তারাটা,
যেন দিবা রাত্তির দিচ্ছে পাহারা
তারাটাকে মাঝেমাঝে বড় জীবন্ত মনে হয়
এতোটাই যে সূর্যের তীব্র আলো তেও
ওর দেখা মেলে।
আচ্ছা, তারাটা কি বিষণ্ণ পথিক কোন?
কিজানি?
আমার বরাবর ওকে পাহারাদার মনে হয়।
অনেক ভালবাসলে মানুষ যেমন পাহারাদার হয়ে যায়
কেবলই পাহারা দিতে থাকে প্রানের মানুষটিকে ?
অনেকটা সেরকম।
তারাটা পাহারাদার হয়ে গেছে।
চাঁদের জন্য
আকাশের পাগলামি দেখে
চাঁদের জন্যে
তারাদের ছুটোছুটি দেখে
চাঁদের জন্যে
সূর্যের বাড়াবাড়ি দেখে
চাঁদের জন্যে
মেঘেদের বিহ্বলতা দেখে
চাঁদের জন্যে
আমাদের, তোমাদের, কবিদের
অস্থিরতা দেখে।
বোকা তারা
কখনো বোঝেনি
চাঁদের সংগে তার ঐ নির্দিষ্ট দূরত্ব
কোনদিন ফুরবার নয়।
চাঁদ আসলে কারোরই নয়,
বোকা সবাই ভুল ভাবে শুধু,
ভুল ভাবে বোকা তারাটার মত,
বড় ভুল করে অপেক্ষায় থাকে
কোনদিন ঐ নির্দিষ্ট দূরত্ব ঘুচিয়ে
যদি কাছে আসে চাঁদ!
যদি সত্যি আসে
কখনো,
কোনদিন ।

শনিবার, ১৮ জুন, ২০১৬

স্বপ্ন ছিল


কাঠগোলাপের গন্ধে ভরা ভোর
রাতের তারা এই মেনেছে হার
কোনটা নেব হাত বাড়ালাম যেই
আকাশ বলে সন্ধ্যে তবে কার?

বারান্দাতে বকুল ঝরা প্রেম
বৃষ্টি এসে স্পর্শ দিয়ে যায়
খোঁপার কাটা খুলতে গিয়ে দেখি
মিথ্যে ওসব স্বপ্ন ছিল হায় ।

 

শুক্রবার, ৩ জুন, ২০১৬

সংসার







পহেলা জুন একটি রোদেলা সকাল থেকে
তেসরা জুনের সোনালী বিকেল পর্যন্ত
ঠিক যত ঘণ্টা, মিনিট আর সেকেন্ড হতে পারে
ততোটা সময় দেখিনি তোকে।

কারণ আমাদের অভিমান হয়েছে,
রাগ হয়েছে, ক্ষোভ হয়েছে।
কিন্তু গণ্ডমূর্খ ,
ভালোবাসা যেটা হয়েছে সেটা কি টের পাচ্ছিস?
ঠোঁট কাঁপছে সেই থেকে
একটা চুমুতে হবেনা,
বুকের ভিতর এক গহ্বর  ফাঁকা
তোর হাজার রাতের জড়িয়ে ধরাতেও
ভরবেনা,
চোখের ভিতর এক সমুদ্র জল
কত জীবন কাঁদলে হবে বল?
এক জীবনে হবেনা তো
ফুরাবেনা ঐ জল।
বরং একটা ওষুধ দিবি চল ।
দুনিয়াদারী সবটা ছেড়ে
পালাবি এই বুকে
রাগ অভিমান করবো নাতো
রাখবো চোখে চোখে।
মায়ার ভিতর বানিয়ে দেবো
চড়ুই এর সংসার
ঘণ্টা, মিনিট , সেকেন্ড যাবে
বুঝবি না তো আর। 

ভালোবাসার অন্য পিঠে



তোকে ছাড়া থাকাটা খুব মুশকিল হচ্ছে।
আচ্ছা, মিস করাটা কি এমন নাকি?
যত্তগুলো কলিংবেল বাজে
সব কটাতে দৌড়ে দৌড়ে দরজা খুলতে যাওয়া,
মিস করলে কি খিধে কম লাগে?
টেবিল ভরা মজার খাবার
মনে হচ্ছে সব সাপ, কেঁচো আর ব্যাঙ রান্না করা,
আচ্ছা মিস করলে কি এতো সুন্দর মেঘলা আকাশ টাকেও
টেনে ছিঁড়ে ফেলতে মন চায়?
মনে হয় কি সূর্যটাকে কান টেনে আকাশে ওঠাই?
আমি ঠিক বুঝতে পারছিনা
বেলী ফুলের গন্ধটাকেও
বিচ্ছিরি ডাস্টবিনের মতন লাগছে কেন?
এগুলো কি মিস করা অসুখ?
মিষ্টি সুরের দারুন গান টাকে
কেন বাসের বিকট হর্নের মতন লাগছে?
অসুখটার কি অদ্ভুত সব উপসর্গ ,
হাজার শব্দ বুকের ভিতর
অথচ কারোর কাছে বলতে ইচ্ছে করেনা।
আশ্চর্য তো!
কেমন অসুখ মিস করাটা ?
কেমন জ্বালা বলতো?
তোকে ছাড়া জীবন আমার
বেশ তো ভালো চলতো ।
ভালোবাসার অন্য পিঠে
মিস করা কি থাকে?
তুই ছাড়া এই জীবন টাকে
তেতো স্বাদের লাগে?
ভাবছি তোকে কক্ষনো আর
দেবো নাতো ছেড়ে।
মিসের থেকে মিসেস এবার
নিবিই বল করে?

স্বপ্ন নিয়ে








স্বপ্ন গুলো কেমন যেন

একটু রঙিন সাদা কালো
চোখ জুড়িয়ে দেখতে গেলেই
হারায় কোথা এলোমেলো।

কল্পনাতে ফানুশ মেলে
হাত বাড়ালাম যেই
চোখটি মেলে অবাক দেখি
কোথাও তুমি নেই।

ভাবছি বসে ভাববোনা আর
এবার তবে যাবো
আলোয় ভরা স্বপ্ন গুলো
বললে আবার ভাবো ।

বিচ্ছুরনে স্বপ্নেরা সব 
হারায় গিয়ে কোথা
আবার ভাবি স্বপ্ন নিয়ে
আবার কুড়াই ব্যাথা।

শুক্রবার, ২৭ মে, ২০১৬

থাকবি আমার ?






প্রতিদিন  দেখা করতেই হয় ?
একদিন না দেখলে কি হবে ?


কিচ্ছু হবেনা।
সূর্য পশ্চিমে উঠবেনা ,
চাঁদ পৃথিবীর চেয়ে বড় হবেনা ,
দখিনা বাতাস হঠাত পূবের হাওয়া  হয়ে বইবেনা।,
সাগর জলের শামুক ঝিনুক আকাশের গায়ে উড়বেনা ,
কালবোশেখী লজ্জাবতীর মতন নুয়ে নুয়ে পড়ে কাঁদবেনা ,
মেঘেরা সব পাহাড়ের কাছে ভালোবাসার কথা কইবেনা ,
এমন  কিছুই পাল্টাবেনা ,
পাল্টাবেনা ,
শুধু অনেক দূরে 
একটি মানুষ 
অপেক্ষাতে গাছ হয়ে যাবে ,
মানুষ হয়ে প্রতিদিন আর জ্বালাতন তোকে করবেনা ,

মেয়ে,
আমায় পাগল হয়েই থাকতে দে না 
গাছ হতে বল  দিবিনা?

তুই এমন কেন পাখি





তুই এমন কেন পাখি

জানলা বেঁধে  রাখি তবু
কেবল  ডাকাডাকি?

আমার কি আর
মন কখনো খারাপ হবেনা ?
জবাবদিহি বারেবারে ভালই লাগেনা।

আমার বুঝি শরীরটাতে
অসুখ করা বারণ ?
তোর কাছে কি বলতে হবেই
লুকিয়ে কি তার কারণ ?

তুই এমন কেন পাখি
সকাল বিকেল কিচ্ছুটি নেই
কেবল ডাকাডাকি ?

এবার কিন্তু ঠিক করেছি
পালিয়ে আমি যাবোই
যতই ডাকিস ফিরবোনা আর
নিজের মতন রবোই।

সবার থেকে হারিয়ে শুধু
নিজের কাছে যাবো
একটু ক'দিন নিজের সাথে
নিজেই কথা কব।

তুই এমন কেন পাখি
এমন  করে বকি
তবু কেবল ডাকাডাকি ?

গোপন









সব মুখ চেনোনাতো ছবির আড়ালে
সব কথা জানোনাতো কথার অন্তরালে।
ফুল দেখে ক্যাকটাস ছুঁয়ে দেখোনা
পাখির ডানায় কভূ মন বেঁধোনা ।
গানের আড়ালে কতো অজানা যে সুর
বাজেনাতো পিয়ানোতে পড়ে থাকে দূর।
বুকের গভীরে মুখ হৃদয়েতে নেই
সবকিছু আছে তবু কি যেন নেই।
এইভাবে একদিন বুঝেছি গোপন
কাছে থাকা মানে নয় কাছে আছে মন।




মঙ্গলবার, ১৭ মে, ২০১৬

আমি নিশিদিন তোমায় ভালোবাসি






তুমি তো ঠিকই যাবে
যখন যাবার হবে
মিথ্যে তবু কেন বল
সারাটা ক্ষণ আমার রবে?

যে যার কাজে ঠিক চলে যায়
মিছে ওসব সান্ত্বনা বাণী
পড়ে থাকেনা মিষ্টি মায়ায়
ইচ্ছে মতন ব্যাবহার জানি।

আমার ওসবে অভ্যেস নেই
স্বপ্নে ওড়ার মত
স্বপ্ন দেখাতে এসোনা আর
পড়ে থাকে শুধু ক্ষত ।

তোমার শত কাজের ভীড়ে
অবসরে আসি আমি
ভালোবাসা যত ভাগ হলে পরে
অবসর হয় দামী।

রবি ঠাকুরের গানের মতন
আমি নিশিদিন ভালোবাসি
স্বীকার করে নিও সখা
তোমার অবসরে আমি আসি।