মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৪

রুনুর আর দরোজা খোলা হয়না

বাড়িটা ছিলো রাস্তার খুব কাছেই।
সমস্ত রাত্তির অদ্ভুত সব শব্দ ,
কখনো বাসের বিকট আওয়াজ,
অথবা কখনো সমগ্র বাংলাদেশ পাঁচ টন।
মাঝে মাঝে রিক্সার কিছু টুং টাং শব্দ ও
সে যখন নিঃশব্দ প্রায় রাত্রি নেমে আসতো তখন।
ধুপধাপ ছিনতাইকারীর দৌঁড়ে কতো যে ভেঙ্গেছে ঘুম !
মাঝেমাঝে বড্ড অসহ্য লাগতো।
ঐ যে পলাশ কাকার দুরন্ত ছেলেটা?
নতুন বাইক কিনেছে ,
একবার ভোঁ করে রাস্তার ও মাথা
আবার ভোঁ করে গগন কাঁপিয়ে ,ধূলো উড়িয়ে ,
রাস্তার হৃত্পিণ্ড মাড়িয়ে ,
জানান দিতে অতসী'দি কে ,
'সুন্দরী দেখ। আমি এসেছি।
এবার ঠিক পক্ষিরাজে দেবো উড়াল। '

এসব দেখতে দেখতে আমি ভুলেই যেতাম
আমার অস্থির শ্রবনেন্দ্রিয় কখন কবে
সময় নামক ঘড়ির শব্দে দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে ,
আমি ভুলেই যেতাম।
অথবা ভুলে যাবার ভান করতাম।

বাড়ীর পাশের শিউলীর টুপটাপ ঝরে পড়ার
শব্দের সাথে
অথবা
সমস্ত হিংস্র যানবাহনের
শব্দের সাথে
দুটো পায়ের কোমল শব্দ কখন একত্রিত হবে !
আমি ভুলে যেতাম
অথবা
ইচ্ছে করেই ভুলে যাবার ভান করতাম।
যেন প্রতিবারই নরম ভোরে
কেও দরোজায় কড়া নাড়ে।
আর চুপিচুপি ডাকে ----
রুনু ,শুনতে পাচ্ছো ?
রুনু ,দরজা খোলো।
শুনতে পাচ্ছো তুমি ?
রুনু ?
শেষ শব্দটা কেবলই মিলিয়ে যায়।
প্রতিদিন ঠিক এই সময়ে
শব্দের সাথে শব্দের খেলা হয়।
আর
আমি অপেক্ষায় থাকি।
কোন শব্দটার জয় হবে ?
রুনু ?
নাকি সমগ্র বাংলাদেশ পাঁচ টন ?

রুনুর আর দরোজা খোলা হয়না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন