রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

বেড়াল ছানার গল্প ৭










আমি তোর্ ছোট্ট বেড়াল ছানা
বলনা ওরে সহজ কিরে ?
আমায় বলা যা না ?

আমি তোর্ আদর বেড়াল ছানা
একটি রাতেই হয় কখনো
সবটা আমায় জানা ?

তুই আমায় ভুলবি কি বল সোজা ?
কানটি ধরে মলে দেবো
নাক করবো বোঁচা।

তুই আমায় ফেলে কোথায় যাবি ?
রাত্রি এলেই আমায় ছাড়া
ভয় যে অনেক পাবি। 

আমি তোর্ মিষ্টি বেড়াল ছানা
জড়িয়ে  ধর এখুনি
চুমু টা দে এখুনি
চাদরের ভাঁজ থেকে তুই
আমায় বুকে নে না।


শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

সুন্দরী








চালতা বনে আলতা পায়ে
সুন্দরী ওই হাঁটে।
ঝুমুর ঝুমুর শব্দে তারই
ফুলগুলো সব ফোটে।

সুন্দরী তোর্ সবকিছুকে
একলা ভালবাসি।
এমন করে চাসনা ওরে
দোদুল দোলায় ভাসি।

সুন্দরী তোর্ হাসির স্রোতে
প্রানটি ভেসে যায়।
তবলা বাদ্য সবটা ছেড়ে
তোর্ পেছনে ধাই।

সুন্দরী তুই যেথায় চলিস
শিউলী ঝরে এসে
কমলা বোঁটার শুভ্র ফুলের
রূপটি হারায় শেষে।

সুন্দরী তোর্ আঁচল খানা
একটু ছুঁতে চাই
তার কারণে ধূলোই হলেম
ধূলোয় মিশে যাই।

বলছি ঠাকুর আজকে বনে
বৃষ্টি নামুক ঝেঁপে
চালতা পাতায় ঢাকবো তোকে
ফুলটি দেব সঁপে।
 
সুন্দরী তুই কেবল আমার
সারা অহঃ নিশি।
সুন্দরী তোর্ সবকিছুকে
একলা ভালবাসি।










বেড়াল ছানার গল্প ৬












বন্দী হয়ে এইতো আমি
আছি ঘন্টা ধরে
কাঁদছি তবু ছাড়ছেনা তো
আছেই রাগ করে।

পেটে আমার বেজায় ক্ষিধে
এখন কোথা যাই ?
কেমন করে এখান থেকে
পালিয়ে যাবো ভাই ?

আজকে হবে ইলিশ ভাজা
অফিস সেরে এলে
খাবেনাতো একটুও সে
আমায় দূরে ফেলে।

জানিস হুলো অমন ভালো
মানুষ টি আর নেই
জ্বালাই আমি বড্ড তারে
কারণ অকারণেই।

দূরে গেলেই বুঝি কেবল
সত্যি কে যে ভালো।
একটা কিছু ব্যবস্থা কর
রাত্রি অনেক হলো।

এক বিছানায় ওরই সাথে
থাকতে আমি চাই
করবনা আর দুষ্টুমী তো
কান ধরেছি তাই।







 









 

শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

আমার একটা রাত্রি চাই







আমার একটা কুয়াশার ভোর চাই
শিউলীর গন্ধ মাখা
শিশিরের স্পর্শ আঁকা
চড়ুই এর  স্পষ্ট চিত্কারে ঢাকা
একটা মিষ্টি ভোর চাই।

আমার একটা রুপোলি দুপুর চাই
ক্লান্ত ঘুঘুর ডাক
ধূলো ভরা বই এর তাক আর 
শীতল স্নানের শিহরণে
একটা রুপোলি দুপুর চাই।

আমার একটা গোধূলি বিকেল চাই
মেঘ হীন রঙিন আকাশ
আর সূর্যের লুকোচুরি
অথবা পাখিদের নীড়ে ফেরা
মায়াবী সোনালী বিকেল চাই।

আমার একটা রাত্রি চাই
তারার নয়
চাঁদের নয়
জোছনার নয়
কামিনীর সুবাসে একটা অমাবস্যার রাত্রি চাই
শুধু তুমি আর আমি
মুখোমুখি
একটা রাত্রি চাই।


বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

বেড়াল ছানার গল্প ৫





বেড়ালছানা, বেড়ালছানা ,
আছিস নাকি বাড়ি ?
একলা যদি থাকিস পড়ে
চলনা ঘুরি ফিরি।

আচ্ছা হুলো
তোর্ কি মজা
মিষ্টি কি তোর্ নাম
কত্ত রকম খেলনা আছে
কত্ত যে তার দাম।

বেড়ালছানা ধরতে মানা
ঐ সে খাতা টাও।
একটুখানি ছিড়লো যদি
মারটি এবার খাও।

বেড়ালছানা ,বেড়ালছানা
যাসনে ওদিকটায়
দুষ্টুমি তোর্ বড্ড বেশী
ভয়টি যেন নাই।

আচ্ছা হুলো
বাকসো টাতে
লুকিয়ে আছে ঐ
সাজু গুজুর অনেক কিছু
দেখছিস কি তুই ?

বেড়াল ছানা ,লক্ষী সোনা
দুষ্টু করেনা
দেখতে পেলে
কেলিয়ে দেবে
ছুট তে পাবিনা।

বেশ হলোতো ?
এখন তবে
বন্দী হয়েই থাক।
বলেই ছিলেম
ধরতে মানা
লিপস্টিক এর তাক

আচ্ছা হুলো
সন্ধ্যে হলো
কখন যাবো বাড়ি?
জানতে পেলে 
আজকে দেবে
আমার সাথে আঁড়ি।



 




রুদ্মিলার চিঠি ৬



রাস্তা টা বড্ড ব্যস্ত। আজীবন তোমার ভয়। কিন্তু আবার ভালো ও বাসতে।গাড়িতে চড়ে অনেকটা রাজকুমারীর মতন যাত্রা।সে যেখানেই যাওয়া হউক।কোনদিন আমার পাশে বসা হতনা তোমার।মনে পড়ে কেনো ?
ব্যাক ভিউ মিরর এ তোমার মিষ্টি মুখটা দেখার  অবাধ্যতা ছিলো বরাবর;তুমি ওখানটায় বসতে ঠিকই কিন্তু চোখ টা আমার হাতের কাছে। আর একটু পর পর চুলের ভেতর তোমার আঙ্গুলের স্পর্শ।তোমার কেমন অদ্ভুত একটা গন্ধ ছিলো ।আরো অদ্ভুত হলো তোমার শরীরটার একেক জায়গায় একেক রকম গন্ধ। না ,কোনো ফুলের নেই ওই গন্ধটা।পাতার ও নেই। তবু তোমার আঙ্গুলের স্পর্শে একটু হালকা কাঁঠাল চাঁপার সুবাস হতো।আবার হাতের মুঠোয় সুর্যের গন্ধ।সূর্যের  গন্ধ বললেই তুমি হাসতে।আচ্ছা তুমিকি জানোনা রোদ্দুরের ও গন্ধ আছে ?আছে মাটির ও। তোমার বুকের ভেতর মাটির গন্ধ পেতাম আমি।তুমি হাসতে। বলতে, মাটির ও ?আমি বলতাম ,পাওনা ?যখন তোমার বুকের ভেতর আমার কান্না ঝরে ঠিক তখন ভেজা মাটির গন্ধ করে।
তোমার অভ্যেস একরাশ ভেজা চুল নিয়ে গাড়িতে ওঠা।জানোতো ওই চুলে আমি কুয়াশার গন্ধ পাই।হাসি আবারো। কুয়াশার বুঝি গন্ধ আছে ?কতবার যে এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি জানা নেই।কুয়াশা আর ধূপের গন্ধ অনেকটা একই।
যেদিন প্রথম তুমি ভেজা চুলে উঠলে গাড়িতে ,তোমার বোঝা উচিত ছিলো ওটা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। তোমার ভাবা উচিত ছিলো আমার ঘ্রানেন্দ্রিয় অন্তত তোমার ব্যাপারে বড্ড সবল।তোমার বোঝা উচিত ছিলো ওই তীব্রতা নিয়ে তুমি চলে গেলে কোথাও একটা কিছু অঘটন ঘটে যাবে।

আমাদের একটা দুর্দান্ত মজার সময় কাটতো শরত এলে।দুধারে কাশবন। মাঝখানে অনেকটা পিচ ঢালা রাস্তা।কি অদ্ভুত কালো দেখাতো রাস্তাটা। তুমি প্রায়ই বলতে ,রুদ্মি দেখ দেখ,রাস্তা টা যেন তোর্ মাথার একরাশ কালো চুল;আমি তক্ষুনি গাড়িটা থামাতাম। রাস্তায় চুল পেতে দিয়ে বলতাম ,এই রাস্তাটা যতদূর চলে গেছে তুমি অমন মিশে থেকে যাবেতো আমার সাথে ? ততদূর ?তুমি আবার হাসতে। এই তুমি কি জানতে নাকি ,ওই হাসিটা বড় বেশি দুস্প্রাপ্য। পৃথিবীর আর কোনো মানুষ এমন করে হাসতে জানেনা।তুমি জানতে তাইনা ?আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে চলে যাবার সময়েও কি অমন করে হেসেছিলে ?

তুমি প্রায়ই বলতে ,রুদ্মি জানিস ,হঠাত যাওয়া ভালো। এই যেমন দেখনা মাত্র কদিন হলো কাশবন বেড়িয়ে এলাম।আজ কেমন বৃষ্টি ছুঁয়ে গেলো। টেরই পাইনি।কখন কেমন করে বর্ষা এলো !তুইকি বুঝিস ?
আমি তোমায় অবাক করে দিয়ে বলতাম ,তুমি পাশে থাকলে শুধু গন্ধ বুঝি। গন্ধ চিনি। গন্ধ করি স্পর্শ। আর কিছুতো বুঝিনা।বৃষ্টি বুঝি। কারণ চুল ভেজাবেতো তুমি। আবার সেই অদ্ভুত গন্ধ;পাগলের মতন তোমায় নিয়ে আবার বেরিয়ে যাওয়া। এবার অবশ্যই লং ড্রাইভ। ঝুম বৃষ্টি। তুমিও জানো। আমিও জানি। আমরা দুজনেই জানি একটু পরেই গাড়িটা আর চলবেনা। আমরা রিক্সা খুঁজে খুঁজে ক্লান্ত হব। রিক্সার ঘোমটা সরিয়ে আমরা দুজন ভিজে ভিজে সারা হবোনা তাও কি হয় ?তুমি বলতে ,রুদ্মি তোরতো ভিজলে জ্বর আসেনা। কিন্তু আমার আসে। কি হবে তখন ?আমি অনেক অনেক হাসতে হাসতে বলতাম ,আসুক। জ্বরের ও গন্ধ আছে।নেবো তোমার থেকে।
রাজকুমারী মা আমার ,
সেদিন কি জ্বর ছিলো তোমার ?অনেক কষ্ট হচ্ছিলো ?অনেক গন্ধ ছিলো জ্বরের ?আমায় ডাকছিলে কি তুমি ?অত দূর থেকে তুমিকি আমায় ডাকছিলে ?গন্ধ নেবার জন্যে ?আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে মা।



                                                                                                                                            

মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

আমিও বন্ধনহীন





চারিদিকে মানুষের অদ্ভুত অস্পষ্ট ব্যস্ততা।
ছুটছে সবাই
ছুটছে পৃথিবী উর্ধ্বশ্বাসে
কারো কি সময় আছে ?
একবার ঘুরে দাঁড়াবার ?

সূর্য নিজেই স্থির নয়
নয় তার সহযাত্রী চাঁদ ও।
জোছনার অস্থির অপেক্ষা
অমাবস্যার মাঝে কবে হবে অবসান ?
কারোর কি সময় আছে
একবার পিছু ফিরে চাইবার ?

মসৃন সাদা পাপড়ি তে
শিশিরের নির্যাস ছিলো।
এখন সে পরিপূর্ণ বাতাবিলেবুর ফল
কেও থেমে নেই।
কারোর কি সময় আছে
একবার একটুখানি থামবার ?

বিবর্ণ ,ধূসর ,বাদামী ঘাসে
সবুজের  আচ্ছাদন 
ছলছল ,চঞ্চলা হরিণী ঝর্ণা
খুঁজে নিয়েছে পথ হারাবার
ছুটছে সবাই
কারোর কোনো পিছুটান নেই।
সময় নেই থামবার।

আমারও সময় নেই
থমকে যাবার আর
আমারও ইচ্ছে নেই
বিষন্ন হবার আর
আমারও  প্রাণ নেই
মনের জায়গা দেবার
আমিও বন্ধনহীন
কোনো এক নীলরঙ্গা ঘুড়ি,
নাটাই নেইতো কারো হাতে আর।



বেড়াল ছানার গল্প ৪






রাগ করেছি ,বেশ করেছি
কি পেয়েছিস বলতো ?
এমন করে বকিস কেনো ?
দিন থেকে দিনান্ত ?

মিয়াও ছাড়া আর কিছুতো
বলতে পারিনা
আদর ছাড়া আর কিছুতো
করতে জানিনা।

ওদের বাড়ির হুলোর সাথে
আজকে থেকে খেলা 
আর হবেনা অপেক্ষা আর
সকাল সন্ধ্যে বেলা।

অপেক্ষাতে কষ্ট বেশি
বড্ড বেশী জ্বালা
আজকে থেকে শাস্তি টা যে
তোরই পাবার পালা।







রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

বেড়াল ছানার গল্প ৩











ওদের বাড়ির হুলো
একটাতো নাম পেলো।
আমার কেবল বেড়াল ছানাই
হয়ে থাকা হলো।

একটা কোনো বিকেল
আসবে ঝড়ের যখন
বেড়ালছানা ডাকলে কি আর
মিলবে সাড়া তখন ?

দুঃখ আমার অনেক
কত্ত আদর করি
তবু কেনো অফিস যাবার
এত্ত হুড়োহুড়ি?

আজকে আমার জ্বর
একটুখানি হাঁচি
ভাল্লাগেনা কিচ্ছু কেনো
অপেক্ষাতেই আছি।

আদর আমি করবো নাকো
বাসবো না আর ভালো।
বাঁদর কেনো ডাকলি আমায়
শাস্তি এটাই হলো।








শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

বেড়াল ছানার গল্প ২




আমি তোর্ আদর আদর ছানা
বুঝবি কবে অপেক্ষাতে
মন যে বোঝেনা ?

আমি তোর্ একটি বেড়াল ছানা
ভাগ বসালে ওই আদরে
প্রাণ যে মানেনা।

ফিরলি যদি অফিস থেকে
একটা চুমু দে
তারপরেতে যা খুশি কর
বাধছে তোকে কে ?

কোলের ভেতর জলদি নিবি
একটু দেরী নয়
নয়তো এমন খামচে দেবো
কষ্ট যেনো হয়।



আকাশ



আকাশ আমার কাছে বরাবরই বড় বিস্ময়কর ব্যাপার। এখনো অব্দি তুলির আঁচড়ে অথবা কলমের অক্ষরে শত চেষ্টা করেও আকাশের রূপ ধরতে পারিনি। তার মাঝে শরতের আকাশ !সেতো কেবল বুঝিবা অনুভব করবার। দিনের তীব্র আলোয় অপূর্ব নীল তার রঙ। সারা গায়ে পেঁজা তুলোর মত অদ্ভুত সাদা মেঘের ছড়াছড়ি। আবার হঠাত গোধূলিবেলায় ঠিক একই আকাশে কতটা রঙের মেলা বসে ,আজো গুনে উঠতে পারিনি। কখনো বেগুনি ,কখনো লাল ,গোলাপী ,কমলা এমনকি সবুজ আর হলুদ ও। কি আশ্চর্য সুন্দর।
শরতে কেমন ঝুপ করে রাত্রি নামে। কুচকুচে কালো রঙের ভিতর যেনো কেও কুচি কুচি বরফ দিয়ে রেখেছে। এত তারা?এত স্পষ্ট তারার দল ?কি অদ্ভুত সুন্দর।
চাঁদের কথা না লিখে কি করে থাকি ?অমন গা চোয়ানো জোছনা।এত সুন্দর কেনো ?
আর ভোরের কুয়াশা ভরা অস্পষ্ট আকাশ টা ?কেমন করে লিখি তার কথা। কেবল মুগ্ধ হবার।
আর বারেবারে বলবার ,ঈশ্বর ,আমি মানুষ জন্ম পেয়েছি। আমি ধন্য।

ফুল


আমি তার নাম জেনে রাখিনি
আমিকি তখন নেশা গ্রস্থ ছিলাম?
আমার কেবল মনে পড়ে
সময়টা ভোর ছিলো
শিশিরের দৌরাত্ম ছিলো
আর পাঁচ টি পাপড়ি কেমন গোটানো ছিলো
জানিনা কোন লজ্জায়।
আমার কেবল মনে পড়ে
ভোরের স্নিগ্ধ আলোর মতন শীতল ওই ফুল
মনে পড়ে
আকুল গন্ধ নয়তো
কেমন যেনো কষ্টের গন্ধ ছিলো
পিছুটান কি একেই বলে ?
আর না ফেরা ?
অথবা ফিরেও না ফেরা ?







বেড়াল ছানার গল্প ১






আমি তোর্ ছোট্ট বেড়াল ছানা
আঁধার রাতে চোখ রাঙিয়ে
ভয় দেখিয়ে ,মুখ বেঁকিয়ে ,
বলবো  সুরে :
ওরে তোর্  আমায় ছেড়ে
কোত্থাও যাওয়া মানা।

আমি তোর্ ছোট্ট বেড়াল ছানা
যতই দূরে ঠেলিস মোরে 
আসবো ঠিকই চাদর জুড়ে
বলবো  সুরে :
ওরে তোর্ কাজ গুলো থাক
আমায় বুকে নে না,

আমি তোর্ ছোট্ট বেড়াল ছানা
চুমিয়ে দিবি মিষ্টি করে
ঘুমিয়ে যাবো আদর ভরে ,
বলবো সুরে :
সকাল টাও দিতেই হবে
অফিস যাওয়া মানা।

বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

ঘাসফড়িংটা



ঘাসফড়িং টা ক্লান্ত করেছে আমায়।
কখনো বা ঘাসে
কখনো পাতায় ,
কখনো বা উড়ে  গেছে
যতদূর মন চায়;

পাতার সবুজে কখনো চিনেছি তারে
কখনোবা গিয়েছে হারায়ে
কখনো আঙ্গুলের বন্ধনে
কখনোবা চোখের ও বাইরে
আমি আমারে সুধাই ,
বাঁধবো কি তারে
সুতোর অলংকারে ?
আহা !
শুনতে পেলো কি তবে
আমার আহ্লাদ ?
দূর থেকে এলো উড়ে,

আমার সবুজ ঘাসফড়িং
বললে চুপে ,
বন্ধনে মৃত্যু আমার
জানোনাকি তুমি ?
ভালোবেসে থাকো যদি
উড়িয়ে দাও
ঠিক ফিরবো আমি।


মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

আমৃত্যু নিবাস




কোন দেশে কবে পাওয়া যেতো
একসাথে এতোটা স্বপ্ন ?
কোন  বকুলের গন্ধে
তোর্ চেয়ে বেশি মাতাল সুবাস ?
একবার বলনা
কতটা ভালবাসা  জমা দিলে পরে
তোর্ বুকে হবে
আমৃত্যু নিবাস ?
আচ্ছা বলতো ?
ঠিক কতোটা জল সমুদ্রের ?
কতোটা থাকে আকাশে ?
কতোটা অশ্রু ঝরলে পরে
আশ্রয় হবে নিশ্বাসে ?
কতোটা পথ হাঁটলে তবে 
পথের হবে শেষ ?
কত আগুন জ্বালিয়ে শেষে
বলবো : আছি ,বেশ?











সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

ডিঙ্গি






কখনো ফাগুন হাসে
কখনো অঘ্রাণ ,
কখনো ভাসি বা আমি
কভূ অপেক্ষমান।

বেগুনী কলমি গুলো
ধীরে সরে যায় ,
যখনই বলিছে মাঝি ,
ওঠো মোর নায়।
আমার সকল প্রেম
ফুলেদের সাথে
কি করে কখন যেনো
জলেতে হারায়!

শৈবাল, শৈবাল,
ডাকি নাম ধরে
একবার একবার
যদি ফিরে চায়
প্রেমেতে যখন মজি
শৈবালের সাথে ,
আবার তখনি মাঝি
ডেকে নেয় পথে।
আবার হারিয়ে যায়
একমুঠো প্রেম
আবার ফিরিয়া যাই
যেথায় ছিলেম।

এইবার প্রেম তবে
মানবীর সাথে ,
এইবার মাঝি যদি
আমারে সুধায় ,
আমি কব ভাসিবনা
ভাঙ্গিবনা স্রোত
মানবীর হাত ধরে
হইবো উধাও।

রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

পৃথিবীর পরে




শিশির ধুয়েছে চালতার ফুল
কি আশ্চর্য সুন্দর !
ফুলের শিশির স্নান
দেখেছে কখনো কেউ
দেখেছে কি তার গায়ে
রোদ্দুরের শিহরণ ?

আকাশ ছুঁয়েছে মাটি
যেনোবা করিছে প্রনাম
ওই দূর যেতে যেতে
আকাশ  কি কভূ নীল থাকে আর ?
নাকি হয়ে যায় নীলের সবুজ?
আমি ভেবে পাইনাকো।

জোনাকিরা মত্ত খেলায়
তারাদের সাথে যেনোবা খুনসুটি
কে আগে জ্বালাবে আলো ?
কে দেবে পথের সন্ধান ?
কেউ বা আকাশের
কেউ বা মর্ত্যের
তবু কোথা যেনো
এক হয়ে যায়।

বাতাবী লেবুর ফুলে
প্রজাপতি মূর্ছা 
এমন সুবাস
পেয়ারার সাদা ফুলেও
প্রজাপতি বলে ,আমি কোথা যাই ?
তোরা বলে দে আমায়
আমি কোথা যাই ?
মাছরাঙ্গার কাছে?
শরীরের রঙ
অনেক দিয়েছি তারে
আর বুঝি প্রয়োজন নাই।

সমস্ত প্রকৃতি যেন করিছে মধ্যস্থতা
আমারে রাখিবে ধরে আমৃত্যু পৃথিবীর পরে
পালাবার উপায় তো জানা নাই।





শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

চিঠি



একদিন নিশ্চয়ই সবকটা চিঠি
একসাথেই পাবে তুমি।
সমস্ত নীরব শব্দ
হয়ে উঠবে অস্থির নিশ্বাস ।
কালো মেঘের সিঁড়ি ভেঙ্গে,
সূর্য কে স্পর্শ করবে সবকটা ঘুড়ি।
সারা আকাশ ঘুরে শেষে,
পাখি আমার বুকের পিঞ্জরে ফিরবেই।

একদিন নিশ্চয়ই সমুদ্র 
স্থিরতার কথা কইবে।
গুনে গুনে বুঝে নেবে
হারানো সব ঢেউ এর হিসেব।
একদিন নিশ্চয়ই পাহাড়
ফিরিয়ে দেবে মেঘের অশ্রু।
আর হবেনা আলিঙ্গন,
আর ঝরবেনা বৃষ্টি।
রাতগুলো ছুঁয়ে দেবে
নীমের ফুলের মতন,
একটু সাদা জোছনা।
আঁধারের কানাকানি
স্তব্ধ করে দেবে
রুপোলি সকাল।
একদিন নিশ্চয়ই
ঘাস ফড়িঙ্গের খেলা দেখা হবে,
ধানের ছড়ার পরে
দেখা হবে চড়ুই এর চিত্কার।
অঘ্রানের ভোর হবে,
বেগুনি নীল প্রজাপতি
ছুঁয়ে যাবে,
অপরাজিতার মাঠ।
বুনো হাঁস রেখে যাবে
রুপোলি পালক।
একদিন নিশ্চয়ই
সব চিঠি খুঁজে পাবে
সোনালী ডাকপিয়ন।




 








শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

নীরব শব্দ ৯




অনেকতো হলো স্বপ্ন দেখা।
নীরব শব্দ গুলো মৃতপ্রায় এখন।
পেছনে ঘুরে আর কোনো স্মৃতি নেই
ছিবড়ে চুষে কঙ্কাল করে ফেলেছি
ছায়া এখন প্রেত ছায়া হয়ে ঘোরে
হাওয়া রা কেবল কিছু সময়ের অক্সিজেন
কোথাও কেউ নেই।

সমুদ্র কেমন নীরব,নিথর
ঝিনুকের গান আর আসেনাকো জলের তরঙ্গ বেয়ে
বিবর্ণ পদদলিত ঝরা শিউলী হারিয়েছে সুবাস
শিশির বিন্দু যেনো জমাট বদ্ধ কাঁচের টুকরো 
যতই হেঁটে যাই রক্ত রঙিন
স্তব্ধ নিঝুম পৃথিবী
ভোরের স্নিগ্ধ আলো  যেনো কুয়াশার হাতে বন্দী
সত্যিই কোথাও কেউ নেই
একটি আলো নিয়ে বসে থাকা চারশত পৌঁত্রিশ দিন আর রাত
শেষ হয়ে গেছে।
কোথাও কেউ নেই।

নীরব শব্দ ১০




উঠোনে কাঁঠালচাঁপাই তো ছিলো।
ব্যাকুল করা সুবাস
আশ্চর্য
কি হলো হঠাত
মা কি প্রতিদিন ধূপ জ্বালায় আজকাল
চারপাশে এত ধূপের গন্ধ কেনো ?

চাঁদটা কেমন মলিন লাগে
চাঁদের কি হলো হঠাত ?
জোছনা নেই কেনো ?
কোজাগরী পূর্নিমা আজ
অথচ জোছনায় স্নান নেই আমার
এও হয় ?
এত অন্ধকার ?
ধোঁয়া ?
মা কি তবে আবার ধূপ দিয়েছে ?
চারপাশে এতো ধূপের গন্ধ কেনো ?

এইতো সেই নীল অপরাজিতা
নীল নীল স্বপ্ন গুলো কোথায় ?
ধূসর কেনো ?
এত অস্পষ্ট কেনো ?
ধোঁয়া কেনো ?
মা কি তবে আবার ধূপ দিয়েছে ?
চারপাশে এতো ধূপের গন্ধ কেনো ?

কদিন ধরে ময়নাটাও চুপ
বলছেনা মোটেও ভালোবাসি ।
সারাদিনে একটা মোটে কথা :"আমি আসি ,আমি আসি "
ভোর আমার কবেই গেছে
সূর্যোদয়ের অদ্ভুত রঙের বুনন দেখিনা কতদিন
আমার এখন মায়ের ধূপের সাথে গোধুলি দেখা হয়
ভোরের থেকে রোদ্দুরের দিন আসে
আমার আছে গোধূলি
তার ঠিক একটু পরেই রাত
অনেক রঙে রঙিন আকাশ হঠাত কেমন ঘুটঘুটে আঁধার

অদ্ভুত
ভারী অদ্ভুত
উঠোনে কাঁঠাল চাঁপা
আমি কেন শুধু ধূপের গন্ধ পাই।
আমি কেনো শুধু ধূলোর গন্ধ পাই ?
অর্ক ,
জীবন এতো ছোট কেনোরে ?
আমার ধূলোয় একটা ছোট কাঁঠাল চাঁপা দিবি ?
আমার অন্ধকারে একটা স্বর্ণ বরণ কাঁঠালচাঁপা ?
আমার আবদ্ধ ঘরে তার পাগল সুবাস
দিবি ?
আমি তোকে নীরব শব্দ দেবো।
সত্যিই দেবো এবার।








বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

নীরব শব্দ ৮





বাদল শেষের রাত টি যখন
নীরব হয়ে আসে
হঠাত আলোর ঝলকানিতে
আঁধার নেমে এসে
আমার মনের বারান্দাতে
চুপটি করে বসে।
আমি হারাই ,হারাই
কূল নাহি পাই
রাতের স্রোতে ভেসে।


ছায়া ছায়া
কেবল ছায়া
আমার দুয়ার জুড়ে
কেমন করে অনেক ভারী
শ্বাস টি রেখে যায়।
আমি হারাই হারাই
ব্যথা বাড়াই
একটিবারে জন্যে তারে
ছোঁয়া নাহি যায়।

হাওয়া  হাওয়া
পাগল হাওয়া
সারা উঠোন জুড়ে
নেশার মতন
কিজানি এক
স্পর্শ রেখে যায়।
বেশ বুঝতে পারি
কখন এসে
আবার চলে যায়।

নিঝুম নিঝুম
রাত্রি নিঝুম
নেইতো কোনো সুর
চুপি চুপি
শব্দ হীনের
শব্দ আমি পাই
যতই লুকোক মুখ খানি তার
আঁধার নয়তো ছায়ায়
পায়ের আওয়াজ পাই  তো আমি
পায়ের আওয়াজ পাই।



ধূলোর জীবন




সে আমায় তারার আকাশ দেখাবে বলেছে
তোমার তাতে কষ্ট কিসের ?
চাঁদটা তো তোমারই আছে।

সে আমায় সাদা মেঘ দেখাবে বলেছে
তোমার তাতে কষ্ট কিসের
তোমার তো একটা গোটা আকাশ আছে।

সে আমায় ঘাস ফুলের দেশে নেবে বলেছে
তোমার তাতে কষ্ট কিসের ?
তোমার আছে ফুলের রানী গোলাপ।

সে আমায় সবুজ অরন্যে নিয়ে যেতে চায়
তোমার তাতে ব্যাথা কেনো?
তোমার তো গোটা বিশেক অদ্ভুত ক্যাকটাস আছে।

সে আমায় পাতার ঘড়ি দেবে বলেছে
তোমার এত কষ্ট কেনো ?
তোমার আছে রাডো,আরো কিসব যেনো !

সে আমার হাত ধরে ধুলোমাখা পথে হাঁটবে বলেছে
বৃষ্টি এলে ভিজবো আমি
তোমার তাতে কি এসে যায় ?
তোমার কখন বোঝা হবে
একজীবনে হবেকি তবে ?
ধুলোর মাঝেই জীবন আমার
ধুলোয় আমি হারাতে যে চাই। 

বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

স্বপ্নবৃত্ত





দিতে পারিস কেবল একটা চুমু
মেনে নেবো আমৃত্যু শামুকবাস

পার করে দিস যদি হলুদ সর্ষে মাঠ
কথা দিচ্ছি তারপর আমি অন্ধ হয়ে যাবো।

পায়ের সাথে পা মিলিয়ে একটা কেবল শ্রাবন দিবি
নির্জন বৃক্ষ হয়ে যাবো।

শুধু একবার বলবি ভালবাসি
খাঁচার সব পাখি ছুঁয়ে দেবে বিষন্ন আকাশ।

একদিন শুধু একদিন যদি হয় নরম রৌদ্র স্নান
আমি সুর্যাস্তের নিয়ম ঘুরিয়ে দেবো।

অস্পষ্ট অক্ষর





আমি চলে যাবো বলে
ভিজবেনা শিউলি শিশিরের জলে
কখনো হয় ?

আমি চলে যাবো বলে
নিভে যাবে উজ্জ্বল আলোর দিন
কখনো হয় ?

আমি চলে যাবো আর
শেষ হবে আয়ু নক্ষত্রের
কখনো হয় ?

আমি চলে যাবো তাই
লিখিয়াছি অসংখ্য কথা
পৃথিবীর দেয়ালের পরে
সেকথা অনন্ত কাল
সাক্ষী হয়ে কথা কবে
কখনো হয় ?

আমি চলে যাবো অথচ
ঢেউ খেলা করিবেনা
সাগরের জলে
কখনো হয় ?

ঝিনুকের দল ঘুমে চুপে
করিবেনা মুক্ত প্রসব
কখনো হয় ?

আমার সমাধি জুড়ে
বর্ষণ  সমাপ্তির পর
রৌদ্র করিবেনা খেলা
কখনো হয় ?

বড় অস্পষ্ট অক্ষর আমি
জলের ধারায় অঙ্কিত জীবন যেনো
আছে আবার নাই
নাই আবার আছে।



রুদ্মিলার চিঠি ৫


শুয়েছিলো। আমার খুব ভাবতে ইচ্ছে করছিলো শুয়েই আছে। আমার ভাবতে ইচ্ছে করছিলো উঠেই আমাকে ডাকবে। আমি জেগে ওঠাটা দেখতে চাইছিলাম। প্রাণপণে ওই অপার্থিব হাসিমুখের প্রতিক্ষায় ছিলাম।কিন্তু কেমন অদ্ভুত শুয়েছিলো।

আমার দম বন্ধ হয়ে আসছিলো। ঠোঁট শুকিয়ে আসছিলো। আমি শব্দ করার প্রানান্ত প্রচেষ্টায় ছিলাম। পারছিলামনা।যা ঘটছিলো সেই ঘটনার মোড় ঘোরানোর চেষ্টায় ছিলাম। আমার কেবলই মনে হচ্ছিলো ওটা একটা গল্প হউক। আমার হাতে একটা পেন্সিল থাকুক।মুছে মুছে ওই গল্পের মোড় ঘোরাবো। কিন্তু বারেবারে ব্যার্থ হচ্ছিলাম। গল্পের শেষটা প্রতিবারই একইরকম হয়ে যাচ্ছিলো। আমি কাউকে ডাকতে চাইছিলাম কিন্তু কোনো শব্দ করতে পারছিলামনা।
আশ্চর্য ধরনের কষ্ট তো। এই মুহুর্তে কেও আসেনা কেনো ?আমি  কিভাবে এই অসহ্য যন্ত্রণা থেকে বেরুবো ?
আমার মস্তিষ্কের একপাশে একা শুয়ে থাকা মানুষটা, অন্য পাশে গল্পটাকে ঘুরিয়ে দেবার চেষ্টা।দুটো অদ্ভুত অবস্থা একইসাথে বহমান। আমি কিছুই করতে পারছিলামনা ।
পরপর চারবার এভাবেই।একসময় আমার ভেতরটা ক্লান্ত হয়ে পড়লো যুদ্ধ করতে করতে।গলার ভেতরটা খুব তৃষ্ণার্ত লাগছিলো।কেমন ভয় করছিলো।
শ্বাস প্রশ্বাস দেখে নিলাম। এইতো পিঠের জায়গাটা ওঠানামা করছে।আমিকি তবে ভুল দেখছি ?আমি কি
ডাকবো ?আমি চাই চোখ মেলে একবার আমাকে দেখুক। একবার।তাহলে আর যেতে পারবেনা।পারেনিতো কখনো। 
কি অসহনীয় অনুভূতি।কি আশ্চর্য আমি অনুভব করছি নেই।কিন্তু এত বিচ্ছিরি ভাবে তো যাবার কথা নয়।এত সোজা নাকি ?এভাবে কেও  যায়  নাকি ?যেখানে যাচ্ছো আর ফিরতে পারবেনা তো।তোমার চোখ আমার আগে কখনো বন্ধ হতে পারে নাকি?আমিতো সেই ছোট বেলা থেকে আমার আগে কখনো তোমায় ঘুমুতে দিইনি।আমার চেয়ে তুমি বেশি ঘুমোবে তাও আবার হয় কখনো?

দুঃস্বপ্নে সঙ্গী কেনো থাকেনা যে আমার স্বপ্নটাকে পাল্টে  দেবে?অথবা আর ঘুমুতেই দেবেনা।
অদ্ভুত ব্যাপার হলো কোনো স্বপ্নেরই কোনো সঙ্গী থাকেনা। স্বপ্ন বড় নিঃসঙ্গ।
মস্তিস্ক যা ভাবে ,যা দেখতে চায় তাই স্বপ্ন হয়ে আসে। তাহলে স্বপ্নে সত্যি যাকে দেখতে চাই সে এতো অল্পক্ষণের জন্যে কেনো আসে ?
আর যে স্বপ্ন ভাঙ্গতে চাই সেই দুঃস্বপ্ন এত দীর্ঘ কেনো হয়?
আমি যতবার স্বপ্ন টা পাল্টাতে  চেয়েছি ততবারই সে তার নিজের মতই এগিয়েছে। আশ্চর্য !আমি যেন স্বপ্নের হাতে বন্দী।

তুমি যখন পাশে ছিলে এই দুঃস্বপ্নের পর আমি নিজেই নিজেকে বকতাম। এই দেখ রুদ্মিলা। মা আছেতো। আমি স্বপ্নের ভেতরেই তোমায় আটকাতে পারিনি।সত্যি তেও না। তুমি কি চলে যাবে বলেই এত ভালবেসেছিলে?
 
আজ তোমায় খুঁজলাম মা। পাচ্ছিনা।আমি চাই তুমি আগের মতন আসো। প্রতিদিন প্রতিরাত। আমার ঘুম দরকার নেই মা। তুমি এসো। আবার গল্প হবে। তুমি জানতে চাইবে কি রান্না হয়েছে।কোথায় কে আমায় কি কষ্ট দিলো। আমার খুব দম বন্ধ লাগছে মা.আমি অনেকদিন তোমার গন্ধ পাইনা। আশ্চর্য এভাবে বাঁচা যায় নাকি ?আমি রুদ্মিলার স্বপ্ন নিয়ে আর লিখতে পারছিনা মা। আমি ধীরে ধীরে তোমায় ভুলে যাচ্ছি। আমি তোমাকে এভাবে চাইনা মা।আমি আজীবন অসুস্থ থেকে যাবো তবু আমি তোমায় নিয়ে স্বপ্ন দেখতে চাই মা।আমি ওই স্বপ্ন গুলোতে তোমায় বাঁচাই ,প্রতিদিন।তুমিতো কোত্থাও নেই।আমার স্বপ্ন গুলোতেও থাকবেনা ?আমার স্বপ্ন গুলোকে সবাই দুঃস্বপ্ন কেন বলে মা ?

অনেক রাত মা ,সবাই ঘুমে। তুমি এসো মা। আমি জানি আজ তুমি আসবেই।খুব কষ্ট হচ্ছে মা।বাচ্চার কষ্ট হলে মা পাখিরাই চলে আসে আর তুমিতো মানুষ মা আমার।

নীরব শব্দ ৭



তোরে পাবোকি আমি কোনোদিন
নক্ষত্রের আলোর তলে?
হবেকি  বাসর
সমুদ্রের জলে ?
যেথা গান নেই,
সুর শুধু সুর বাজে ?
ঠান্ডা ফেনা আর
ঝিনুকের শব্দ শুধু আছে ?

তোর আঙ্গুলের  হাতের পরশ
পাবোকি কোনদিন ?
গভীর আঁধার কালো চুলে ?
হবেকি খেলা ?
সম্পূর্ণ বাহুমূলে ?

হলুদ মৃত বক্ষে সবুজের খেলা
বিদ্যুতের মতন
স্ফুলিঙ্গের মতন
বজ্রপাতের মতন
কম্পন
হবে কি ?
হবে কি ডুব সাঁতার ?
অনেক গভীর স্বচ্ছ জলে ?

এমন পিপাসা নিয়ে
কি করে বাঁচি ?
ছুঁয়েছে যে একবার তোরে
একবার হেঁটেছে যে তোর্ পায়ে পায়ে
চলিবার শক্তি আর তার নাই।
আমি আরেকবার তোরে  ছুঁয়ে
মৃত হতে চাই।



মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

নীরব শব্দ ৬







অদ্ভুত প্রশ্ন করলো লোকটা
সময় আমার জানতেই হবে ?
সময়হীন অথবা স্তব্ধ সময়ের
কোনো পথিক কি নেই ?

অদ্ভুত প্রশ্ন করলো লোকটা
নিয়মে আমার চলতেই হবে ?
চোখের কালো দাগ সরাতেই হবে? 
বিবর্ণ রঙের কোনো নারী কি নেই ?

অদ্ভুত তার জিজ্ঞাসা
কি করে বোঝাই ?
রাত্রি যদি ঘুমেই যাবে
ভোর গুলো সব হারিয়ে তবে
কেমন করে অনুভবে
অর্ক কেবল মেঘের হবে ?

অদ্ভুত ,ভারী অদ্ভুত তার প্রশ্ন !
এত কিছু ফেলে
পাগল হাওয়া কেন এত প্রিয় ?
কি করে বোঝাই ?
একমাত্র সেইতো তোকে ছুঁতে পায়।
কি করে বোঝাই ?
যন্ত্রণার নীরব শব্দ গুলোর
একটাইতো বাহন।

















রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

নীরব শব্দ ৫









হাঁটতে হাঁটতে রৌদ্র ছায়া
হাঁটতে হাঁটতে বর্ষা।
হাঁটতে হাঁটতে হারিয়ে যাওয়া
রাত্রি কখন ফর্সা।

হাঁটতে হাঁটতে ঝরাপাতা
করছে কানাকানি।
সবুজ এলো ,সবুজ এলো ,
দিচ্ছে হাতছানি।

হাঁটতে হাঁটতে বিষন্ন মেঘ ,
হাঁটতে হাঁটতে শ্রাবণ।
কৃষ্ণচূড়া জানিয়ে গেলো
আসছে এবার ফাগুন।

হাঁটতে হাঁটতে নীল আকাশে
সাদা মেঘের ভেলা
কুয়াশা ঢাকা চুলের ভেতর
ভোরের শিউলিতলা।

হাঁটতে হাঁটতে শিশিরকণা
বলছে ছুটে আয়।
রোদ্দুরেতে ভাঙ্গছে মাটি
জলের অপেক্ষায়।

হাঁটতে হাঁটতে ছয়টি পাখি
উড়িয়ে দিলাম কখন।
বুঝিইনিতো একলা আমি
তখন থেকে এখন।

আমার নীরব শব্দ গুলো
শুনতে কি তুই পাস ?
তোর্ বুকের ভেতর কখন হবে
আমার বসবাস ?

শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

নীরব শব্দ ৪

জানতে ইচ্ছে করে
খুব জানতে ইচ্ছে করে
তোর্ স্পর্শে কোন মহুয়ার মদ লুকোনো ?
কোথা হারাই ?
ওরে আমি হারাই কোথা ?
আমি দেখিনি
কেনো দেখে রাখিনি?
ওই বিদায় বেলার পাতার রং ?
সবুজ ছিলো নাকি বিবর্ণ হলুদ ?
উত্তুরে হাওয়া বইছিল
নাকি দখিনা পাগল ?
আমি কেন দেখিনি ?
নিস্তব্ধ রাত্রি ছিলো ?
নাকি পাখির সকাল ?
আশ্চর্য !
আমি কিচ্ছু দেখিনি।
স্পর্শে অন্ধ আমার বড় জানতে ইচ্ছে করে
সেদিন কি ফাগুন ছিল নাকি শ্রাবণ?
অর্ক ,
মেঘের নীরব বৃষ্টি
তোকে কি এতটুকু স্পর্শ করে ? 






নীরব শব্দ ৩

আমার সমুখ থেকে তুই চলে যাস।
ধীরে মিলিয়ে যাস দুরে ,বহুদূরে ,
আমি কেবল অপলক চেয়ে দেখি।
আশ্চর্য !
একটু আগেইকি এলোমেলো চুল গুলো সরিয়ে ছিলি ?
অনেক হাওয়া বইছিল রেল লাইনের ধারটায় ?
আমিকি একা হাঁটছিলাম ওই পিচ্ছিল স্লিপার পেরিয়ে ?
নাকি অনেক দৃঢ় বাঁধনে তোর্ আঙ্গুল গুলো জড়ানো ছিল ?
গোধূলি ছিলোতো ?
তাইতো।
গোধূলির রং মাখিয়ে তুই বলেছিলি
সব রঙেই মেঘ অপরুপা।
তুই ছুঁয়ে দিলে কেনো এমন হয় বলতো ?
আমি কেমন নির্বিকার সব মেনে নিই।
এমনকি তোর্ চলে যাওয়াটাও।
কেবল অদ্ভুত কিছু নিরব শব্দ
ভীষণ আর্তনাদ হয়ে পাখা মেলে
একটা সরব চিত্কারের খোঁজে।
ফিরে আয়।
ফিরে আয় অর্ক।


শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

তুই আসবি?




তুই রোদ্দুর
কখনো মেঘ হবিনা।
কোনো সাদা মেঘ ও নয়।

তুই হাসি
কখনো কান্না হবিনা।
সুখের অশ্রুজল ও নয়।

তুই পাহাড়
কালো মেঘ তোর্ বুকেই
আছড়ে হবে বৃষ্টি।

তুই ফাগুন
কেবল সবুজ সবুজ
লাল লাল
নীল নীল 
সব রং সব রং
বর্ণিল বর্ণিল



তুই রঙধনু
বৃষ্টি শেষের হাসি
ভালবাসি ভালোবাসি

তুই আসবি ?
মেঘের আকাশে ?
হাসবি  ?
মেঘের কান্না ঠোঁটে ?
ভাসবি 
মেঘের বিবর্ণ ধূসর বুকে ?











নীরব শব্দ ২




ঠিক কতটা দুরে তুই ?
ঠিক কতটা জন্ম পেরিয়ে এলে পরে পাখি হওয়া যায় ?
মাটির থেকে ঠিক কতটা দুরত্বে উড়ে যাচ্ছিস এখন ?
একটু আগেই না কথা হলো ?
ঠিক তার কিছু আগেই না
যোজন যোজন দূর থেকে ভোর দেখা হলো ?
তার কিছু আগেইকি সমস্ত রাত্তির
তোর্ সাথে ?
কি অদ্ভুত ?
এমন  করে চলে যাওয়া শিখে নিলি ?
কবে ?
কখন ?
কত অচেনা যাত্রী নিয়ে তোর্  যাত্রা !
চেনা আমিই কেবল মেঘের মত
ঘুরে ঘুরে বেড়াই একা।
মেঘ কি কখনো আকাশের হয় ?
নাকি কেবল আকাশ কে ছুঁয়ে ছুঁয়ে যায় ?


মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

তিতির






তিতির, তিতির
ডাকছে  শিশির
ছুঁয়ে যাবি আয়।
ভোরবেলা টা
ফুরিয়ে গেলেই
আর পাবিনা তায়।

তিতির ,তিতির ,
গন্ধ মাটির
দেখতো কেমন মিষ্টি
আর পাবিনা এখন যদি
হারিয়ে ফেলিস বৃষ্টি।

তিতির ,তিতির
তুই যে আমার
ছোট্ট পাখির ছানা
উড়ে কোথাও যাসনা যেনো
কেটে দিলেম ডানা।

তিতির ,তিতির ,
বুকের গভীর
এমনি করেই থাক।
বৃষ্টি নিয়ে ,শিশির নিয়ে
আমার কাছেই থাক।





সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

মান্না দে


আমি তার ঠিকানা রাখিনি
ছবিও আঁকিনি
কোথা সে জানিনা
মন
তবু তারই কথা বলে
তারই সাথে পথ চলে।.....

দূর দিনান্তের ওপারে
প্রথম রাতের আঁধারে
আজো সেই চোখের তারায়
প্রথম তারা জ্বলে।

তার ছায়া তো রাখিনি ধরে
ধরার মত ছিল কি আর
ধু ধু মনের প্রান্তরে
তাই অরন্যে পর্বতে
অন্য মনের জগতে
আমি সেই পলাতকা