বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৪

রুদ্মিলার চিঠি ১১








তোমার ছবি আগে খুব দেখতাম। ইদানিং দেখিনা। মানুষ বোধ হয় কোনো না কোনো একটা সময় কষ্টের থেকে মুক্তি খোঁজে। তোমার ছবি দেখার সাথে অনেক কিছু যুক্ত। মন খারাপ হওয়া ,সাহস হারানো ,আরেকটা মুখ তোমার মত খুঁজে বার করার ব্যর্থ চেষ্টা ,তোমার রান্নার মন ভোলানো গন্ধ আরো কত কি।তোমায় নিয়ে টেনে টেনে দুঃখ বার করে আনাটা অনেকের কাছেই এখন দুঃখ বিলাস। আচ্ছা বলতো ?ওদের কি করে বোঝাই অথবা কেনই বা বোঝাই যে যতক্ষণ না হারায় ততক্ষণ কেও হারানোর কষ্ট বোঝেনা। ওরা বলে জীবন আবার থেমে যায় নাকি কারোর জন্যে ?ওদের কি করে বোঝাই তারিখের পর তারিখ পাল্টানো মানেই জীবনের বয়ে চলা নয়।জীবন থামেনা। কিন্তু তার রূপ ,রস, গন্ধের থেমে যাওয়াতো আছে।


তোমায় আজ খুব চিত্কার করে বলতে ইচ্ছে করছে ,,,,শুধু তোমায় ভালোবেসে আমি একটুও ঠকিনি জানো ?দ্বিগুন তিনগুন ফিরে ফিরে পেয়েছি কেবল।
জানো ,আজকাল ভালোবাসতেও ভয় করে।মানুষ যেন কেমন হয়ে গেছে।একটু বেশি ভালোবেসে ফেললে ভেবে নেয় নিশ্চয়ই কিছু একটা কারণ লুকোনো আছে।
 শুধু একজন তুমিই ছিলে যার কাছে কথা বলবার আগে আমার দশবার ভাবতে হয়নি।যেভাবে যে কথাই বলেছি সব কথাতেই তুমি যেনো ভালো কিছু খুঁজে নিয়েছো। তুমি কেনো এতো অদ্ভুত করে আমায় বড় করেছো ?একটুখানি এই পৃথিবীর সাথে চলার মতন করে গড়ে তুলতে ?

একবার একটা  ফ্রিজ বাড়ি থেকে বার করে দিতে হচ্ছিলো। নষ্ট হয়ে গেছিলো বলে।তুমি খুব কেঁদেছিলে। আমি বড় বড় চোখ করে জানতে চেয়েছিলাম ,ফ্রিজের জন্যেও মানুষ কাঁদে ?তুমি কি  বলেছিলে  মনে নেই।শুধু মনে আছে আমরা প্রায় প্রায়ই ওই ফ্রিজ টা নিয়ে গল্প করতাম।তোমার একটুখানি মনটা উদাস হত। একদিন হঠাত বললে:ফ্রিজ অকেজো হয়ে গেছে ফেলে দিয়েছিস। মানুষ অকেজো হয়ে গেলে কি করবি রুদ্মি ?'

মা ,অকেজো হয়ে যাবার ভয়েই কি এত সুন্দর করে চলে গেলে ?
আজ তুমি শুধু আমায় বল ফ্রিজ টার জন্যে কষ্ট লুকোতে পারোনি।তুমি ,আমার একটা মা এর চলে যাবার কষ্ট আমি কি করে লুকোই ?এও কি দুঃখ বিলাস বলতো ?

                                                                                                                                              

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন